ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি সানচেজ, ভিদালরা, প্রথমবার শিরোপা জেতার প্রত্যয় স্বাগতিক ফুটবলারদের, চিলি ২-১ পেরু

২৮ বছর পর কোপার ফাইনালে চিলি

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১ জুলাই ২০১৫

২৮ বছর পর কোপার ফাইনালে চিলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বপ্নপূরণের আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেছে চিলি। কোপা আমেরিকা ফুটবলের ফাইনালে পাড়ি জমিয়েছে চলমান আসরের স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোরে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে প্রতিবেশী পেরুকে ২-১ গোলে পরাজিত করে চিলি। বিজয়ী দলের হয়ে দুটি গোলই করে নায়ক বনে যান এডুয়ার্ডো ভারগাস। এই জয়ে ২৮ বছর অর্থাৎ ১৯৮৭ সালের পর কোপার ফাইনালের টিকেট পেয়েছে চিলি। এখন লক্ষ্য টুর্নামেন্টের ৯৯ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়। স্বাগতিক ফুটবলাররা প্রথমবারের মতো ট্রফি ছুঁয়ে দেখার স্বপ্নে বিভোর। এ লক্ষ্যে রাজধানী সান্টিয়াগোতে ৪ জুলাই ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামবে চিলি। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দ্বিতীয় সেমিতে আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ের মধ্যকার বিজয়ী দল। দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের আসরে এখন পর্যন্ত শিরোপার স্বাদ পায়নি চিলি। এবার নিজেদের মাটিতে আয়োজিত আসরে সেই আক্ষেপ ঘোচানোর জন্য মরিয়া হয়ে খেলছেন চিলিয়ান ফুটবলাররা। লক্ষ্য পূরণ থেকে এখন মাত্র এক জয় দূরে জর্জ সামপাওলির দল। শুরু থেকেই ম্যাচে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে। প্রতিবেশী দুই দেশের লড়াইটা উপভোগ্য হয়ে উঠে। কিন্তু মাত্র ২১ মিনিটের মধ্যেই পেরু পরিণত হয় ১০ জনের দলে। দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় পেরুর ডিফেন্ডার কার্লোস জামব্রানোকে। ১০ জনের পেরুর বিপক্ষে এরপর বেশ চড়াও হয়েই খেলে চিলি। পুরো ম্যাচে তাদের দখলে ছিল ৭২ শতাংশ বল। এতেই বোঝা যায় কতটা মরিয়া ছিলেন সানচেজ, ভিদালরা। দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পরও লড়াইয়ের চেষ্টা করে পেরু। কিন্তু স্বাগতিকদের সাঁড়াশি আক্রমণের কাছে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকারই করতে হয়েছে কার্লোস লোবাটনের দলকে। ৪২ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায় চিলি। গোল করেন ভারগাস। তবে তার গোল নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। পোস্টের খুব কাছ থেকে তিনি যে গোলটি করেন, তা লাইনসম্যানের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। অথচ টিভি রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, ভারগাস পুরোপুরি অফসাইডে দাঁড়িয়েই গোল করেন। এর আগে আলেক্সিস সানচেজের ক্রস পেরুর পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরে আসা বল পেয়েই তা জালে জড়ান ভারগাস। ম্যাচের ৬১ মিনিটে স্বাগতিক দর্শকদের হতভম্ব করে ম্যাচে সমতা ফেরায় পেরু। গোলটি অবশ্য আসে চিলির গারি মেডেলের পা থেকে। ডি বক্সে বল ক্লিয়ার করতে যেয়ে নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন তিনি। আত্মঘাতী গোলে সমতা ফিরিয়ে চনমনে হয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল পেরু। কিন্তু দর্শকদের বেশিক্ষণ অস্বস্তিতে রাখেননি স্বাগতিক ফুটবলাররা। তিন মিনিট পরই (৬৪ মিনিট) চিলিকে ২-১ গোলে এগিয়ে নেন সেই ভারগাস। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে থেকে দূরপাল্লার শটে দুর্দান্ত গোল করেন তিনি। ভারগাসের এই গোল এবারের কোপা আমেরিকার অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দুর্ভাগ্য ভারগাসের, হ্যাটট্রিক পাননি তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তার করা গোলটি বাতিল না হলে হ্যাটট্রিকও হয়ে যেত। এরপরও এখন পর্যন্ত চার গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনিই। চিলি এগিয়ে যাওয়ার পর ‘ক্ল্যাসিকো ডেল প্যাসিফিকো’ উত্তাপ ছড়ালেও তা ম্যাচের স্কোরলাইনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। নিজেদের ঘর ঠিকঠাক সামলেই ঘরের দর্শকদের আনন্দে ভাসিয়ে চিলি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। এবারের আগ পর্যন্ত কোপায় চারবার ফাইনাল খেলেছে চিলি। শেষবার খেলেছিল ১৯৮৭ সালে। সেবার উরুগুয়ের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। আগের ফাইনালগুলোতেও হারের জ্বালায় জ্বলতে হয়েছে। এবার ঘরের মাঠে এসেছে অধরা ট্রফি জয়ের সুযোগ। ফাইনালে পাড়ি জমানোর পর চিলিয়ানদের চোখেমুখে এখন সেই স্বপ্ন। ম্যাচ শেষে কোচ সামপাওলি বলেছেন, এখানে (কোপা) আমাদের সাফল্য নেই। এবার শুরু থেকেই ফুটবলাররা শিরোপা জয়ের জন্য খেলছে। ফাইনালে ওঠার পর সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যেই ফাইনালে খেলব।
×