ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চলচ্চিত্রের সঙ্কট কেটে যাচ্ছে -নাদের চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৮ জুন ২০১৫

চলচ্চিত্রের সঙ্কট কেটে যাচ্ছে -নাদের চৌধুরী

নাট্যনির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী নাদের চৌধুরী। দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে দীর্ঘ সময় ব্যাপৃত রেখে অভিনয় অঙ্গনকে আলোকিত করে রেখেছেন। নতুন করে চলচ্চিত্র নির্মাতার খাতায় তাঁর যুক্ত হলো আর একটি পরিচয়। প্রথমবারের মতো নির্মাণ করলেন ‘লালচর’ নামের চলচ্চিত্র। আসছে কোরবানী ঈদে মুক্তি পাবে দেশীয় সংস্কৃতির লালিত্য নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি। সরকারী অনুদানে নির্মিত এ চলচ্চিত্রটির সহ-প্রযোজক ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। এ সম্পর্কে কথা হয় গুণী এ শিল্পীর সঙ্গে। প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেন কেমন লাগছে? নাদের চৌধুরী: যখন চলচ্চিত্রটির নির্মাণ শুরু করি, প্রচ- উত্তেজনা ছিল। ভয় ছিল তাঁর চেয়েও বেশি। মনে হচ্ছিল, সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছি। ভয়টা কেটে গেছে। নতুন এক অনুভব কাজ করছে মনের ভেতর। কোন এক সময়ে মনে হয়েছে ফিল্ম করছি। আমি সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি আমার টিমের। তারা কখনও হতাশা বা অনীহা প্রকাশ করেনি এবং সব সময় আমাকেই সাপোর্ট দিয়েছে। আমি সিডিউল ঠিক রেখে চলচ্চিত্রটি শেষ করতে পেরেছি শুধুমাত্র এদের কারণে। যেহেতু এটা আমার প্রথম চলচ্চিত্র, তাই নির্মাণে কোন কার্পন্যতা করিনি। চলচ্চিত্রটির গল্প কেমন? নাদের চৌধুরী: ইমদাদুল হক মিলনের ‘নদী’ উপাখ্যান অবলম্বনে ‘লালচর’ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। এটি নদীভাঙ্গা মানুষের গল্প। এরমধ্যে রয়েছে এক তরুণ-তরুণী জুটি। যাদের মধ্যে ঘর বাঁধার স্বপ্ন আছে। কোন এক সময়ে এরা ছিল গৃহস্থের ঘরের সন্তান। নদী ভাঙ্গনের কারণে এখন মাছ ধরেই চলে এদের জীবন-জীবিকা। প্রকৃতপক্ষে এরা কিন্তু জেলে সম্প্রদায়ের নয়। নিয়তি এদের এই পেশায় নামতে বাধ্য করেছে। নদীর কোন এক প্রান্তে চর জাগার এক আবছা সম্ভাবনা দেখে তাদের মনে নতুন স্বপ্নের আশা জেগে ওঠে। চর জেগে গেলে আবার তারা নতুন করে জীবনকে উপভোগ করবে, এই আশায় বুক বেঁধে আছে। কোন এক সময়ে তাদের প্রেমের সফল পরিণতি হবে, এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনী। চলচ্চিত্রটির গল্পের গাঁথুনি এমন যা দর্শকের মনকে নাড়া দেবে। চলচ্চিত্রটির মুখ্য ভূমিকায় কারা আছেন? নাদের চৌধুরী: চলচ্চিত্রটির নায়ক আনিসুর রহমান মিলন এবং নায়িকা মোহনা মোস্তফা মীম। এছাড়াও অভিনয় করছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, ঝুনা চৌধুরী, মাসুম আজিজ, সাবিহা আজিজ, রফিকুল্লাহ সেলিম, কাজী শিলাসহ আরও অনেকে। নাদের ডাকাত নামের একটি চরিত্রে আমি নিজেও অভিনয় করছি। ১৯৮৪ সালে উপন্যাসটি লেখা হয়। তখন ইমদাদুল হক মিলনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়নি। বিক্রমপুরে ওই সময় নাদু ডাকাত নামে এক ব্যক্তি ছিল। কাকতালীয়ভাবে আমার নামের সাথে মিলে গেছে বিধায় আমার নামই রয়ে গেছে চলচ্চিত্রটিতে। তালুকদারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম। আমি ও কামরুল আহসান মিলে চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য তৈরি করেছি। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ফরিদ আহমেদ। দেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান প্রেক্ষাপট কেমন? নাদের চৌধুরী: চলচ্চিত্র ডিজিটাল হচ্ছে, মেধাসম্পন্ন নতুন নতুন মুখ আসছে এটা আশার সঞ্চার করে। যদিও চলচ্চিত্রে এলোমেলো কিছু হচ্ছে, একপর্যায়ে স্থির জায়গায় আসবে। নারীরা চলচ্চিত্র নির্মাণে আসছে এটা কম কথা নয়। সম্প্রতি সরকারের তরফ থেকেও কিছু কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে চলচ্চিত্র উন্নয়নের জন্য। আমি মনে করি চলচ্চিত্রের সঙ্কট কেটে যাচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে গরিব হয়ে বড়লোকের সাথে প্রতিযোগিতায় নামা সম্ভব নয়। আমাদের অডিয়েন্স অনেক। দেশীয় সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে পূর্বেও বিখ্যাত বিখ্যাত চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে এবং এগুলো ব্যবসাসফলও হয়েছে। আমাদের উচিত বিদেশী ছবি নকল না করে দেশীয় সংস্কৃতি মাখানো ছবি তৈরি করা। যেটা দর্শক চায়। যে ছবি জীবনের কথা বলেন, মাটির কথা বলে সে ধরনের চলচ্চিত্র তৈরি করলে দর্শক কষ্ট করেও হলে ছবি দেখতে আসবে। চলচ্চিত্রের সোনালী দিন আবারও ফিরে আসবে আমি এ প্রত্যাশা করি। বর্তমানে আর কি কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন? নাদের চৌধুরী: অনেকগুলো কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। এরমধ্যে রয়েছে বিটিভির ‘অনেক কথা বলার ছিল’ নামে একটি সেলিব্রিটি শো। এছাড়া ঈদের কয়েকটি নাটকের কাজ করছি। -গৌতম পাণ্ডে
×