ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সঞ্চয়পত্রের তুলনায় ব্যাংকের আমানতে সুদহার অনেক কম

ব্যাংক খাতে কমেছে আমানত প্রবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১২ জুলাই ২০১৫

ব্যাংক খাতে কমেছে আমানত প্রবৃদ্ধি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকগুলো অব্যাহতভাবে আমানতে সুদহার কমিয়ে দিচ্ছে। আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় মানুষও ব্যাংকবিমুখ হয়ে পড়ছে। ফলে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমছে। এপ্রিল শেষে ব্যাংক খাতের আমানত প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ, যা এর আগের মাস মার্চে ছিল ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে আমানত প্রবৃদ্ধি কমেছে ০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ সময়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। সঞ্চয়পত্রের তুলনায় ব্যাংকের আমানতে সুদহার অনেক কম হওয়ায় এমন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি সময় সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার আশানুরূপ ঋণ নিতে না পারলেও ব্যাংকের চেয়ে বর্তমানে সুদহার অনেক বেশি থাকায় জাতীয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়ছে দ্রুতগতিতে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত প্রথম এগারো মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি। আর চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল বলেন, ব্যাংকের সুদহার কমে আসা ও শেয়ারবাজারে নিম্নমুখী প্রবণতার ফলে অনেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন। এতে করে প্রত্যাশার তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে অনেক বেশি অর্থ এসেছে। ফলে আমানতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমেছে। তবে ব্যাংকগুলোর কাছেও এখন প্রচুর তারল্য রয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর অর্থ সঙ্কট হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর আমানত দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ২৫ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি। ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল সাত লাখ ১০ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। এই পরিমাণ আমানত আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি ছিল ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ঋণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার ১০ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি। ডিসেম্বর শেষে ঋণ ছিল পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। পরিমাণের হিসাবে এ সময়ে ঋণ কমলেও প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানার ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। ঋণ বেড়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে ১২ দশমিক ২৬ শতাংশ। ঋণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বেসরকারী ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ঋণ ১৭ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর বিদেশী ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণ পর্যায়ক্রমে কমেছে ০ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলামী শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোর আমানত বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং ঋণ বেড়েছে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
×