ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বদেশ রায়

সাকার পরিবারের তৎপরতা ॥ পালাবার পথ কমে গেছে

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ১৬ জুলাই ২০১৫

সাকার পরিবারের তৎপরতা ॥ পালাবার পথ কমে গেছে

‘নিষ্পাপ বাঙালি রক্তে যে গাদ্দার খেলেছিলো হোলি/শক্তিমদমত্ত সেই সহিংস অশনি/ তোমার বিশাল বুকে তারো জন্যে ছিল কিছু ক্ষমা/ গুঁড়িয়ে দাওনি, পিতা সেই খল নায়কের খুলি।’ ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের পরের সেই দুর্দিনে আমাদের কয়েক কবির কবিতার কিছু লাইন ছিল পিতৃহারা সন্তানদের জন্য আকাশের তারার আলো। যেন সেই ডিজনির লায়ন কিং-এর পিতৃহারা সিংহ শাবকটি যেমন করে আকাশের তারা দেখত তেমনি। বাস্তবে সারাদেশে কোন আলো ছিল না। কেবল ছিল কালো হিংস্র হায়েনার ভয়াল দাঁতের বীভৎসতা। অন্ধকারে যখনই হায়েনার হাসি দেশকে সন্ত্রস্ত করে তুলত তখন মনে হতো, পিতা, মুজিব কেন তুমি এদের বাঁচিয়ে রেখেছিলে! এদের পশুর থেকে নির্মমভাবে হত্যা করার অধিকার দেশের মানুষ তোমাকে দিয়েছিল! তারপরেও কেন পিতা তুমি তা করোনি! পিতৃহারা আমাদের মতো কোটি কোটি সন্তান যখন এই ভেবে গুমরে কেঁদেছে, সে সময়ে সান্ত¡না দিয়েছে কবি মুহম্মদ নুরুল হুদার যিযাস মুজিব কবিতার এ লাইনগুলো। বুঝতে সক্ষম হয়েছি, তুমি যিযাসের সমক্ষক পিতা। তুমি নিজ মৃত্যুকে মেনে নেও- তাই সে যত কঠিন ক্রশবিদ্ধ মৃত্যু হোক না কেন। তারপরেও যে পাপীÑ পিতা তুমি তারও। তাই পারোনি সাধারণ রাষ্ট্রনায়ক বা রাজনীতিকের মতো পাপীকে হত্যার নির্দেশ দেয়ার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়েও ব্যবহার করতে। অথচ পিতা তুমি যখন রাজনীতিবিদ ছিলে, ছিলে সংগ্রামী তখন কিন্তু তুমি বলেছে, ভদ্রলোকের সঙ্গে ভদ্রলোকের মতো ব্যবহার করবে আর পশুর সঙ্গে আরও বেশি পাশবিকতা নিয়ে মোকাবেলা করবে নইলে তুমি পরাজিত হবে। কিন্তু রাজনীতিবিদ থেকে রাষ্ট্রনায়ক থেকে পিতা হয়ে গিয়ে তুমি আর পারোনি তোমার এই নীতিতে নেমে আসতে। কারণ, তখন তুমি চলে গেছো যিযাসের পাশে। আমরা সাধারণরা না দেখতে পেলেও কবি তোমাকে দেখতে পেয়েছে। বত্রিশ নাম্বারে সিঁড়িতে পড়ে থাকা তোমার নিথর দেহ আমাদের ক্রশবিদ্ধ যিযাসের ছবি। কিন্তু অসহনীয় এক গুরুভার দিয়ে গেছো তোমার কন্যার কাঁধে। যিনি এখন নিঃসঙ্গ শেরপা। যুদ্ধ করছেন একা। পৃথিবীর কোন বীরকে মনে হয় এমন সমগ্র যুদ্ধ একাকী করতে হয়নি। যা তোমার কন্যাকে করতে হচ্ছে। পিতা তুমি আমাদের হিংস্র শ্বাপদে ভরা পৃথিবীকে তৈরি করতে চেয়েছিলে স্বর্গ। কিন্তু আসলে মর্ত্যলোক, মর্ত্যলোকই। এখানে পুষ্পেও কীটসম তৃষ্ণা জেগে রয়। আর তাই তো সকল স্বার্থের উর্ধে উঠে, ভদ্রলোকের সঙ্গে ভদ্রলোকের মতো ব্যবহার করছেন তোমার কন্যা আর পশুর সঙ্গে আরও পাশবিক পথে। তোমার নির্দেশিত পথ থেকে এক চুলও নড়ছেন না তিনি। তিনি যেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মন্ত্রী কৌটিল্যর মতো টিকিতে গিরো দিয়েছেন, যতক্ষণ না গ্রীকদেরকে হটাতে পারব ততক্ষণে এ গেরো খোলার নয়। আর সেই চানক্য বুদ্ধিমত্তায় তিনি এগিয়ে চলেছেন। তাই মাঝে মাঝে আমরাও ভুল করে বসি, মনে করি তিনি কী কোন ভুল করলেন? আপোস করলেন চিরস্থায়ীভাবে? বাঙালী মাত্রই এখন শেখ হাসিনার যে কোন কাজে কোন ভুলের গন্ধ পেলেই উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে, আর