ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৪ রান ও ২ উইকেট নেয়া অলরাউন্ডারদের কাতারে জয়াসুরিয়া *ক্যালিস *আফ্রিদি *রাজ্জাক *কেয়ার্নসের পরেই বাংলাদেশের অলরাউন্ডার

‘সাকিব আল হাসানের ২০০’

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১৬ জুলাই ২০১৫

‘সাকিব আল হাসানের ২০০’

মিথুন আশরাফ ॥ এক এক করে ২০০ উইকেটও শিকার করে ফেললেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হাশিম আমলার উইকেটটি নিতেই বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এ মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের (১৫৩ ওয়ানডেতে ২০৭ উইকেট) পর ২০০ উইকেট নেয়ার যোগ্যতা দেখালেন সাকিব। শুধু কী তাই। অলরাউন্ডারদের মধ্যে এখন ৪০০০ রান ও ২০০ উইকেট নেয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশের হয়ে শুধু সাকিবই দেখিয়েছেন। এ মাইলফলক গড়ে শ্রীলঙ্কার সাবেক অলরাউন্ডার সনাথ জয়াসুরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস, পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ও আবদুল রাজ্জাক এবং নিউজিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নসের কাতারে এখন সাকিবের অবস্থান হয়েছে। জয়াসুরিয়া ৪৪৫ ম্যাচে ১৩৪৩০ রান করার সঙ্গে ৩২৩ উইকেট নিয়ে ৪০০০ রান ও ২০০ উইকেট শিকারিদের কাতারে শীর্ষে আছেন। পরের অবস্থানেই আছেন ৩২৮ ম্যাচে ১১৫৭৯ রান ও ২৭৩ উইকেট নেয়া ক্যালিস। আফ্রিদি ৩৯৮ ম্যাচে ৮০৬৪ রান করার সঙ্গে ৩৯৫ উইকেট নিয়েছেন। আবদুল রাজ্জাকের ঝুলিতে ২৬৫ ম্যাচে ৫০৮০ রান ও ২৬৯ উইকেট রয়েছে। ক্রিস কেয়ার্নস ২১৫ ম্যাচে ৪৯৫০ রানের সঙ্গে ২০১ উইকেট শিকার করেছেন। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে খেলতে নামার আগেই সাকিব আল হাসানের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪৩৮২ রান জমা ছিল। তৃতীয় ওয়ানডেতে দুই উইকেট নিয়েই ২০০ উইকেটও শিকার করে নিয়েছেন। তাতে করেই ৪০০০ রান ও ২০০ উইকেট শিকারিদের কাতারে সাকিবের অবস্থান হয়েছে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় ওয়ানডেটি ছিল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। এ ম্যাচে এসে সাকিব গুরুত্বপুর্ণ দুটি উইকেটই নিয়েছেন। সাকিবের ২০০ উইকেটের সাক্ষী থেকে গেলেন আমলা। তার উইকেট শিকার করেই যে এ মাইলফলক স্পর্শ করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। এর আগে ফাফ ডু প্লেসিসের উইকেটটিও নেন এ স্পিনার। তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামার আগে সাকিবের ক্যারিয়ারে ১৫৫ ওয়ানডেতে ১৯৮ উইকেট জমা ছিল। ১৫৬ ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে সাকিব এ যোগ্যতা অর্জন করেন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজারও উইকেট সংখ্যা ছিল ১৯৯। কে কার আগে ২০০ উইকেট পাবেন, দুইজনের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছিল। কিন্তু মাশরাফিকে পেছনে ফেলে সাকিবই এ মাইলফলক স্পর্শ করেন। বোলিংয়ে ওয়ানডেতে সাকিবের সময়টি খুব ভাল যাচ্ছিল না। এবার বিশ্বকাপে মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ থেকেই সাকিবের খারাপ সময় যাচ্ছে। সেই ম্যাচটি থেকে বুধবারের আগ পর্যন্ত ৯ ওয়ানডে খেলেন সাকিব। কিন্তু একটি ম্যাচেও ৩ উইকেট নেয়ার ক্ষমতা দেখাতে পারেননি। ৯ ম্যাচে সাকিবের উইকেট শিকারের সংখ্যাও ৯! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে কোন উইকেটই পাননি সাকিব। তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে নিজেকে মেলে ধরলেন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে (বুধবার ম্যাচের আগ পর্যন্ত ২৭ উইকেট) সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি সাকিব আরও ২ উইকেট নিতেই ২০০ উইকেট পাওয়ার গৌরবে ভাসলেন। ম্যাচের আগের দিন নিজের বোলিং নিয়ে সাকিব বলেছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটে-বলে অবদান রাখছি। আগের ম্যাচে আমার মতো করে বল করতে পেরেছি। আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। সত্যি কথা, নিজের কাছেও মনে হয়েছে, আমি যেভাবে চেয়েছি সেভাবে বোলিং করতে পেরেছি। সে জন্য আমি সন্তুষ্ট। উইকেট/পুরস্কার পেলে তো অবশ্যই ভাল লাগে। আমি ওগুলো নিয়ে অত চিন্তিত না। ভাল বল করছি, কন্ট্রিবিউট করছি তাতেই আমি খুশি। স্বাভাবিকভাবেই ওয়ানডেতে উইকেট পাওয়াটা কঠিন। উইকেট পাওয়া আমি সব সময় মনে করি ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। কিন্তু ভাল বল করাটা আমার হাতে। যেটা আমি করার চেষ্টা করি।’ সেই চেষ্টাতেই সাকিব আরও খুশি হয়ে গেলেন। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম অলরাউন্ডার হিসেবে ৪০০০ রান ও ২০০ উইকেট শিকার করে নিলেন।
×