ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরমাণু আলোচনা ॥ মতপার্থক্য শেষ মুহূর্তেও দূর হয়নি

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৯ জুলাই ২০১৫

পরমাণু আলোচনা ॥ মতপার্থক্য শেষ মুহূর্তেও দূর হয়নি

ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া নিয়ে মতানৈক্যের মধ্যে তেহরান ও ছয় জাতির মধ্যে পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে ভিয়েনায় চলা আলোচনার সময় আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। তবে পশ্চিমা কূটনীতিকরা সপ্তাহের শেষ নাগাদ একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার ব্যাপারে এখনও আশাবাদী। খবর এএফপির। কূটনীতিকরা জোর দিয়ে বলেছেন, ইরান ও ছয় বিশ্ব শক্তির মধ্যে মতপার্থক্য আলোচনাকে ক্রমেই সংকীর্ণ করে তুলছে এবং বেশ কিছু বিষয়ে এখনও মতপার্থক্য রয়ে গেছে। তবে এক পশ্চিমা কূটনীতিক মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চুক্তি হলে হবে, নইলে না। এ জন্য অনির্দিষ্টকাল ধরে আলোচনা চলতে পারে না। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেছেন, চুক্তি করতে উভয় পক্ষের সুস্পষ্ট আগ্রহ রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যারি হার্ফ বলেছেন, আগামী ১০ জুলাই শুক্রবারের মধ্যে ইরান ও ছয় জাতির মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি করতে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় কারিগরি পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। প্র্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। তবে চুক্তির বিস্তারিত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে আলোচকদের আরও কিছু সময় প্রয়োজন। জয়েন্ট পয়েন্ট অব এ্যাকশনের (২০১৩ চুক্তি) নানা দিক নিয়ে সমঝোতা আলোচনা চালিয়ে যেতে আমরা এই অতিরিক্ত সময় দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমরা চুক্তির গুণগত দিকের ব্যাপারটি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মেগেরিনি বলেছেন, আলোচকরা নির্ধারিত সময়সীমা ৭ জুলাইয়ের পরও আরও কয়েকদিন আলোচনা অব্যাহত রাখতে পারেন। ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা তেহরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে ভিয়েনায় জড়ো হয়েছেন। ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে গত বছর নবেম্বরে আলোচনা শুরু হওয়ার পর এ বছর ২ এপ্রিল একটি খসড়া চুক্তি হয়। এরপর ৩০ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হতে না পারায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তি হয়নি। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলতে থাকে। ৭ জুলাইয়ের মধ্যে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারিত হয়। তবে উভয় পক্ষ নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়। এ ব্যাপারে ইরানের এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেছিলেন, ৭ ও ৮ জুলাইয়ের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে হবে এটা মনে করি না। এমনকি ৯ জুলাই পার হয়ে গেলেও সব শেষ হয়ে যাবে এমন নয়। এটা আমাদের নতুন করে পর্যবেক্ষণের সময় দেবে। চুক্তি না হওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীর ওপর জাতিসংঘের নিষোধাজ্ঞা ও একটি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বিরোধ অন্যতম। এক পশ্চিমা কর্মকর্তা সোমবার জানান, ইরানীরা ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায়। তাদের মতে, পরমাণু ইস্যুর সঙ্গে এটা জড়ানোর কোন কারণ নেই। অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরানের উর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, তেহরান জাতিসংঘের অস্ত্র নিষোধাজ্ঞারও প্রত্যাহার চায়।
×