এই উৎকণ্ঠা যতখানি শেখ হাসিনার জন্যে ততখানি তার নিজের অস্তিত্বের জন্যেও। আহমদ ছফার বাক্য থেকে ধার নিয়ে বলতে হয়Ñ বাঙালীর অস্তিত্ব আর শেখ হাসিনার অস্তিত্ব এখন যমজ শব্দ। একে পৃথক করা যায় না। যে কারণে শেখ হাসিনার কোন কাজের ভেতর দৃশ্যত কোন ভুলের গন্ধ পেলে বাঙালী মাত্রই উৎকণ্ঠিত হয়ে ওঠে। যেমন উৎকণ্ঠিত হয়েছে সৈয়দ আশরাফকে ঘিরে নেয়া এই সিদ্ধান্তে। সততায়, যোগ্যতায়, দেশের প্রতি বিশ্বস্ততায় ও আধুনিকতায় সৈয়দ আশরাফের সমকক্ষ মানুষ বাংলাদেশে হাতে গোনা কয়েকজন। তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করার পরে, ওবায়দুল কাদেরই একমাত্র পাবলিক স্টেটমেন্ট করেছেন, তাকে দলের কাজে আরো বেশি লাগানোর জন্যে এই সিদ্ধান্ত। বাঙালিত্বে, বাংলাদেশে যারা বিশ্বাস করে, তারা ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনেছেন। কিন্তু তাতে তাদের ক্ষত শুকায়নি। কারণ, সৈয়দ আশরাফ আর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এক নয়। একজন পিতার রক্তে কেনা আওয়ামী লীগার আরেকজন ভাড়াটে প্লেয়ার। তাই দুজনকে দফতরবিহীন করার পদ্ধতি এক হতে পারে না। সৈয়দ আশরাফকে যদি দলের কাজে লাগাতে হয় তাহলে তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরাতে হলে পদ্ধতি হতে হবে অনেক সম্মানের। মনে রাখতে হবে ১/১১ পরবর্তী সৈয়দ আশরাফকে। মনে রাখতে হবে, তার রক্তে কেনা আওয়ামী লীগার হবার ঐতিহ্যকে। মনে রাখতে হবে ৫ মের বিকেলকে। তবে শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনাই। তিনি বুঝতে পেরেছেন সৈয়দ আশরাফ ঘিরে একটি ক্ষত তৈরি হয়েছে সাধারণ বাঙালীর মনে। তাই ইতোমধ্যে দু’জন একান্ত বৈঠক করেছেন দুবার। এ কারণেই শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখা যায়। তবে শুধু আস্থা রেখে কেমন যেন শান্ত হতে পারছে না বাঙালী সন্তানরা। সোস্যাল মিডিয়ায় বাঙালী ছেলেরা উদ্বিগ্ন, পাকিস্তানী জারজরা উল্লসিত। শেখ হাসিনা পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। তিনি শেষ অবধি কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা এখন বলা যায় না। তবে, সাধারণ সাংবাদিক হিসেবে বলতে পারি, সৈয়দ আশরাফ ছাড়া তাঁর দলে আর কেউ আছেন কিনা যে, ৫ মে হেফাজতকে ওইভাবে হুমকি শুধু নয় তার মত করে বলতে পারতেন, হেফাজতের নামে যারা জড়ো হয়েছে ওরা সব রাজাকার ও রাজাকারের সন্তান। কারণ সারাদিন প্রত্যেকটি টেলিভিশন চ্যানেলের রিপোর্টাররা যাদেরকে তৌহিদি জনতা বলছে, সারা ঢাকায় যখন তারা তা-ব চালাচ্ছে। পুলিশের রিপোর্টে যখন পাওয়া যাচ্ছে তারা সারাদেশে ২৫ লাখ ও ঢাকায় আড়াই লাখ লোককে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে। বেগম জিয়ার অফিস থেকে যখন তাদের কাছে বার্তা আসছে, দু’ একজন মন্ত্রীকে ধরে আগুনে পুড়িয়ে রাস্তায় টাঙ্গিয়ে রেখে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলো সবাইকে। ওই সময়ে ধীর স্থির বীরের মতো যে হুমকি সৈয়দ আশরাফ দিয়েছিলেন, তা আর ক’জন পারতেন! কারণ শুধু ১/১১ তেই আমরা অনেককে টিভি পর্দায় কাঁদতে দেখেছি। কিন্তু সৈয়দ আশরাফ এখানে বঙ্গবন্ধুকেই আদর্শ মেনে নিয়েছিলেন, তিনি পশুর সঙ্গে আরও পাশবিক ব্যবহার করার হুমকি দিয়েছিলেনÑ যা বাস্তবায়িত করেছিলেন তার