ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিআরটিএর সাত দালালের জেল-জরিমানা

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টি নেতা ও সহযোগী ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটক ৫

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ৯ জুলাই ২০১৫

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টি নেতা ও সহযোগী ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটক ৫

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে ১৮শ’ পিস অজ্ঞান করার পাকিস্তানের তৈরি এটিভান ট্যাবলেটসহ পার্টির দলনেতা ও অজ্ঞান করার ওষুধ সরবরাহকারী সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাসহ পাঁচ জন, বিপুল পরিমাণ জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ ২ জন, সাত প্রতারক, ইয়াবাসহ দুইজন, ভুয়া র‌্যাব সদস্য গ্রেফতার ও বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি)-এর সাত দালাল দ-িত, ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চিকিৎসা সরঞ্জাম জব্দ করার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা এগারোটায় ডিবির দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদের নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আহসান হাবীবের নেতৃত্বে রাজধানীর মতিঝিল কালভার্ট রোডে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গ্রেফতার হয় অজ্ঞানপার্টির দলনেতা আব্দুল মতিন ওরফে অজ্ঞান মতিন ও তার সহযোগী সোনালী ব্যাংকের ক্যাশ বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ আবুল বাশার, মোঃ সেলিম, মোঃ শিমুল ও মোঃ আবুল হোসেন। পরে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল বাশারের মালিকাধীন কালভার্ট রোডের গাউসিয়া ফার্মেসী থেকে ১৮শ’ পিস নিষিদ্ধ এটিভান ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। আবুল বাশার ব্যাংকে চাকরির পাশাপাশি ওষুধের ব্যবসার আড়ালে আমদানি নিষিদ্ধ মানুষ অজ্ঞান করার পাকিস্তানের তৈরি এটিভান ট্যাবলেট আনত। এ সব ট্যাবলেট ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় তৎপর থাকা অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করত। বুধবার সকাল আটটায় ডিবির উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলমের নির্দেশনায় এডিসি মোঃ শাহাজাহানের তত্ত্বাবধানে ও জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মোঃ নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে রাজধানীর খিলগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গ্রেফতার হয় মোঃ মাসুম পারভেজ ও তার সহযোগী মোঃ আল মামুন। তাদের কাছ থেকে ৩০টি জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়। দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গত বছর অন্তত ২শ’ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছিল। এর মধ্যে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছর ডিবির অভিযানে অজ্ঞান পার্টির ৫৪ সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জনই গ্রেফতারের পর দলনেতা অজ্ঞান মতিন ও সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল বাশারের কাছ থেকে অজ্ঞান করার এটিভান ট্যাবলেট সংগ্রহ করে বলে জানায়। মনিরুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেফতারকৃত জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি চক্রের দুই সদস্য একবছর ধরে এ কাজ করে আসছিল। গ্রেফতারকৃতরা নিলক্ষেতে একটি দোকানে জাল সনদ তৈরি কাজ করত। তারা মূলত সিএনজি, মোটরসাইকেল, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান চালকদের জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরির কাজ করত। প্রতিটি জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স তারা এক হাজার থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি করত। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির উত্তর, দক্ষিণ, মিডিয়া ও পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, মাশরুকুর রহমান খালেদ, মুনতাসিরুল ইসলাম ও সাজ্জাদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সাত প্রতারক গ্রেফতার ॥ সোনালী ব্যাংকে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার দায়ে র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা বুধবার গুলশানের ২৩/এ রোডের ৪ নম্বর প্লটের অনন্য ভিলা নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাত প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। দুই ইয়াবা ব্যবসায়ী গ্রেফতার ॥ বুধবার রাজধানীর উত্তরা বাউনিয়া থেকে ১৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ রাজিউল ও শান্তকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ভুয়া র‌্যাব গ্রেফতার ॥ মঙ্গলবার গভীর রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে র‌্যাব সদস্য পরিচয়দানকারী দুই জনকে আটক করেছে র‌্যাব-১। গ্রেফতারকৃতরা মাইক্রোবাসের সামনে র‌্যাব লেখা স্টিকার লাগিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। বিআরটিএ’র সাত দালাল দ-িত ॥ বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বিআরটিএ অফিসে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যািজস্ট্রেট মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান আব্দুল্লাহ মমিন, মিজান, লিটন, সবুজ, মামুন, সামছুদ্দিন রাজু ও জনি নামে সাত দালালকে জেল জরিমানা করেন। এর আগে রাজধানীর খিলক্ষেতে অভিযান চালিয়ে ফিটনেস না থাকায় ১৪টি গাড়িকে জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালতটি। ভ্যানচালকের লাশ উদ্ধার ॥ বুধবার দুপুর একটায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর রায়েরবাজার নেকাব খান রোডের একটি বাসা থেকে আলমগীর সর্দার (৪০) নামের এক ভ্যানচালকের ঝুঁলন্ত লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ। নিহতের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা থানার আব্দুর রহিম সর্দারের ছেলে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চিকিৎসা সরঞ্জাম জব্দ ॥ বুধবার শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চালিয়ে ৯৮টি এনজিওগ্রাফি স্ট্যান্ট জব্দ করে। জব্দকৃত সরঞ্জামগুলো ড্রাগ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই আমদানি করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। ওরিয়েন্ট এক্সপোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে সরঞ্জামগুলো আমদানি করা। নাহিদ এ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরঞ্জামগুলো ছাড় করতে বিমানবন্দরে কাগজপত্র জমা দেয়।
×