ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আজ হাজিরা

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২২ জুলাই ২০১৫

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আজ হাজিরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য তলব করা হয়েছে। তিনি হাজির হয়ে তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তার ব্যাখ্যা প্রদান করবেন। ১২ জুলাই চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম। তার আগে ৬ জুলাই জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার জন্য আবেদন জানায় তিন মুক্তিযোদ্ধা ও গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ। এদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে এই আবেদন করেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, মুক্তিযোদ্ধা আলী আসগর, মুক্তিযোদ্ধা শেখ নজরুল ইসলাম এবং গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের আহ্বায়ক কামাল পাশা চৌধুরী ও কর্মী এফএম শাহীন। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হলো। ঐদিন মনোরঞ্জন ঘোষাল পরে সাংবাদিকদের বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ডাঃ জাফরুল্লাহর প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, বিচারক ও বিচারালয় সম্পর্কে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন, তাতে আদালতকে অবমাননা করা হয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনোই এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন না। বাক স্বাধীনতা গণতন্ত্রের অঙ্গ। তার মানে কি এই যে, বিচারকদের ‘মানসিক অসুস্থ’ বলব? ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ‘অবমাননাকর’ বিবৃতি দেয়ায় গত ১০ জুন জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সাজা দেয় আদালত। শাস্তি হিসেবে তাকে এক ঘণ্টা আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সেইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের কারাদ- প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল। জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আবেদনে সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার আদালত পরে ওই জরিমানার আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেয়। কাঠগড়ায় গিয়ে সাজাভোগ করার পর ট্রাইব্যুনালের বাইরে এসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের আদালত অবমাননার রায়টা তিনজন বিচারকের মানসিক অসুস্থতার প্রমাণ। যেখানে বিচারপতিরা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, সেখানে ন্যায়বিচার হয় না। ‘যখন তারা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না, তখন যুক্তি থাকে না বলেই তারা আইনের আড়ালে আত্মগোপন করেন। এখানে এই মামলাটার বোঝার বিষয় আছে। আদালত অবমাননার মামলায় তিনটির একটি বিষয় প্রমাণ করতে হয়। স্ক্যান্ডালাইজিং দ্য কোর্ট, কোর্টের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, অবস্ট্রাকশন অব দ্য এ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব দ্য জাস্টিস, বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, আদালতের ডিগনিটি ক্ষুণœ করা। আদেশের সময় এজলাসকক্ষে অভিযুক্তদের দাঁড় করিয়ে রাখাটা ‘অভদ্রতা’ মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, যখন রায় পড়েন তখন সকল অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাঁড় করিয়ে রাখা অর্থহীন। এটা প্রাগৈতিহাসিক, মধ্যযুগীয় ঘটনা। কিন্তু তারা দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। তারপর বলেছেন বয়স, কিন্তু বয়সের সম্মান আমি তাদের কাছে কামনা করি না। আদালত অবমাননার আবেদনের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। এএসপি রাসেল এডি নিযুক্ত ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সহকারী পরিচালক করা হয়েছে সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেলকে। মঙ্গলবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত (ডিএমপি) মাহফুজুল আলম রাসেলকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হলো।
×