জামায়াতে ইসলামী এ বছর রমজানে সারা দেশে ৬ হাজার ইফতার পার্টির আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। যার প্রধান আসরটি বসেছিল সোনারগাঁও হোটেলে। এর প্রধান আকর্ষণ ছিল ম্যাডাম খালেদা। সেই সুদৃশ্য গতানুগতিক পোশাক, সাজসজ্জায় বিলম্বে উপস্থিত থেকে তিনি সরকারকে উস্কানি দিয়েছেন জ্বালাও পোড়াও হত্যা ইত্যাদির মাধ্যমে তার ক্ষমতা দখলের। জামায়াত-বিএনপি সকলে বলেছেন মারহাবা। সংযমের মাসে এত বিলাসবহুল আয়োজন তাদের পক্ষেই মানায়। যারা এই বাংলাদেশে অঢেল সম্পদের মালিক তারা সোনারগাঁও হোটেলের অভিজাত ইফতার পার্টি দেবে না মসজিদে দেবে?
ইসলাম যে কি ধরনের সমাজ ব্যবস্থা, সে সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের বিশেষ কোন ধারণা নেই। ইসলাম বলতে বোঝাতে হচ্ছে মিলাদ, নামাজ, রোজা রাখা। কিন্তু এর সামাজিক দিকটা কি তা বিশেষ কোন অনুষ্ঠান এমনকি খুৎবায়েও আমাদের দেশে আলোচনা হয়। ইসলাম ব্যবস্থা সম্বন্ধে কোরান এবং হাদিস যে পথ নির্দেশ করে তা থেকে একথা স্পষ্ট যে, সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে মানুষ প্রেরণ করেছেন আল্লাহর সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে গোটা মানব জাতিকে ঐক্যবন্ধ হয়ে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য। আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে মানুষের মাধ্যমে আর তা বিভিন্ন সময়ে নবীরা এ ব্যাপারে এই ধারণা নিয়ে আল্লাহর বাণী প্রচারের চেষ্টা করেন।
হযরত ওমর (রা) বলেছেন যে, তার রাজত্বে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায় সেজন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। হযরত আলী (রা) নিজে দিনমজুরি করে দিনযাপন করতেন। মহানবী সাধারণ জীবনযাপন করতেন, রাষ্ট্রব্যবস্থার যোগ্যতার ভিত্তিতে গঠিত সাহাবীদের মতামত নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা হতো, যে ব্যবস্থায় প্রয়োজনে অধিক গ্রহণ না করা এবং যোগ্য ব্যক্তিকে উপর্যুক্ত পদে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। সাম্যবাদের ভিত্তিতে সামাজিক ন্যায়বিচার, যে ব্যবস্থায় কেউ কাউকে শোষণ করবে না এবং একজন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলবে না এবং অন্য কেউ না খেয়ে থাকবে নাÑ এমনি সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ইসলামে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
প্রশ্ন হলো, সৎ উপায়ে উপার্জনের পদ্ধতি যে কি, তা কে ঠিক করবে? তারা অবশ্যই বিশ্বাস করেন যে, হযরত উসমান (রা) এর খিলাফতকালে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিমালিকানার জমি ক্রয় অধিকারের ফলে যারা বিত্তশালী হয়ে উঠেছিলেন তাদের সকলেরই অর্থ উপার্জনের পদ্ধতি শরীয়তের দৃষ্টিতে সৎ এবং হালাল ছিল বলে দাবি করা হয়। কিন্তু হযরত উমর (রা)-এর খিলাফতকালে অর্থনীতি এরূপ ছিল না যে, কেউ লক্ষপতি হতে পারতেন। যদিও খিলাফতের আর্থিক সমৃদ্ধি সে যুগেই সবচেয়ে বেশি হয়েছিল।
হযরত উমর (রা)-এর খিলাফতকালে যাদের লাঙ্গল ছিল জমি তারই। নিজেরা যারা চাষ করতেন তারাই জমি রাখতে পারতেন। অকৃষিজীবী ব্যক্তি বা অনুপস্থিতির মালিকরা জমি কিনতে বা দখলে রাখতে পারত না। নতুনভাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিশেষ করে জমি ক্রয় নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু হযরত উসমান (রা)-এর আমলে অর্থনৈতিক চিন্তাধারায় পরিবর্তন হয়ে গেল। চাষী হোক কিংবা যে কোন ব্যক্তিই জমি কেনার অধিকার পেল। ফলে জমির দাম অত্যন্ত বেড়ে গেল। গরিব চাষীরা সর্বদাই অভাবে থাকত। অনেক ক্ষেত্রে তারা চড়া দাম পেয়ে তাদের জমি বিক্রি করে দিয়ে ভূমিহীন মজুর শ্রেণীতে পরিণত হলো। এই সময় জমি কিনে বিত্তশালী রাতারাতি জোতদারে রূপান্তরিত হয়ে গেলেন।
