অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রীসের অর্থনীতিতে মন্দাবস্থার সপ্তাহ না পেরোতেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চিনের পুঁজিবাজারে বড় ধস নেমেছে। শনিবারে একদিনে প্রধান মূল্যসূচক সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কম্পোজিট ইনডেক্স ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ কমে গেছে। গত এক মাসে সূচক কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
এমন দর পতনকে স্বাভাবিক মনে করছে না পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্যা চায়না সিকিউরিটিজ রেগুলেটরি কমিশন (সিএসআরসি)। সংস্থাটির মতে এর পেছনে বড় কোন কারসাজি থাকতে পারে। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামছে তারা। খবর ব্লুমবার্গ, বিবিসি, দ্যা ইনডিপেনডেন্ট, ইকোনমিক টাইমস ও রয়টার্সের।
অনেক বছর পর প্রবৃদ্ধির চীনের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের ধস একটি বড় আঘাত। আগামী ১৫ জুলাই চীন সরকার দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক অবস্থার রিপোর্ট প্রকাশ করবে। ধারণা করা হচ্ছে-এতে প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ৭ শতাংশের কম। সাম্প্রতিক এটিই সবচেয়ে নিম্ন বৃদ্ধি চীনের অর্থনীতিতে।
এদিকে বাজারের এমন টালমাটাল অবস্থায় শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ১১টি কোম্পানির নির্বাহীরা বাজার থেকে শেয়ার কেনার (ইুঁ-নধপশ) ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ইতোমধ্যে এত বেশি ভীতি ছড়িয়েছে যে, কোম্পানির শেয়ার বাই-ব্যাক করার ঘোষণা শেষ পর্যন্ত কাজে না-ও আসতে পারে। কারণ সরকারী কিছু কোম্পানি এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ শেয়ার বাইব্যাক করেছে।
কিন্তু তাতে পরিস্থিতির ন্যূনতম উন্নতি হয়নি।
এর আগে দ্রুত বর্ধনশীল ২৮টি কোম্পানি বাজারের স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির প্রতি আহ্বান জানায়।
গত মাসের গোড়ার দিকে চীনের শেয়ারবাজারে পতন শুরু হয়। এর আগে এক বছর তরতর করে বেড়েছে বাজারের সূচক। এক বছরে সূচক প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। টানা বৃদ্ধির কারণে প্রলোভনে পড়ে বিপুল সংখ্যক নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসে। এদের একটি অংশ ধার করা টাকাও বাজারে বিনিয়োগ করে।
বাজারের এই উর্ধগতিতে পতন অনিবার্য হয়ে উঠতে পারেÑএমন আশঙ্কায় লাগাম টেনে ধরার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কমিয়ে দেয়া হয় শেয়ার কেনার জন্য ঋণ-সুবিধা। আর সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পরের সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় নিম্নমুখী ধারা।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মনে করছে, ঋণ-সুবিধা কমানোর ওই সিদ্ধান্তের কারণে এমন তীব্র দরপতন হওয়ার কথা নয়। এর পেছনে অন্য কারণ থাকতে পারে। এখন তারা এই ‘কারণ’টিই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।