ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ৩ জুলাই ২০১৫

১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঋণ পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে ১৮টি শিল্পগোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান। এসব আবেদনের বিপরীতে ঋণের পরিমাণ ১২ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আবেদন যথাযথ হলে এসব ঋণ ছয় থেকে ১২ বছরের জন্য পুনর্গঠন করে নতুন করে পরিশোধের সুযোগ দেয়া হবে। সবচেয়ে বেশি ঋণ রয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের। এ শিল্পগোষ্ঠীর মোট ঋণের পরিমাণ চার হাজার ৯৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে জনতা ব্যাংকে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ১০ লাখ, সোনালী ব্যাংকে এক হাজার ৭৫ কোটি ৭১ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৪৭৭ কোটি ৮৪ লাখ, এবি ব্যাংকে ৪৮৩ কোটি ৮৭ লাখ, ব্যাংক এশিয়ায় ৩০ কোটি ৯ লাখ, এক্সিম ব্যাংকে ২৩৩ কোটি ১৮ লাখ ও অগ্রণী ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৮০১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। যমুনা গ্রুপের মোট ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৪১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে জনতা ব্যাংকে ৫৯৮ কোটি সাত লাখ, ইউসিবিএলে ১৭৪ কোটি ১৯ লাখ, আইএফআইসিতে ১৪১ কোটি ৬৪ লাখ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে ১৬৪ কোটি ৮৭ লাখ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ১৭৫ কোটি ৪৫ লাখ, এসআইবিএলে ৭৩ কোটি ৬৪ লাখ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ৫১ কোটি ১১ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে গ্রুপটির। থার্মেক্স গ্রুপের ঋণের পরিমাণ ৬৬৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। পুরোটাই নেয়া হয়েছে জনতা ব্যাংকের কাছ থেকে। শিকদার গ্রুপের ঋণ আছে ৬৮৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। পুরো টাকাই এবি ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া। জনতা ব্যাংকে রতনপুর গ্রুপের ঋণ আছে ৪৩৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক ও এবি ব্যাংকে আবদুল মোনেম গ্রুপের ঋণ আছে ৪৯৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। কেয়া গ্রুপের পাঁচটি ব্যাংকে ৮৭৯ কোটি ৭ লাখ টাকা ঋণ আছে। এসএ গ্রুপের চার ব্যাংকে ঋণ আছে ৭১৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। বিআর স্পিনিংয়ের চার ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণ ৪৭২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এনেনটেক্স গ্রুপের ঋণ এক হাজার ৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এছাড়া ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলস, ইব্রাহিম কনসোর্টিয়াম, ইব্রাহিম কম্পোজিট টেক্সটাইল ও ইব্রাহিম ওপাল ট্রেডিংয়ের পক্ষে আবেদন এসেছে। নাসা গ্রুপের ২০০ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের আবেদনও পাওয়া গেছে। নীতিমালা অনুযায়ী ৫০০ কোটি টাকার বেশি অঙ্কের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। এরপরও ১০০ কোটি টাকার নিচে ঋণ আছে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। ক্যান-এ্যাম গার্মেন্টসের ১৪ কোটি ৫৫ লাখ, দেশবন্ধু সুগারমিলের ৫৬ কোটি ৭০ লাখ, গিভেন্সি গ্রুপের ৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকার ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে। সূত্র জানায়, ব্যাংক খাতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে এমন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের মেয়াদী ঋণ সর্বোচ্চ ১২ বছর ও চলমান ঋণ ছয় বছরের জন্য পুনর্গঠনের আবেদনের জন্য গত জানুয়ারিতে নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী মাত্র ১ ও ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে এসব ঋণ নিয়মিত করা যাবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক মন্দা, বিদ্যুত-গ্যাস সঙ্কট ও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় নিয়ে উদ্যোক্তার ক্ষতি পোষানোর জন্য বড় ঋণ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিপদে পড়া উদ্যোক্তাদের জন্য এ ধরনের সুবিধা রয়েছে। তবে প্রতারণা বা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কোনো গ্রহীতা ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ পাবে না। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অথবা অন্য কোন আইনে কোন সংস্থায় মামলা আছে, তারাও এ সুবিধা পাবে না।
×