সম্পত্তি অর্জন ও পুঁজি সংগ্রহের নেশা মানুষের মজ্জাগত। প্রাথমিক যুগের এবং রাসূলুল্লাহর (স) এর জমানার নিকটবর্তী কালের লোক হয়েও তারা মানুষই ছিলেন এবং মানবের স্বভাবজাত দুর্বলতা তাদের মধ্যেও থাকা ছিল নিতান্তই স্বাভাবিক।
আল কোরান নির্দেশিত সমাজ ব্যবস্থায় আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি প্রতিটি প্রাণীর রিযিকদাতা। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা আল কোরান নির্দেশিত সমাজ ব্যবস্থা আল্লাহ দিয়েছেন। যারা বলে আল্লাহ নিত্যদারিদ্র্য দিয়ে পরীক্ষা করেন, তারা মানুষকে প্রতারণা করেন। সাময়িকভাবে পরীক্ষা আল্লাহ করে থাকেন সত্য, কিন্তু জীবনব্যাপী দারিদ্র্য আল্লাহর পরীক্ষা নয়, আল্লাহর গজব। আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহ প্রদত্ত সমাজ ব্যবস্থা হতে দূরে সরে যায় আল্লাহ তাদেরকে দারিদ্র্যে নিক্ষেপ করেন।
আমাদের কেউ কেউ ইসলামী অর্থনীতির ক্ষেত্রে এমন পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন, যা বাস্তবায়িত হলে এমন অর্থনৈতিক সংগঠন গড়ে উঠবে, যা হবে ধনতন্ত্রেরই খানিকটা মার্জিত রূপ। সে অর্থনৈতিক সংগঠনকে ইসলামী ধনতন্ত্র বলা যেতে পারে, শব্দটি ব্যবহার হোক বা না হোক। সম্ভবত উমাইয়া বংশের শাসনামলে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক চিন্তাধারা এবং কার্যাবলীই ঐরূপ চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করেছে।
ইসলামী সমাজবাদীদের অর্থনৈতিক চিন্তাধারা ইসলামী ধনতন্ত্রীদের অর্থনৈতিক চিন্তাধারা থেকে পৃথক। সমাজবাদীদের অর্থনৈতিক ভিত্তি আল কোরানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হাদিস এবং ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের নীতি। এ অর্থনীতির কয়েকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো :
বিশ্বের সমুদয় অর্থনৈতিক সম্পদের মালিকানা আল্লাহর, ব্যক্তিগত মালিকানার অস্বীকৃতি, ব্যক্তিগত আমানতদারীর স্বীকৃতি ব্যক্তিগত মালিকানা নয়, সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পদের সরকারী আমানতদারী এবং দখল, রাষ্ট্র কর্তৃক সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক চাহিদার নিশ্চয়তা বিধান, সমগ্র জাতীয় সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব, রাষ্ট্র কর্তৃক সম্পদের এলোকেশন বা বরাদ্দ, বাধ্যতামূলক বিনিয়োগনীতি, সমগ্র অর্থনৈতিক সম্পদের পূর্ণ বিনিয়োগ, জাতীয় সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার, সামঞ্জস্য ভোগনীতি, জাতীয় আয়ের সাময়িক (পিরিওডিক্যাল) পূর্ণ বণ্টন, বাধ্যতামূলক সামাজিক ইন্স্যুরেন্স নীতি, সম্পদ পুঁজি রহিতকরণ, সর্বপ্রকার সুদ রহিতকরণ, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকিং প্রথা প্রচলন, জাকাতের রাষ্ট্রীয় আদায়করণ, জমিতে প্রকৃত চাষীদের অধিকারের স্বীকৃতি, জমিতে অনুপস্থিত মালিকানা নিষিদ্ধ, অচাষী মালিকানা রহিতকরণ, বর্গাচাষ রহিতকরণ, বিনা ক্ষতিপূরণে অনাবাদী জমি রাষ্ট্রীয়করণ, বিনা ক্ষতিপূরণে অপূর্ণ ব্যবহৃত জমি রাষ্ট্রীয়করণ, বিনা ক্ষতিপূরণে অপূর্ণ ব্যবহৃত শিল্পকারখানা জাতীয়করণ, আন্তঃআঞ্চলিক, আন্তঃব্যক্তিক সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক জুলুমের বিলুপ্তি।
অর্থনীতির উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কি ইসলামী ধনতন্ত্রী অর্থনৈতিক কাঠামোতে খুঁজে পাওয়া যাবে? জবাব অবশ্যই সুদৃঢ়, নেতিবাচক। ইসলামী ধনতন্ত্রী আদর্শবাদে বিশেষ সুবিধাবাদী শ্রেণীর জন্মের সহায়ক হবে।
