ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ার বিউটি পার্লারে আগেভাগেই ঈদের সাজগোজ

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৬ জুলাই ২০১৫

বগুড়ার বিউটি পার্লারে আগেভাগেই ঈদের সাজগোজ

সমুদ্র হক ॥ ঈদের আর দেরি নেই। দরজায় টোকা দিয়েছে অনেক আগেই, এখন দুয়ার খুলেছে। চলছে শেষ মুহূর্তের সাজগোজ। নদীতীরে খেয়া পারাপারের মাঝির প্রতীক্ষা দেখে কবিগুরু যেমনটি লিখেছিলেন ‘কে যাবি পাড়ে ওগো তোরা কে, আমি তরী নিয়ে বসে আছি নদী কিনারে...’। যেমন দুয়ারে নারী ও তরুণীদের ঈদের রূপসজ্জার ডালা নিয়ে বসেছে বিউটি পার্লার। এতকাল রাজধানীর বিউটি পার্লারেই শুধু মাতিয়ে উঠত সবাই। এখন দিন পাল্টেছে। প্রতিটি শহরে বিউটি পার্লারের স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেমের কি বোর্ডে ঝড় উঠেছে। তালে তালে বাজছে ড্রাম। এই বাদ্যে নেচে উঠেছে সৌর্ন্দযপিপাসু নারী। বিউটি পার্লারে শিশু কিশোরী তরুণীরা তো সাজছেই হালে মধ্য বয়সীরাও কম যায় না। তাদের সাজাতে অনেকটা পরিশ্রম করতে হয়, এমনটিই বললেন বগুড়ার সবচেয়ে বড় সুকন্যা বিউটি পার্লারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশরাত জাহান। অভিজ্ঞতায় জানালেন, হিমালয়ে ওঠা থেকে বিমান চালাচ্ছে নারী, এগিয়ে যাচ্ছে সকল ক্ষেত্রেই। সাজগোজে পিছিয়ে থাকবে কেন! মধ্যবয়সীরাও এখন রূপ সচেতন। ‘কুড়িতে বুড়ি’ বলার দিন আর নেই। পঞ্চাশেও এখন অনেক তরুণী। তাদের আরও সাজিয়ে তোলার কাজটি নিয়েছে বিউটি পার্লার। বলা হয় রূপচর্চায় মেয়েরা এগিয়ে আপাত দৃষ্টিতে তা মনে হয় ঠিকই, তবে রূপচর্চা যে শুধু মেকআপ ও ফেসিয়াল নয় একবিংশ শতকে তা কি বলার দরকার আছে। ছেলেরা সাজছে বাহারি পোশাকে। প্রতিদিন ক্লিন সেভ করে লোশন পারফিউম বডি স্প্রে করে বের হচ্ছে। নারীও পৃথিবীর শুরু থেকে নিজেকে সাজিয়ে তুলছে। প্রাচীনের ধারাবাহিকতায় এসেছে বিউটি পার্লার। ঈদের আগের সময়টায় পার্লারে সবচেয়ে বেশি সাজগোজ হচ্ছে মেনি কিউ পেডি কিউ। অর্থাৎ হাতের কনুই থেকে তালু ও পায়ের হাঁটু থেকে পাতা পর্যন্ত ঝকঝকে পরিষ্কার। ফেসিয়ালের মধ্যে হারবাল ও ফ্রুট ফেসিয়ালই হচ্ছে বেশি। চুল কার্ল (পেঁচানো) ও চুল স্ট্রেইট করে নিচ্ছে তরুণীরা। এগুলো ফ্যাশনের অন্তর্ভুক্ত। নানা ডিজাইনে চুল কাটা তো আছেই। চুল সাইজ করে মেকাপের প্যাকেজে ফেস প্যাক ও ফাউন্ডেশনেও আধুনিকতা এসেছে। ভ্রু প্লাকের ওপর প্যাঁচিং করে আই শ্যাডো ও আই লাইনারে নতুনত্ব এসেছে। মোটা ভ্রু পাতলা করার পর সেই মাপে লাইনার ও শ্যাডো দেয়া হয়। পার্লারের এতসব কাজের সঙ্গে ঈদের বড় আকর্ষণ মেহেদি । বাহু থেকে শুরু করে কনুই এবং হাতের তালু ও কব্জিতে এমন নকশা করে মেহেদির রং দেয়া হয় যে নমনে হবে শিল্পীর কারুকাজ ফুটে উঠেছে। নকশার জন্য মেহেদি এখন টিউব ও কোণ প্যাকে পাওয়া যায়। যাতে নকশা করতে সুবিধা হয়। মেহেদির নকশার সঙ্গে হালে চুলের কার্লও রং করা হচ্ছে। বর্তমানে চুলের সোনালি ও নীলাভ রঙের ডিমান্ড বেড়েছে। প্রজন্মের তরুণীরা সোনালি ও নীল রং বেশি পছন্দ করছে। মেহেদির রঙেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। নেল পলিশের পার্লের মতো করা হয়েছে। মেহেদির লালচে রঙের মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা আনা হয়েছে। ঈদের পার্লারের এত যে আয়োজন তার দরও কিন্তু কম নয়। নিচে ৫শ’ টাকা থেকে শুরু করে ওপরে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আছে। এসব কাজের বেশিরভাগই হয় যন্ত্রে। যারা সাজে তারা বুঝতেই পারে না। ঈদে সাজগোজ হবে না তা কি হয়...এমন মন্তব্য করে কয়েক তরুণী বলল ঈদের অন্তত তিন দিন যেন এই সাজ থাকে সেই গ্যারান্টিও নেয়া হচ্ছে।
×