নেত্রী। আর আমাদের দেশপ্রেমিক কিছু পুলিশ অফিসার। যাদেরকে জাতি একদিন স্যালুট দেবে। কারণ, তারা এমন একটি অপারেশনে ওই রাতে অংশ নিয়েছিলেন, যে অপারেশন সাকসেসফুল না হলে বাংলাদেশ একশ’ বছরের জন্যে তালেবানদের হাতে চলে যেত। শেখ হাসিনা অনেক বড় রাজনীতিবিদ, মানুষের বুকের ও মুখের ভাষা তিনি আমাদের থেকে অনেক বেশি বোঝেন। তাই সৈয়দ আশরাফকে ঘিরে তাঁর সিদ্ধান্তের দিকেই এখন তাকিয়ে দেশের বাঙালীরা। যাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে শেখ হাসিনার সফলতা ও অস্তিত্বের ওপর। শেখ হাসিনা সঠিক কাজই করবেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে ভদ্রলোকের সঙ্গে ভদ্রলোকের মতো ব্যবহারই করবেন। আবার বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তিনি পশুর প্রতি আরো বেশি পাশবিক হবেন। যেমন তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট বলেছেন, পেট্রোল বোমায় মানুষ হত্যার হুকুমের আসামি খালেদা। হত্যার সুপ্রীম রেসপনসিবিলিটি খালেদার। অতত্রব, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার হবে। কিন্তু এই বিচার করার কাজে ক’জনকে আন্তরিকভাবে, আদর্শগতভাবে পাশে পান শেখ হাসিনা তা দেখার বিষয়! বড় দুর্ভাগা নয় কি এ দেশ! কারণ, প্রধান বিচারপতি তাঁর আদালতে ফখরুলের মামলার শুনানির সময় বললেন, যাদের নির্দেশে কর্মসূচী ডাকার ফলে পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, তারা এই হত্যার দায় এড়াতে পারে না। অথচ দেখা গেল সুপ্রীমকোর্ট থেকে মির্জা ফখরুল জামিন পেয়ে গেল। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আদালতের গঠনমূলক সমালোচনা করা যাবে। তাই তার কাছে বিনীত প্রশ্ন- ১৪৩ জনকে পুড়িয়ে মারার অন্যতম হুকুমের আসামি কিভাবে চিকিৎসার জন্যে জামিন পায়! জমির আল নিয়ে লাঠি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে হাজার হাজার দরিদ্র আসামি যেখানে বছরের পর বছর জেলে আটকা। কারণ, তারা খুনের আসামি। সেখানে রাজনীতির নামে প্রকাশ্যে এই ১৪৩ জনকে খুন করার পরেও সে জামিন পাবে! এই কি বিচারকের ন্যায়দ-! বিচারকরা নিশ্চয়ই জানেন, কেন তারা পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে এভাবে নৃশংস হত্যাকা- চালাচ্ছে। বাস্তবে এটা আইএসের পদ্ধতি। আইএস সবখানে এভাবে ভয়াবহ নৃশংসতা সৃষ্টি করে দেশের মানুষকে পাজেলড করে দিতে চায়, যাতে কেউ প্রতিরোধে এগিয়ে না আসে। ফখরুলের জামিনের ভেতর দিয়ে বিচারকরা কি বাংলাদেশকে আইএসের পথে অগ্রসর হওয়ার সুবিধা করে দিলেন না? এসব ঘটে কি ফখরুলের টাকা আছে বলে আর যারা জমির আল নিয়ে মাথা ফাটায় ওদের টাকা নেই বলে? এখানেই কি শেষ! ’৭১-এর অন্যতম নৃশংস খুনী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। নিষ্পাপ বাঙালী রক্তে যে গাদ্দারগুলো সব থেকে বেশি হোলি খেলেছিল এই সাকা তাদের একজন। এই যুদ্ধাপরাধীর আপীল বিভাগের রায় ২৯ জুলাই। পিতা মুজিব! তোমার কন্যাকে এখানেও ক্রশে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তাই যদি না হয়, তাহলে কিভাবে যারা বিচার করছেন সেই বিচারকদের একজনের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের লোকেরা? তারা কোন পথে বিচারকের কাছে ঢোকে, আইএসআই ও উলফা পথে না অন্য পথে? ভিকটিমের পরিবারের লোকদেরকে কি কখনও কোন বিচারপতি সাক্ষাত দেয়। বিচারকের এথিকসে পড়ে! কেন শেখ হাসিনার সরকারকে কোন কোন বিচারপতির এ মুহূর্তের বিদেশ সফর ঠেকাতে ব্যস্ত হতে হয়। যে সফরের উদ্যোক্তা জামায়াত-বিএনপির অর্গানাইজেশান। কেন বিতর্কিত ব্যবসায়ী আগে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়। কী ঘটতে যাচ্ছে সেখানে। ক্যামেরনই পরোক্ষভাবে বলছেন সকল সন্ত্রাসীর একটি অভয়ারণ্য হয়েছে লন্ডন। এসব সাক্ষাত, বিদেশ সফর কিন্তু আমাদের জজকোর্টে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়া বিচারককে মনে করিয়ে দেয়। যে রায় কেবিনেট মিটিংয়ে বসে শোনার পরে- পিতা মুজিব! তোমার কন্যাকে শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে হয়, বিচারকও বিক্রি হয়ে গেল। সে বিচারকও এক রায় দিয়ে পরিবার নিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তার বিশাল সম্পত্তির উৎস এখন খুঁজছে দুদক। তারেক রহমানের থেকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর টাকার পরিমাণ কম নয়। আর এই টাকার পরিমাণ যে কত তা শুধু একটি ব্যক্তিগত আলাপচারিতার উদাহরণ দেই। র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে ব্যক্তিগতভাবে আমি পছন্দ করি। উচ্চশিক্ষিত এই পুলিশ অফিসারের সব থেকে বড় গুণ তিনি সব কিছু পজিটিভ ভাবে দেখেন। পেসিমিস্ট নন। বরং অনেক বেশি অপটিমিস্ট। তাকে একদিন বলেছিলাম আপনার প্রতি আমার ভালবাসা বেশি, কারণ আপনি যেভাবে জঙ্গীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন তাতে আপনাকে শুধু সম্মান নয় জাতি একদিন স্মরণও করবে। ভদ্রলোক শুধু বললেন, জানেন কি বিপুল অঙ্কের টাকার অফারকে পায়ে ঠেলতে হয়েছে আমাকে। কত সে অঙ্ক জিজ্ঞেস করিনি। শুধু তাকে বলি এসব কথা লিখে যাবেন আত্মজীবনীতে। ভবিষ্যত জেনারেশন পুলিশের জন্য অনেক বড় প্রেরণার হবে, দেশপ্রেমের জন্যে অনেক বড় বিষয় হবে এ লেখা। তারেক রহমানকে খালাস দেয়া বিচারক পারেনি বেনজীর আহমেদ হতে। পারেনি বেনজীর আহমেদের মতো টাকাকে পায়ে ঠেলতে। তাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর টাকার ভয় না পেয়ে উপায় কি? আইএসআই-এর অঢেল টাকার কথা তো সবাই জানে। আর এই টাকার সাহস না হলে কোন্ দুঃসাহসে তার পরিবারের লোকেরা বলে, অমুক বিচারপতিকে বেঞ্চে রাখবেন না। তাই আবার কবি নুরুল হুদার লাইন থেকে কথা নিয়ে বলতে হয়, পিতা! ফুরাবে না এই রক্ত ধারা! বের হতে পারবে না কি বাঙালী তার শরীরের সকল ক্যান্সার মুক্ত করে তোমার কন্যার হাত ধরে! ভয় করে পিতা, বিচারকের রায়ে এ দেশে গোলাম আযম নাগরিক হয়েছিল আর তোমার হত্যার বিচার করতে বিচারক বিব্রত হয়েছিল বার বার। তবে তারপরেও তোমার তর্জনীর বীরত্ব নতুন প্রজন্মে হয়েছে প্রবাহিত। তাই ‘সাহস’ আর ‘আশা’ দুই ভাইবোনই এখন বুক বেঁধেছে তোমার কন্যাকে ঘিরে। তোমার বিরুদ্ধে মিথ্যে রায় দিতে গিয়ে বিচারককে টাওয়েল পরে পালাতে হয়েছে এ দেশ থেকে। সেই ইতিহাস থেকে উৎসারিত সন্তানরা আজ জেগেছে তোমার কন্যাকে ঘিরে। এখন তাই পালাবার পথ গেছে কমে। পিতা! তোমার হাজার হাজার সন্তান পড়েছে তোমার অসমাপ্ত আত্মজীবনী। তারা এখন আর শুধু প্রেম বিলাবে না, তারা পশুর সঙ্গে আরো পাশবিক ব্যবহার করবে। সে হত্যাকারী হোক, হত্যার হুকুমদাতা হোক আর অর্থের বিনিময়ে তাকে রক্ষাকারী হোক। [email protected]
×