ধনতান্ত্রিক ভাবগুলোকে তার ইসলামী পোশাকে বিভূষিত করে ইসলামী অর্থনীতি বা ইসলামের অর্থনৈতিক পদ্ধতি নামে অবহিত করে থাকেন। যারা ইসলামী ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক চিন্তাধারায় বিশ্বাস করেন না তাদের ইসলামের পদ্ধতি প্রভৃতি শব্দ সমষ্টির পরিবর্তে অন্য শব্দ ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ আজকাল ইসলামী অর্থনীতি বলতে লোকে বিশেষ করে প্রতিক্রিয়াশীলদের কল্পিত ইসলামী ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি বুঝে থাকেন। ব্যক্তিমালিকানা সীমা নির্ধারণ না রেখে যে সব প-িত ইসলামের মধ্যমপন্থা বলে দাবি করেন, বাস্তবে তা পুঁজিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া আর কিছুই না। বাস্তব সত্য এই যে, পৃথিবীতে আল্লাহ এত বেশি সম্পদ দেননি, যা সকলের প্রয়োজন মেটানোর পরে উদ্বৃত্ত থাকবে। বণ্টনের হেরফের হলে একদিকে প্রতিবেশী অভুক্ত থাকবেন, অপরদিকে সম্পদের পাহাড় জমবে। সবল দুর্বলের সম্পত্তি লুট করবে।
ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ করার কারণ হচ্ছে, যে সম্পদ দৈহিক অথবা মানসিক উভয় শ্রম বহির্ভূত পন্থায় অর্জিত, তা ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ। ইসলামের প্রাথমিক দিকে যাদের কাছে অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ ছিল, সেগুলো বিত্তহীনদের কাছে বিলিয়ে দেয়ার তাগিদ ছিল এই ব্যবস্থায়। কিন্তু অধুনা জামায়াতীরা (১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত) ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সুদবিহীন ব্যাংকে সুদের বিকল্প হিসেবে ‘মুনাফা’ শ্রম বহির্ভূত পন্থায় উপার্জন ছাড়া অন্য কিছু নয় বিধায় সুদের অধিক সংরক্ষণ ‘মুনাফা’ ও ইসলামের দৃষ্টিতে নিঃসন্দেহে অবৈধ। উল্লেখ্য, একজন মুসলমান যদি সৎভাবে উপার্জন করে, তা হলে তার কাছে এমন সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার সুযোগ নেই, যা সে সুদ বা মুনাফায় খাটাতে পারে। ‘মুনাফা’ দেয়ার নামে যা হচ্ছে তা লুটেরা পুঁজির বৈধকরণ, ইসলামের নামে। মহানবী ব্যবসা করার কথা বলেছেন, কিন্তু এমন ব্যবসা যে ব্যবসায় কেউ কেবলমাত্র টাকা খাটিয়ে লাভ নেয়া যাবে না। যৌথ ব্যবসা করতে হলে উভয়কেই সমভাবে শ্রম দিতে হবে।
যে মানুষ দ্বারা মহানবী (স) বিশ্বে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তার প্রধান অন্তরায় শয়তান (রিপু) থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য ইসলাম আল্লাহকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নামাজ, জাকাত, রোজা এবং হজের প্রবর্তন। উদ্দেশ্য, সবাই আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা মনে করে, একে অপরের ভাই হিসেবে বিশ্বের সম্পদকে সমানভাগে ভোগ করবে। কিন্তু মহানবী (স) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের পরে সাম্যবাদের আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে শাসকগোষ্ঠী ধর্মকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে থাকে। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় যুগে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিনিধি নির্বাচনের পরিবর্তে নিজেরাই সন্তানদের উত্তরাধিকার করে। মহানবী একটি অসাম্প্রদায়িক মদিনার রাষ্ট্র (ইসলামী রাষ্ট্র নয়) শুরু করেছিলেন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ৫৪টি গোত্রের সঙ্গে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে। যার যার ধর্ম তার তার কাছে, এই নীতি।
স্বাধীন বাংলাদেশে ইসলামিক সমাজব্যবস্থা কায়েমের অঙ্গীকার নিয়ে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আছে। দেয়ালে তাদের সেøাগান, পুঁজিবাদ সে তো অভিশাপ, সমাজতন্ত্র, সে তো বন্দীশালা। কিন্তু তারা কি? এর জবাব যদি ইসলামী ব্যবস্থা হয়, তা বলে অর্থনৈতিক রূপরেখা ঘোষণা না দিয়ে যা করছেন, তা পুঁজিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া আর কি?
দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, ইসলামের অর্থনৈতিক রূপরেখা (যা সাধারণ মানুষের ওপর শোষণ বঞ্চনার অবসান ঘটাবে) মহানবীর শাসনকালে, হযরত ওমরের লাঙ্গল যার জমি তার নীতি, দুর্নীতির দায়ে সেনাপতি খালেদের সম্পত্তি বা ব্যক্তিমালিকানায় জমি ক্রয় নিষিদ্ধকরণÑ এ ধরনের ঘটনার বিবরণ আজকাল কখনও শোনা যায় না। অভিসম্পাত উচ্চারিত হয় না লুটেরা, মুনাফাখোর মজুদদারদের বিরুদ্ধে। সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যক্তিমালিকানার সীমা নির্ধারণ, জাতীয় ব্যবস্থাপনার যে রূপরেখা ইসলাম দিয়েছে সে সমন্ধে। বরং উল্টো প্রচার হওয়ায় সাধারণ মানুষ মনে করে যে, সেসব কায়েম হলে এদেশ থেকে ইসলাম চলে যাবে, মসজিদ থাকবে না। আসলে কি তাই? না, মোটেও নয়, বরং ইমান মজবুত হবে, মসজিদের ইমাম সরকার থেকে বেতন পাবে, মিথ্যা ফতোয়া দিয়ে দু’পয়সা কামানোর প্রয়োজন হবে না। তবে পীর ব্যবসা, মাজার পূজা অবশ্যই বন্ধ হবে। সম্ভব হবে পৃথিবীতে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলা এবং সেই সুবাদে তার নৈকট্য লাভ। কিন্তু ইসলামের অপব্যাখ্যা দেয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ধারণা শুধু নামাজ পড়া, রোজা রাখা, মিলাদ এবং পীরের মুরিদ হওয়াই মুসলমানের কাজ এবং তার ফলে বাংলাদেশে ৪ লাখ মসজিদ এবং জনসমষ্টি কম করে। অধিকাংশ লোক নামাজ আদায় সত্ত্বেও মজুদদার মুনাফাখোর ও মিথ্যার জয়জয়কার। পরের সম্পদ লুণ্ঠনকারীর জানাজায় যেতে প্রবল আগ্রহ। কিন্তু ফতোয়া দেয় যে, অনেক সৎ মানুষ যেমন ঘুষ খায় না কিন্তু ধর্মীয় ব্যাপারটা অতটা দৃশ্যমান নয় তাদের জানাজায় যাওয়া যাবে না। ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষ যদি জানতে পারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ রাখার অধিকার আল্লাহ কাউকে দেয়নি, তাহলে অবস্থা কি দাঁড়াবে?
এই সংযমের মাস রমজান অর্থাৎ মানুষের কুপ্রবৃত্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এক মাস সাধনা করা। কিন্তু আমরা কি দেখছিÑ খাদ্যে ভেজাল, ওজনে কম, বেশি মুনাফাÑ এটাই এ মাসে বড় সফলতা। তাদের ভাষায়, রমজান বরকতের মাস। অর্থাৎ নিজের ব্যবসায়িক লাভটাকে ধরা হয়েছে। আত্মশুদ্ধির কোন কিছুই আমরা অর্জন করছি না। কেননা জামায়াতীদের ভাষায়- মানুষ মার, বেহেস্তে যাও। এটা ইসলাম নয়। আর জামায়াতীরা আদৌ ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন আছে। কারণ ওরা নবী দৌহিত্র ইমাম হাসান (রা.), হোসেন (রা.)কে অযোগ্য এবং তাদের হত্যাকারী খুনী ইয়াজিদকে এক ভাল শাসক মনে করে। অথচ তারাই এখন ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ, হত্যা, সন্ত্রাস চালাচ্ছে সমানে। দেশের জনগণ কি চোখ বুঁজে দেখবেন?
লেখক : গবেষক
শীর্ষ সংবাদ: