ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রেকর্ড গড়া জয়ে সিরিজ পাকিস্তানের

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৮ জুলাই ২০১৫

রেকর্ড গড়া জয়ে সিরিজ পাকিস্তানের

স্পোর্টস রিপোর্টা ॥ ক্রিকেটে পাকিস্তান কেন ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দল তা আরও একবার প্রমাণ করল। তৃতীয় দিন শেষে প্রায় হার দেখা পাল্লেকেলে টেস্ট শেষ পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে জিতে নিল মিসবাহ-উল হকের দল! নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে রেকর্ড ৩৭৬ রান চেজ করে ৭ উইকেটের বিশাল জয়ের পাশাপাশি তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১এ পকেটে পুরল সফরকারীরা! সেই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মাটিতে দীর্ঘ নয় বছর পর সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল ইনজামাম-উল হকের উত্তরসূরিরা। দারুণ এই সাফল্যে তিন ধাপ এগিয়ে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে পাকিস্তান। এক পাল্লেকেলের অর্জনেই প্রাপ্তির খাতা ভরে গেল মিসবাহদের। পঞ্চম ও শেষদিনে কাল প্রয়োজনীয় ৩৭৭ রান (৩৮২/৩) তুলে নেয় পাকিরা, প্রথম ইনিংসে যারা গুটিয়ে গিয়েছিল ২১৫-এ। বিপরীতে স্বাগতিক লঙ্কানরা করে যথাক্রমে ২৭৮ ও ৩১৩ রান। অপরাজিত ১৭১ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা অভিজ্ঞ ইউনুস খান ও তিন ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা তরুণ লেগস্পিনার ইয়াসির শাহ। ম্যাচ ও সিরিজ খোয়ানোর পাশাপাশি বিফলে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কান অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দুরন্ত সেঞ্চুরির ইনিংস (১২২)। ২ উইকেটে ২৩০ রান নিয়ে সোমবার খেলা শুরু করে পাকিস্তান। জয়ের জন্য শেষদিনে প্রয়োজন ছিল ১৪৭। কাল ৪০.১ ওভার মোকাবেলায় আর ১ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মিসবাহবাহিনী। আগের দিনই ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া ওপেনার শান মাসুদ আউট হন ১২৫ রান করে। তবে ১৭১ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ইউনুস। তৃতীয় উইকেটে মাসুদ-ইউনুস করেন ২৪২ রানÑ যে কোনো উইকেট জুটিতে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড এটি। কেবল তাই নয়, ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম চতুর্থ ইনিংসে পাকিস্তানের দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি পেলেন। মাসুদ ফেরার পরও অতিথিদের জয় পেতে সমস্যা হয়নি। ইউনুসের সঙ্গে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক মিসবাহ। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১২৭ রান যোগ করেন তারা। ইউনুসের ১৭১ পাকিস্তানের হয়ে চতুর্থ ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড। আগে যেটি ছিল সেলিম মালিকের দখলে, ১৯৯৭ সালে কলম্বোতে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ১১ বারের মতো ১৫০ উর্ধ ইনিংস খেললেন ইউনুস, এক্ষেত্রে জাভেদ মিয়াঁদাদকে টপকে যান খান সাহেব। ১০৩.১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান তুলে রেকর্ড জয়ের আনন্দে মাতে পাকিরা। প্রথম ইনিংসে ২১৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া দল চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৩৭৭ রান তুলে নিতে পারেÑ পাকিস্তান বলেই এটি সম্ভব! সর্বোপরি টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ দলীয় রান এটি, ৪১৮/৭Ñ রান তুলে এক্ষেত্রে রেকর্ডটা ওয়েস্ট ইন্ডজের দখলে (২০০৩ সালে, সেন্ট জোন্সে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে)। দিস ইজ পাকিস্তান, ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান! এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ প্রায় এক দশকের অপেক্ষার অবসান ঘটাল পাকিরা। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ জিতেছিল সেই ২০০৬ সালে, ইনজামাম উল হকের নেতৃত্বে। ‘এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতমসেরা অর্জন। কারণ শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনেক দিন জয় অধরা ছিল। ম্যাচ জয়ে বড় ক্রেডিট ইউনুস ও মাসুদের, চতুর্থ ইনিংসে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছে ওরা। পাশাপাশি সিরিজে ইয়াসিরের বোলিং ছিল প্রশংসাযোগ্য।’ বলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ।
×