সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের ঘাতকরা একে একে ধরা পড়ছে। মঙ্গলবার রাতে আসামি ময়না ও বুধবার বেলা আড়ইটায় অপর আসামি দুলালকে আটক করে জনতা পুলিশের হাতে দিয়েছে। এর আগে ঘটনার দিন মাইক্রোবাসসহ মুহিত ও সৌদি আরবের জেদ্দায় কামরুলকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় এই ৪জনসহ মোট ৭জনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার বৃষ্টিমুখর দিনেও রাজন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন-বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত ছিল। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাজনের বাবাকে ১ লাখ টাকা প্রদান ও দ্রুত বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। ময়না ৭দিনের রিমান্ডে। মামলা ডিবিতে স্থানান্তর হচ্ছে। রাজন হত্যা নিয়ে পুলিশের বাণিজ্যি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও স্বজনদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমিনুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে এসব অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএম রুকন উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রাজন হত্যাকা-ের বিষয়টি জনসমক্ষে খোলাসা হতে শুরু করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যতম আসামি ময়না ও মুহিতকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। রাজন হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের আড়াল করে মামলাটি ধামাচাপা দেয়ার পুলিশী তৎপরতার বিষয়টির সঙ্গে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে খুনীদের বাঁচাতে ও দেশত্যাগের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ও জোরালো হচ্ছে। রাজনের বাবা আজিজুর রহমান ছেলের লাশ পাওয়ার পর পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টিকে পুলিশের দায়িত্বহীনতার নমুনা বলে উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ৮ জুলাই সারাদিন ছেলে রাজনের কোন খোঁজ না পেয়ে, আজিজুর রহমান কয়েকজন লোক নিয়ে রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীর জালালাবাদ থানায় জিডি করতে যান। তারা যাবার আগেই অতি উৎসাহী হয়ে পুলিশের এসআই আমিনুল ইসলাম রাজনকে ‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি’ ও ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে একটি হত্যা মামলা (নং ৪) দায়ের করেন। সেখানে সৌদিতে পলাতক কামরুলসহ জড়িত অনেকের নামই ছিল না। লাশ শনাক্ত করার পর আজিজুর রহমান কামরুলসহ জড়িত সকলের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম মামলা নেননি। গ্রহণ করা হয়নি তাদের এজাহারও। উপরন্তু আজিজুর রহমানকে ‘চোরের বাপ’ বলে অপমান করেন। তারপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাকে বের করে দেয়ার পর থানার একটি কক্ষে গোপন বৈঠক করেন আলমগীর ও আমিনুল। থানায় তার সঙ্গে ছিলেন রাজনের চাচা শেষ শফিকুর রহমান ও আল-আমিন, মইয়ারচর গ্রামের মুরব্বি মোহাম্মদ আলী দুদু মিয়া ও মামাত ভাই আব্দুল মালিক। শেখ আজিজুর রহমানের অভিযোগ, থানা পুলিশ মিলে কামরুলকে সৌদিতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। এর জন্য ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয় তাদের মধ্যে। চুক্তির অর্ধেক টাকা পুলিশকে হস্তান্তর করার পর কামরুলকে পালাতে সহায়তা করে পুলিশ। তার ভাই মুহিতকে ছেড়ে দেবার জন্যে সৌদিতে পৌঁছার পর বাকি ৬ লাখ টাকা দেবার অঙ্গীকার করে কামরুল। মামলার এজাহারে এসআই আমিনুল উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই ভোর ৬টায় ভ্যানগাড়ি চুরিকালে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে মারপিট করলে গুরুতর আহত ও পরবর্তীতে মৃত্যু হয়। সকাল ১১টায় লাশ উদ্ধারের পর এসআই আমিনুল স্বপ্রণোদিত হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
রাজনের হত্যাকা- সর্বস্তরের মানুষের কাছে মর্মস্পর্শী। মানুষ ঘাতকদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সোচ্চার। শুধু পুলিশ নয়, নিজেরাও অনুসন্ধানী দৃষ্টি ফেলে রেখেছেন। কোথায় আছে ঘাতকরা। তাইতো দেশে বিদেশে একে একে মানুষের হাতেই ধরা পড়ছে শিশু রাজন হত্যাকারীরা। একটি শিশুর জন্য অগণিত মানুষের উদ্বেগ ও খুনীদের প্রতি গণমানুষের ঘৃণা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শিশু রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ময়নাকে গ্রেফতারের খবরে মধ্যরাতে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের টুকের বাজারে হাজারো মানুষের ঢল নামে। সমবেত জনতার উল্লাস শুরু হয়, সেই সঙ্গে এ সময় ফাঁসি ফাঁসি বলে গগনবিদারী চিৎকার করে ওঠে জনতা। অনেকে ময়নাকে মারতেও উদ্যত হন। অবস্থা বেগতিক দেখে অতিরিক্ত পুলিশ নেয়া হয় ঘটনাস্থলে। