ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রবিবার প্রথম টি২

এবার স্পিন জাদু দেখাতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২ জুলাই ২০১৫

এবার স্পিন জাদু দেখাতে চায় বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনুশীলনে কী অভিনব পদ্ধতিই না ব্যবহার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্লেসিস, ভিলিয়ার্সরা অনুশীলন করছেন, আর তাদের মাথার উপর ঘুরছে ‘ড্রোন ক্যামেরা’! এ ‘ড্রোন ক্যামেরা’ও কি এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে স্বস্তিতে থাকতে দেবে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের? বাংলাদেশ যে এখন অনেক ভাল দল। বড় দলও কি নয়? যে দল টানা তিন হোম সিরিজে জিম্বাবুুয়ে, পাকিস্তান ও ভারতের মতো দলকে হারাতে পারে, তারা তো বড় দলই। দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে বাংলাদেশে আসার বিমানে চড়ার আগেই ‘বাংলাদেশ বিপজ্জনক দল’ বলে দিয়েছেন প্রোটিয়া কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। আর টি২০ দলের অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস তো ‘বাংলাদেশ বড় দল হয়ে উঠছে’ বলেছেন। এমন যখন অবস্থা, তাতে বোঝাই যাচ্ছে, রিমোট দিয়ে যতই ‘ড্রোন ক্যামেরা’ পরিচালনা করুন না কেন প্রোটিয়াদের টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ প্রসন্ন এ্যাগ্রাম, এতে করে যতই ক্রিকেটারদের অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করা হোক না কেন, ভিলিয়ার্সরা কিন্তু বাংলাদেশকে এবার ভয় পাচ্ছেন। ভিলিয়ার্সদের এ ভয় আরও বেড়ে যাওয়ার কথা, তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যাওয়ার কথা, যখন শুনবেন এবার বাংলাদেশ দল পেস আক্রমণ মজবুত করে নয়, নামছে স্পিন আক্রমণ বাড়িয়ে, যে স্পিন জাদু দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকানদেরও বধ করতে চায় বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে সিরিজে চার পেসার খেলিয়ে কী চমকই না দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। তাতে সাফল্যও মিলেছে। মুস্তাফিজুর রহমান এমন গতির ঝড়ই তুলেছেন যে, ভারত ২-১ ব্যবধানে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কাছে সিরিজই হেরে গেছে। এবার গতি নয়, স্পিন জাদু দেখাতে চায় বাংলাদেশ। তাই তো বুধবার যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার জন্য দুই টি২০’র ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে স্পিনারদের ছড়াছড়ি। আরাফাত সানি স্পেশালিস্ট স্পিনার। আছেন সাকিব আল হাসান। দলে নির্ভরযোগ্য হয়ে ওঠা অফস্পিনার নাসির হোসেনও আছেন। জুবায়ের হোসেনও স্পেশালিস্ট লেগ স্পিনার। আবার দলে সুযোগ পেয়েছেন স্পিনার সোহাগ গাজীও। হিসাব করে দেখলে পাঁচ স্পিনার দলে আছে। ভারতের বিপক্ষে একগাদা পেসার নামিয়ে দিয়ে ধোনি, কোহলিদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার স্পিনারদের পালা ভিলিয়ার্স, প্লেসিসদের কাঁপিয়ে তোলার। দক্ষিণ আফ্রিকা স্পিনে দুর্বল বলেই স্পিনশক্তি বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে। সেই স্পিনে যে দক্ষিণ আফ্রিকানদেরও ভয় আছে তা প্রোটিয়া অধিনায়ক প্লেসিসের কথাতেই পরিষ্কার। তবে এখনও কিন্তু একটি বিষয় দেখা যাচ্ছে। প্রতিবারই সিরিজের আগে যে প্রথম সংবাদ সম্মেলন হয় তাতে সিরিজ জয়ের কথা উচ্চৈঃস্বরেই বলে দেয় প্রতিপক্ষরা। এবার দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডু প্লেসিস কিন্তু তা বলতে পারছেন না। রবিবার প্রথম টি২০ দিয়ে দুই টি২০, তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলতে নামার আগে বুধবার প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে।’ তাতেই বোঝা যাচ্ছে, জিম্বাবুয়েকে ৫-০ তে হারানোর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা; এরপর পাকিস্তানকেও ‘বাংলাওয়াশ’ করে ভারতকে ২-১ ব্যবধানে সিরিজে হারানো বাংলাদেশকে নিয়ে কতটা ভীত প্রোটিয়ারা! দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়কই বললেন, ‘বিশ্বকাপ থেকেই তারা ভাল খেলে আসছে। আমার বিশ্বাস, অচিরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে একটি বড় দল হিসেবে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশকে এখন আর ছোট দল বলার সুযোগ নেই। তারা ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। উন্নতির এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা দল হতে তাদের খুব বেশি সময় লাগবে না। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে। ভারতকে হারিয়েছে। সুতরাং বিমানে ওঠার আগে বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক হোমওয়ার্ক করতে হয়েছে আমাদের।’ সঙ্গে প্লেসিস যোগ করেন, ‘বাংলাদেশের এই দলটিতে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভা আছে। আসলে আমরা নির্দিষ্ট কাউকে লক্ষ্য করে নয়, পুরো দলটা নিয়েই কাজ করছি। কারণ, এই দলের যে কোন একজনই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এখানকার কন্ডিশনই হচ্ছে আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই কন্ডিশনের সঙ্গেই আমরা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।’
×