ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের চেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ॥ মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৯ জুন ২০১৫

ভারতের চেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ॥ মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উপমহাদেশের সবচেয়ে শক্তিধর দল ভারত। তাছাড়া বর্তমানে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে আছে তারা। সেই ক্রিকেট পরাশক্তিকে ঘরের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। এবার আরেকটি পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। আগামী মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। সফরে দুটি করে টি২০ ও টেস্ট এবং তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে প্রোটিয়ারা। র‌্যাঙ্কিংয়ে চার নম্বরে বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এরপরও তাদের ভারতের চেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এর কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং এ তিন বিভাগেই সামঞ্জস্যপূর্ণ শক্তি আছে দক্ষিণ আফ্রিকার। শক্তিশালী ভারতকে ঘরের মাটিতে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় টানা দুই ম্যাচ জিতে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কাছে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কায় পড়ে ভারতীয় দল। তবে শেষ পর্যন্ত সেটা ঠেকিয়ে দিয়েছে তারা। শেষ ম্যাচ জিতেছে। কিন্তু এই প্রথম কোন দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ভারতকে তথা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা কোন দলকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে দলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। সেই সঙ্গে দেশের ক্রিকেটপ্রেমী, ভক্ত, সমর্থকদের চাওয়াটাও বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন অনেকে। সেই স্বপ্ন থেকে এমনকি দূরে নয় জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও। কিন্তু অধিনায়ক মাশরাফি একেবারেই বাস্তববাদী। তিনি অনুধাবন করছেন ভারতের চেয়ে অনেক কঠিন প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের জন্য প্রোটিয়া শিবিরকে মোকাবেলা করাটা অনেক কঠিন হবে। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘ভারতের চেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা অনেক ভারসাম্যপূর্ণ দল। ভারতের ব্যাটিং অনেক শক্তিশালী, বোলিং ততটা নয়। সিরিজেই আগেই আমি বলেছিলাম, আমাদের বোলাররা ভারতের ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখতে পারলে আমরা সিরিজ জিতব। সেটাই হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে হলে সব বিভাগেই ভাল করতে হবে। কারণ ওদের কোন দুর্বলতা নেই।’ টানা জয়ের মধ্যেই আছে বাংলাদেশ। ১০ ম্যাচ পর ঘরের মাটিতে প্রথম পরাজয় দেখেছে ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে। জিম্বাবুইয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পর শক্তিশালী পাকিস্তানকেও বাংলাওয়াশের লজ্জায় ডুবিয়েছে টাইগাররা। এ কারণে দলের ক্রিকেটাররা এখন বেশ ফুরফুরে ও খোশ মেজাজেই আছেন। কিন্তু আত্মতুষ্টি বড় ভয়ঙ্কর বিষয়। অধিনায়ক মাশরাফি দলের সতীর্থদের আনন্দ উদযাপন কিছুটা কমিয়ে করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন এখনই সবার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য মনোনিবেশ করা উচিত। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এখন থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। কিভাবে তাদের মোকাবেলা করব সব ক্রিকেটারকে সে বিষয়ে নিজস্ব একটা চিন্তা ও পরিকল্পনা নিতে হবে।’ ভারতের চেয়ে নিঃসন্দেহে প্রোটিয়াদের বোলিং বিভাগ দারুণ শক্তিশালী। এছাড়া ব্যাটিংয়েও কোনভাবে পিছিয়ে নেই তারা। বর্তমান সময়ে বিশ্ব কাঁপানো ব্যাটিং লাইনআপ রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘কুইন্টন ডি কক, হাশিম আমলা, ফাফ ডু প্লেসিস, এবি ডি ভিলিয়ার্স, জেপি ডুমিনি, ডেভিড মিলার, রিলি রুশো এরা সবাই ম্যাচ জয়ী ক্রিকেটার। ভিলিয়ার্স তো একাই যথেষ্ট যে কোন দলকে ধসিয়ে দেয়ার জন্য। ভারত ২৭০ রান করলে আমরা জেতার আশা করতে পারি। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৭০ রান তাড়া করে জেতা অনেক কঠিন হবে। ওয়ানডেতে স্টেইন খেলবে না, তারপরও পেস আক্রমণ অনেক শক্তিশালী। স্পিনে এখন ইমরান তাহির আছে।’ এ কারণে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের দলের কাছ থেকে খুব বেশি প্রত্যাশা না করার আহ্বান জানিয়েছেন মাশরাফি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ মনে করছে আমরা বিশ্ব জয় করেছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এত বেশি টানা জয়ের পরও আমরা ওয়ানডেতে সাত নম্বর দল। অপরদিকে, ভারত ঠিকই দুই নম্বরে আছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে তারা নিয়মিত জিতেছে। আমরা যদি ভাল হতে চাই জয়ের ধারাবাহিকতা আমাদেরও রাখতে হবে। আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব। কিন্তু সেটা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। তাই হার জিত সবকিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।’
×