ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্য বাড়াতে বিএসটিআই ও বিআইএসের মধ্যে চুক্তি

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ৩ জুলাই ২০১৫

বাণিজ্য বাড়াতে বিএসটিআই ও বিআইএসের মধ্যে চুক্তি

অথনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ এবং ভারতের মান নিয়ন্ত্রণকারী (পণ্য ও সেবা) প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এবং ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) উভয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, যে কোন পক্ষ পণ্য বা সেবা আমদানি বা বিক্রির জন্য সংশ্লিষ্ট মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের সনদ ব্যবহার করতে পারবে। কোন পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের সনদ ভারতে এবং ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সনদ বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি হয়। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। ভারতে বাংলাদেশী পণ্যের প্রসার ঘটবে। এ চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে যে সকল কারিগরি বাধা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা দূর হবে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) ও ভারতের ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের (বিআইএস) সঙ্গে এই চুক্তি হয়েছে। চুক্তির আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একটু আলাপ-আলোচনা করলে ভাল হতো। তবে এ চুক্তির ফলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশী পণ্যের মান নিয়ে যে সমস্যা ছিল তা আর থাকবে না। এতে ভারতে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়বে।’ পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, ‘চুক্তিসহ সমঝোতা হওয়া সকল বিষয় দুই দেশ একসঙ্গে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই বিষয়গুলো এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।’ চুক্তির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, আইএসও বা আইইসি গাইড টু’র সর্বশেষ সংস্করণে উল্লিখিত সাধারণ শর্তাবলী এই চুক্তিরও সাধারণ শর্তাবলী হিসেবে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিএসটিআই এবং ভারতের ক্ষেত্রে বিআইএস নিজ নিজ দেশের জাতীয় মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক জাতীয় কমিটি (এনএসবি-ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডস বডি) হিসেবে বিবেচিত হবে। কোন পণ্য বা সেবার নির্দিষ্ট মান বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান যে নথিপত্র (ডকুমেন্ট) দেবে তা ওই পণ্য বা সেবার মান বিষয়ক লাইসেন্স হিসেবে বিবেচিত হবে। অনুচ্ছেদ ২-এর ১-এ বলা হয়েছে, এই চুক্তির আওতায় যে কোন পক্ষের আইনী নিষ্পত্তি সংশ্লিষ্ট পক্ষের অভ্যন্তরীণ আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি হবে। অনুচ্ছেদ ৩-এর ধাপ ১-এ বলা হয়েছে, চুক্তির আওতায় একপক্ষের অনুরোধে অন্যপক্ষ যে কোন পণ্য বা সেবার মান যাচাই এবং পরীক্ষা (ইন্সপেকশন) করতে পারবে। প্রয়োজনে পণ্য বা সেবার নমুনা সংগ্রহ এবং পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। একপক্ষ অনুরোধ করলে অন্যপক্ষ যে কোন পণ্য বা সেবার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাবে। যে কোন পক্ষ ইন্সপেকশন প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট পণ্য বা সেবার লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত বা নবায়ন বা স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে। অনুচ্ছেদ ৩-এর ধাপ ২-এ বলা হয়েছে, উভয়পক্ষই কোন পণ্য বা সেবার প্রাক-সনদ দিতে পারবে। তবে চূড়ান্তভাবে কোন পণ্য বা সেবার সনদ দেয়ার আগে ওই পণ্য বা সেবার মান যাচাইয়ের প্রতিবেদন এবং কারখানা যাচাইয়ের প্রতিবেদন অন্যপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। অনুচ্ছেদ ৩-এর ২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, পরিদর্শন এবং মান যাচাই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে উভয়পক্ষই যে কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। অনুচ্ছেদ ৮-এ বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে পণ্য বা সেবার মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক এই চুক্তি তিন বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। তিন বছর পর এই চুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হবে। তবে কোন পক্ষ লিখিতভাবে এই চুক্তি বাতিলের নোটিস দিলে নোটিস দেয়ার ছয় মাসের মধ্যে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যাবে।
×