ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে ৭ খুন ॥ পৃথক দুই মামলায় আদালতে চার্জশীট গ্রহণ

নারাজি আবেদন খারিজ, ১৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৯ জুলাই ২০১৫

নারাজি আবেদন খারিজ, ১৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ৮ জুলাই ॥ আলোচিত ৭ খুন মামলায় ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশের দেয়া চার্জশীটের বিরুদ্ধে মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও নাসিকের ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটির নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বুধবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদুজ্জামান শরীফের আদালত নারাজির এ আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে পৃথক দুটি মামলায় পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। আদালত একই সঙ্গে মামলার পলাতক ৮ র‌্যাব সদস্যসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ সময় আদালতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এম এম রানাসহ ইতোপূর্বে মামলায় গ্রেফতারকৃত ৩২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিকে গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির ওসি মামুনুর রশিদ ম-ল আলোচিত এই ৭ খুন মামলার চার্জশীট দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে এবং র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (অব) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব) এম এম রানাসহ ২৫ জন র‌্যাব সদস্য ও কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তার ৯ সহযোগীসহ মোট ৩৫জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটির দায়ের করা একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, আমিনুল হক রাজু, হাসমত আলী হাসু, ইকবাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন আশিককে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়ায় বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে নারাজি আবেদন করেছিলেন। এই মামলায় বর্তমানে ২২জন আসামি কারাগারে আটক এবং ভারতের কারাগারে আটক নূর হোসেনসহ পলাতক রয়েছে ১৩ জন। এদের মধ্যে ৮ জন সাবেক র‌্যাব সদস্যর রয়েছে। পলাতক এ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। জেলার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কেএম ফজলুর রহমান জানান, ৭ খুনের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদীর আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রের বিষয়ে কোন আপত্তি নেই, অপর একটি মামলার বাদীর নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে আদালতে দুটি মামলায়ই অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ ব্যাপারে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন জানান, আমরা এই নারাজি আবেদন নামঞ্জুরের সংক্ষুদ্ধ হয়েছি। আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। তিনি বলেন, এই হত্যাকা-টি যদি ৪টি অংশে বিভক্ত করা হয়, পরিকল্পনা, অর্থের যোগান, অপহরণ, গুম ও হত্যা। পরিকল্পনা ও অর্থের যোগানের যে বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা তা কোনক্রমেই উদঘাটন করতে পারেনি। এই হত্যাকা-ের পর থেকে এজাহারভুক্ত যে ৫ জনকে বাদ দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এজাহারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। মামলার বাদী নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি নারাজি আবেদন গ্রহণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নূর হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, হাসমত আলী হাসু, আমিনুল ইসলাম রাজু, আনোয়ার হোসেন আশিক ও ইকবাল হোসেনকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হলেও নূর হোসেন ছাড়া এজাহারভুক্ত ৫ আসামিকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এজারভুক্ত আসামি ইকবাল, রাজু এলাকায় এসে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
×