ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদের ছুটিতে সব সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৭ জুলাই ২০১৫

ঈদের ছুটিতে সব সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা

নিখিল মানখিন ॥ ঈদের ছুটিতে রাজধানীর সরকারী হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা চালু থাকবে। তবে বহির্বিভাগ খোলা থাকবে সীমিত আকারে। স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিভাগের জন্য পৃথক পৃথক রোস্টার তৈরি করা হয়েছে। অপারেশন থিয়েটার চালু থাকবে। বিশেষ টিম চিকিৎসাসেবা তদারকি করবে। চিকিৎসকের সংখ্যা স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় কম থাকতে পারে। চাপ বাড়তে পারে চিকিৎসকদের ওপর। ঈদের ছুটিতে সরকারী হাসপাতালে রোগী সেবা নির্বিঘœ রাখতে চিকিৎসকদের ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎ-সাধীন রোগীরা। স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। সম্প্রতি একটি হাসপাতালে আকষ্মিক পরিদর্শনে গিয়ে চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঈদের ছুটিতে রোগী সেবা নিয়ে কোন গাফিলতি সহ্য করা হবে না। রোস্টার পদ্ধতিতে সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে রোগী সেবার দুর্বিষহ চিত্র দেখা যায়। চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যান। এতে রোগীরা চিকিৎসা হাসপাতালের স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হন। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। এসব থেকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে রোগী সেবা নিয়ে কোন অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সামিউল ইসলাম সাদি বৃহস্পতিবার জনকণ্ঠকে জানান, ঈদের ছুটিতে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যেক সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এছাড়া প্রতিটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী রোস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে। ঈদের আগের ৩ দিন এবং ঈদসহ পরের ৪ দিন জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডাক্তার, নার্স ও সুসজ্জিত এ্যাম্বুলেন্স এবং মেডিক্যাল টিম নিয়োজিতকরণসহ প্রাথমিক চিকিৎসার পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সিজিন সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ সামিউল ইসলাম সাদি। এবার ঈদ উপলক্ষে তিন দিনের সরকারী ছুটি থাকবে। তবে ঈদের বেশ কয়েকদিন আগেই ছুটির নেয়ার হিড়িক পড়ে গেছে। ঈদের পরেও হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা ছুটিতে থাকবেন। কমে যাবে জনবল। আর জনবল কমে গেলে সরকারী হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। বিগত সময়ের সপ্তাহিক ও বিশেষ সরকারী ছুটির দিনগুলোতে সরকারী হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবার মান খুব বেশি সন্তোষজনক নয়। অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এমন আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। বিগত সময়ে ছুটির দিনে সরকারী হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক চিকিৎসা থাকে না বলে অভিযোগ করে আসছে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের অভিভাবকরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, স্বাভাবিক সময়েই সরকারী হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। সরকারী ছুটির দিনে তো চিকিৎসক ও নার্সের দেখা পাওয়া ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
×