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন। পরে কড়া নিরাপত্তায় ময়নাকে নিয়ে যাওয়া হয় জালালাবাদ থানায়। রাত ১১টার দিকে টুকের বাজারের পীরের বাজারের একটি বাড়ি থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আসামি ময়নাকে আটক করে পুলিশ। অপরদিকে বুধবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে শহরতলীর কুমারগাঁও শেখ পাড়া এলাকা থেকে রাজন হত্যা মামলার অপর আসামি দুলালকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেনÑ মুহিত আলম ও তার স্ত্রী লিপি বেগম, ময়না মিয়া (ওরফে বড় ময়না), ফিরোজ আলী ও আসমদ উল্লাহ, দুলাল আহমেদ ও কামরুল।
কামরুলকে শীঘ্রই আনা যাচ্ছে না ॥ সৌদি আরবের বাংলাদেশ কনস্যুলেট ঈদের ছুটিতে থাকায় শীঘ্রই শিশু রাজন হত্যা মামলার আসামি কামরুলকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ সম্পর্কে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাজন হত্যার আসামি কামরুলকে দেশে ফেরত আনতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিচ্ছে বাংলাদেশ। এজন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। জানা যায়, ঈদের ছুটিজনিত কারণে সৌদি আরবের বাংলাদেশী কনস্যুলেট বন্ধ থাকায় এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে। ১৩ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় রাজন হত্যার আসামি কামরুল ইসলামকে সৌদি আরবের জেদ্দায় আটক করা হয়। জেদ্দায় অবস্থানরত প্রবাসীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল আজিজুর রহমান এর নেতৃত্বে একটি দল কামরুলকে তার বাসা থেকে আটক করে। রাজনের হত্যাকাণ্ডের পরের দিন অন্যতম ঘাতক কামরুল সৌদি আরব পাড়ি জমায়।
মামলা ডিবিতে ॥ নির্মম নির্যাতনে সিলেটের কুমারগাঁওয়ে খুন হওয়া কিশোর সামিউল আলম রাজনের নির্যাতনকারী খুনী চৌকিদার ময়না মিয়ার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমাগীর হোসেন সিলেট মহানগর হাকিম আদালত-২ এর বিচারক সাহেদুল করিমের আদালতে ময়নার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান। বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে রাজন হত্যা মামলার তদন্তভার ডিবিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রধানমন্ত্রীর দান নিয়ে শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী চুমকী ॥ সিলেটে বর্বরোচিতভাবে ১৩ বছরের কিশোর সামিউল আলম রাজন হত্যাকা-ের বিচার অতিদ্রুততার সঙ্গে শেষ করার জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে প্রতিমন্ত্রী সামিউলের গ্রামের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলা কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেয়ালি গ্রামে যান। তিনি সামিউলের বাবা-মাকে সান্ত¡না প্রদান করে বলেন, ‘এই নির্মম হত্যাকা-ের নিন্দা জানানো ভাষা আমার জানা নেই।’ প্রতিমন্ত্রী চুমকী বলেন, ‘এ ধরনের নৃশংস হত্যাকা- যাতে আর না ঘটে, সেজন্য খুনীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’ তিনি সামিউল হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিনকে নির্দেশ প্রদান করেন।
প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানুযায়ী সামিউলের বাবা-মার হাতে এক লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগেরসহ-সভাপতি আশফাক আহমদ চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সাবেক মহিলা সাংসদ জেবুন্নেসা হক, আওয়ামী লীগ নেতা সুজাত আলী রফিক প্রমুখ।
নির্যাতনের মাধ্যমে সিলেটে কিশোর সামিউল আলম রাজন হত্যাকা-ের ঘটনায় তার বাবা-মাকে সান্ত¡না দিতে সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেয়ালি গ্রামে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া। বুধবার দুপুর পৌনে একটার দিকে তিনি সেখানে যান। এসময় তিনি রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও মা লুবনা আক্তারকে সান্ত¡না প্রদান করেন। তিনি রাজনের মা লুবনা আক্তারকে বলেন, ‘আজ থেকে আপনি আমার আপন বোন। আমি মনে করব আমার আরেকটা বোন আছে, আর সেটা হচ্ছেন আপনি।’ সাংসদ কেয়া সামিউলের ছোট ভাইকে উপদেশ দিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে বলেন। সে যেন বড় হয়ে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা দেখতে পেলে প্রতিবাদে সোচ্চায় হয়, সেই উপদেশ দেন তিনি। এর আগে সাংসদ কেয়া রাজন হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি যেখানে রাজনকে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে একটি ঘৃণা স্তম্ভ নির্মাণের দাবি সংসদে তুলবেন বলেও স্থানীয় মানুষদের আশ^স্ত করেন। তিনি বলেন, মানুষ যাতে শিশু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে সব সময় ঘৃণা প্রকাশ করে, সে জন্যই সামিউল হত্যাকা-ের স্থানে একটি ঘৃণা স্তম্ভ নির্মাণের দাবি সংসদে জানানো হবে। তিনি রাজনকে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক বলে উল্লেখ করেন।
ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সহায়তা ॥ রাজনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে। এছাড়াও হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত হয় সেজন্য মামলা পরিচালনায় যথাসাধ্য সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ।
সংগঠনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সিলেটের সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নে রাজনের বাড়িতে গিয়ে তার পিতা শেখ আজিজুর রহমানের হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান খসরুজ্জামান খসরু মানবিক কারণে সকল প্রবাসীদের রাজনের পরিবারকে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন- ছোট্ট শিশু রাজনকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। কোন সুস্থ মস্তিকের মানুষ এটা করতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না। আমরা রাজন হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
স্মারকলিপি ॥ কিশোর সামিউল আলম রাজনের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেটের শিশু-কিশোররা। সিলেট জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিনের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়। সিলেটের শিশু সাংবাদিক মনির হোসাইনের নেতৃত্বে শিশু-কিশোররা এই স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপির সঙ্গে সিলেটের ৬ শতাধিক শিশু-কিশোরের গণস্বাক্ষরও যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। গত দুই দিন ধরে এই গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। স্মারকলিপিতে শিশু রাজন হত্যায় জড়িত সকল খুনীকে দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশের কোথায়ও যেন এ ধরনের শিশু নির্যাতনের ঘটনা না ঘটে যেন সেজন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিতেও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। শিশু সুরক্ষায় প্রয়োজনে শিশুবিষয়ক পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিও জানানো হয় উক্ত স্মারকলিপিতে। স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদিন দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন ‘বিচার অবশ্যই হবে এবং তা হবে দ্রুত বিচার আইনেই হবে। তিন মাসের মধ্যে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হলে কেউ এই ধরনের অন্যায় করার সাহস পাবে না।’ স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট এমসি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র ইফতেখার রিজভী, বিজিবি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র কয়েস আহমদ, সিলেট মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সুলতানা মৌরি, সিলেট কমার্স কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সাবিহা শান্তা, শাহ খুররম ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ইমরান ইমন, সিলেট সরকারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র জুনায়েদ সানীসহ প্রমুখ।
হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে শিশু-কিশোর সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বপ্নঘুড়ির উদ্যোগে বুধবার বিকেল ৩টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
রাজন হত্যার বিচার বিলম্ব করা যাবে নাÑ চুমকী ॥ বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার তদন্ত ও বিচার দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই বিচার বিলম্বিত করা যাবে না। বিলম্বিত হলে ন্যায়বিচার নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।
চুমকী নিজের বাবার বিচারের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, রাজন হত্যাকা-ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার সবাই চায়। তাদের ক্ষমা করা যাবে না। তবে বিচার খুব দ্রুত করতে হবে। আর বিচার যত দেরিতে হবে, তত সমস্যা দেখা দিবে। আমার বাবার খুনীদের ফাঁসি হয়নি, যাবজ্জীবন হয়েছিল। পরবর্তীতে এরশাদ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিশেষ ক্ষমা প্রদর্শন করে মুক্ত করে দেয়া হয়। আমি চাই না রাজনের খুনীরা এভাবে রেহাই পেয়ে যাক।
রাজন হত্যার বিচার যাতে ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করা যায় এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে জানান।
মামলা ডিবিতে ॥ পুলিশের টাকা নেয়ার অভিযোগ তদন্ত দাবি
রাজনের ঘাতকরা একে একে ধরা পড়ছে
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: