ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বপ্ন ৬ শতাংশের বৃত্ত ভাঙ্গার;###;১ কোটি ৩২ লাখ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা

শিল্প অর্থনীতিতে উত্তরণ ঘটানোই সপ্তম পাঁচসালা পরিকল্পনার লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৭ জুন ২০১৫

শিল্প অর্থনীতিতে উত্তরণ ঘটানোই সপ্তম পাঁচসালা  পরিকল্পনার লক্ষ্য

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে অর্থনীতির আরেক যাত্রা। দেশকে মধ্যম আয়ে নিয়ে যাওয়া, দারিদ্র্য কাক্সিক্ষত পর্যায়ে নামিয়ে আনা, ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বৃত্ত ভেঙ্গে আগামী ৫ বছরে ৮ শতাংশে উত্তরণ, কৃষি থেকে শিল্পনির্ভর অর্থনীতি, ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং মূল্যস্ফীতি হাতের মুঠোয় ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে বাস্তবায়নে যাচ্ছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য (২০১৬-২০ সাল পর্যন্ত) ব্যয়ের (বিনিয়োগ) লক্ষ্য চূড়ান্ত করা হয়েছে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যা এযাতকালের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ লক্ষ্য। অন্যদিকে চলতি মাসেই শেষ হতে যাওয়া ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গত পাঁচ বছরে ব্যয়ের যা লক্ষ্য ছিল তার চেয়ে আগামী পাঁচ বছরে ব্যয় হবে দিগুণেরও বেশি। ইতোমধ্যেই পরিকল্পনার খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে পরিকল্পনা কমিশন। দ্রুতই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে (এনইসি) এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হবে বলে জানা গেছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য এত বড় বিনিয়োগের লক্ষ্যকে উচ্চাভিলাষী বলছে বিশ্বব্যাংক। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট ব্যয় (সামগ্রিক বিনিয়োগ) যেটি ধরা হয়েছে তার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৩ লাখ ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, পরিকল্পনার বছর শেষে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এই ধরনের বিনিয়োগই প্রয়োজন হবে। কারণ আমরা মধ্য আয়ের দেশে যেতে যাচ্ছি। তিনি জানান, আগামী ৫ বছরে মোট যে ব্যয়ের (বিনিয়োগ) লক্ষ্য ধরা হয়েছে তার মধ্যে সরকারী ব্যয় ৭ লাখ ২৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা এবং বেসরকারী খাত থেকে ২৪ লাখ ৬৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আগামী পাঁচ বছরে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যয়ের লক্ষ্য বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এই লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী। কেননা গত অর্থবছরে দেশে মোট বিনিয়োগ হয়েছিল ৫৬ বিলিয়ন টাকা, তার আগের অর্থবছরে হয়েছিল ৪৯ বিলিয়ন টাকা। সেই তুলনায় পরিকল্পনার অর্থবছরগুলোতে ৪৫ শতাংশ বাড়িয়ে গড়ে ৮০ থেকে ৮১ বিলিয়ন টাকায় উন্নীত করা কঠিন হবে। যদিও এ কথা সত্য যে টার্গেট এবং প্রক্ষেপণ এক জিনিস নয়। তবে অভিলাষ ও বাস্তবতার মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। কিন্তু সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অভিলাষ পূরণে কি রকম উদ্যোগ আছে সেগুলো এখনও পুরোপুরি আমরা দেখতে পারিনি। এগুলো দেখার পরই চূড়ান্ত মন্তব্য করা সম্ভব হবে। উদ্যোগগুলো না জানলেও শুধু অতীত অভিজ্ঞতা দেখেই বলা যায় এ লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ সূত্র জানায়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরুর বছরে অর্থবছর ২০১৬ তে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে সাত শতাংশ, ২০১৭ অর্থবছরে সাত দশমিক দুই শতাংশ, ২০১৮ অর্থবছরে সাত দশমিক চার শতাংশ, ২০১৯ অর্থবছরে সাত দশমিক ছয় শতাংশ এবং শেষ অর্থবছর ২০ এ আট শতাংশ প্রবৃদ্ধির অর্জন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চূড়ান্ত হওয়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলো হচ্ছে, মূল্যস্ফীতি বর্তমানের (২০১৫ সাল) ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে অর্থবছর ১৬ এবং ১৭-তে ছয় দশমিক দুই শতাংশ, অর্থবছর ১৮-তে পাঁচ দশমিক আট, অর্থবছর ১৯-এ পাঁচ দশমিক সাত এবং ২০২০ সালে পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। মোট বিনিয়োগ বর্তমানে জিডিপির সাতাশ দশমিক ছয় শতাংশ থেকে অর্থবছর ১৬-তে বাড়িয়ে ত্রিশ দশমিক এক শতাংশ, অর্থবছর ১৭-তে একত্রিশ শতাংশ, অর্থবছর ১৮-এ একত্রিশ দশমিক আট শতাংশ, অর্থবছর ১৯-এ বত্রিশ দশমিক সাত শতাংশ এবং পরিকল্পনার বছর শেষে ২০২০ অর্থবছরে জিডিপির চৌত্রিশ দশমিক চার শতাংশে নিয়ে যাওয়া। জাতীয় সঞ্চয় বর্তমানে জিডিপির ঊনত্রিশ দশমিক এক শতাংশ থেকে অর্থবছর ১৬-তে ঊনত্রিশ দশমিক দশ শতাংশ, অর্থবছর ১৭-তে ঊনত্রিশ দশমিক সাত শতাংশ, অর্থবছর ১৮-এ ত্রিশ দশমিক দুই শতাংশ, অর্থবছর ১৯-এ ত্রিশ দশমিক সাত শতাংশ এবং ২০২০ সালে জিডিপির বত্রিশ দশমিক এক শতাংশে নিয়ে যাওয়া। ভোগ বর্তমানে জিডিপির সাতাত্তর দশমিক সত্তর শতাংশ থেকে অর্থবছর ১৬-তে সাতাত্তর দশমিক পঞ্চাশ শতাংশ, অর্থবছর ১৭-তে ছেয়াত্তর দশমিক সাত শতাংশ, অর্থবছর ১৮-এ পঁচাত্তর দশমিক নয় শতাংশ, অর্থবছর ১৯-এ পঁচাত্তর দশমিক এক শতাংশ এবং পাঁচ বছরে জিডিপির তেহাত্তর দশমিক পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনাটি তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ অথনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম জনকণ্ঠকে জানান, ৬টি বিষয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দিয়ে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গঠন, বিদ্যুত উন্নয়ন, জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ, কৃষিভিত্তিক শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ, আইসিটি-স্বান্থ্য-শিক্ষা সংক্রান্ত সেবা রফতানিতে সুনির্দিষ্ট নীতিকৌশল প্রণয়ন, সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগে গতিশীলতা আনয়ন এবং রফতানির গতিশীলতা আনতে পণ্যের বৈচিত্রায়ন। সূত্র জানায়, আগামী পাঁচ বছরে নতুন ১ কোটি ৩২ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশী ও বিদেশী মিলে এ পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে গত ৫ বছরে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে জিইডির বক্তব্য হচ্ছে, অর্থনৈতিক সূচকগুলো এখন ভাল। দেশের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে অগ্রসরমান যা অতীতের যে কোন প্রবৃদ্ধি প্রবণতা থেকে অনেক বেশি গতিময় এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি অতীতের সমস্ত অর্জনকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতিবছর দেশে ও বিদেশে মিলে গড়ে ২০ দশমিক ০১ লাখ নাগরিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এই ধারাবাহিতা অব্যাহত থাকলে এবং আগামী বছরগুলোতে কর্মসংস্থান আরও বাড়বে। এজন্য সবকিছু বিবেচনা করে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ১ কোটি ৩২ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। সূত্র জানায়, চলমান ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছিল মোট ১৩ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের ছিয়ানব্বই হাজার ৫২০ কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল ও বেসরকারী খাত থেকে ব্যয় করা লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। তাছাড়া মোট বিনিয়োগের সাতাত্তর শতাংশ আসার কথা ছিল ব্যক্তি খাত থেকে। আর সরকার অর্থায়ন তিন লাখ দশ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট বিনিয়োগের বাইশ দশমিক আশি শতাংশ। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। যা মোট বিনিয়োগের নব্বই দশমিক সত্তর শতাংশ। ২০১১ সাল থেকে বাস্তবায়ন শুরু হওয়া পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল, ২০১৫ সাল নাগাদ সরকারী ও বেসরকারী বিনিয়োগ জিডিপির বত্রিশ শতাংশে উন্নীত করা হবে। ওই বছর বিনিয়োগ ছিল জিডিপির চব্বিশ শতাংশ। কিন্তু মধ্যবর্তী মূল্যায়নে দেখা গেছে, চার বছর পর এখন সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগ হয়েছে জিডিপির আটাশ দশমিক উনসত্তর শতাংশ। অন্যদিকে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর কৌশলে পরিবর্তন আনা হয় ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১০-১৫)। এক্ষেত্রে কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে সরকার। পরিকল্পনায় ২০১৪-১৫ অর্থবছর নাগাদ ১ কোটি ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ জন্য কৃষি খাতের চেয়ে শিল্প খাত, বিশেষ করে উৎপাদন খাতকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বহুমুখীকরণের উদ্যোগও শুরু হয় এ পরিকল্পনায়। ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ পরিকল্পনা শেষে জিডিপিতে কৃষি খাতের অংশীদার বর্তমান বিশ শতাংশ থেকে ষোলো শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে। অন্যদিকে উৎপাদন খাতের অংশীদার বিশ শতাংশ থেকে বেড়ে বাইশ শতাংশ। এছাড়া শ্রমঘন, রফতানিমুখী শিল্প খাত এবং সংগঠিত সেবা খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়ও শিল্প নির্ভরতার দিয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনার বাস্তবায়নের শেষ বছরে দেখা যাবে দেশের অর্থনীতি শিল্পের দিকে গেছে। আগামী সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়, আগামী পাঁচ বছরে (২০১৬-২০) ৮ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য পূরণে অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নে নেয়া হয়েছে নানা পরিকল্পনা। বিশেষ করে শিল্প উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ থাকছে নতুন এই পরিকল্পনায়। শিল্প খাতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কৌশল নেয়া হচ্ছে। কেননা আগামী পাঁচ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে শিল্পের ওপরই জোর দিতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া নতুন কর্মসংস্থান করতে হলে শিল্প ও সেবা খাত নির্ভরতা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে কৃষি খাতেও যাতে প্রবৃদ্ধি বাড়ে সেই প্রচেষ্টাও থাকছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়। কৃষি ক্ষেত্রের উদ্যোগ বাস্তবায়নে আগামী পাঁচ বছরে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক অর্থবরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা হচ্ছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য ২০১৬ অর্থবছরে আঠারো দশমিক সাত বিলিয়ন টাকা, ২০১৭ অর্থবছরে চব্বিশ দশমিক ছয় বিলিয়ন টাকা, ২০১৮ অর্থবছরে ঊনত্রিশ দশমিক চার বিলিয়ন টাকা, ২০১৯ অর্থবছরে চৌত্রিশ দশমিক ছয় বিলিয়ন টাকা এবং ২০২০ অর্থবছরে বিনিয়োগ করতে হবে চল্লিশ দশমিক আট বিলিয়ন টাকা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে আগামী পাঁচ বছরের প্রস্তাবিত অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। যথাক্রমে ছয় দশমিক এক বিলিয়ন টাকা, সাত দশমিক আট বিলিয়ন টাকা, নয় দশমিক তিন বিলিয়ন টাকা, এগারো বিলিয়ন টাকা এবং বারো দশমিক নয় বিলিয়ন টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে আগামী পাঁচ বছরে প্রস্তাবিত অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে, ২০১৬ অর্থবছ থেকে ২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত যথাক্রমে ছয় দশমিক তিন বিলিয়ন টাকা, আট দশমিক এক বিলিয়ন টাকা, নয় দশমিক সাত বিলিয়ন টাকা, এগারো দশমিক চার বিলিয়ন টাকা এবং তেরো দশমিক পাঁচ বিলিয়ন টাকা। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে আগামী পাঁচ বছরে প্রস্তাবিত অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে, যথাক্রমে আটাশ দশমিক এক বিলিয়ন টাকা, ছত্রিশ দশমিক ছয় বিলিয়ন টাকা, তেতাল্লিশ দশমিক ৯ বিলিয়ন টাকা, একান্ন দশমিক ছয় বিলিয়ন টাকা এবং ষাট দশমিক আট বিলিয়ন টাকা। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অনুকূলে আগামী পাঁচ বছরে প্রস্তাবিত অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে, যথাক্রমে দশ বিলিয়ন টাকা, তেরো বিলিয়ন টাকা, পনেরো দশমিক পাঁচ বিলিয়ন টাকা, আঠারো দশমিক তিন বিলিয়ন টাকা এবং একুশ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন টাকা। সূত্র জানায়, আগামী পাঁচ বছরে মধ্য আয়ের দেশে যেতে কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো হলো, বিনিয়োগকারীদের দ্বারা চিহ্নিত সীমাবদ্ধতা দূরীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবশ সৃষ্টি করা, পাবলিক বিনিয়োগ ঘাটতি দূর করতে আধুনিকায়ন পরিকল্পনা তৈরি, বিদ্যুত ও জ্বালানির সঠিক মূল্য নির্ধারণ ও ভর্তুকির পরিমাণ যুক্তিযুক্তকরণ, সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব পুনর্গঠন ও গতিশীলতা আনয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ, পোশাক খাত থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অ-পোশাক রফতানি খাতের জন্য উদ্দীপক কাঠামোর উন্নতিকরণ, রফতানির সম্ভাবনাসহ কৃষি কৌশল পুনর্বিবেচনা করা, কৃষকদের ভাল প্রণোদনা প্রদানে মূল্য নীতি প্রণয়ন ও গ্রামীণ অবকাঠামোর ওপর বেশি জোর প্রদান করা, পশু ও মৎস্য ক্ষেত্রে মনোযোগ সৃষ্টি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে প্রমাণভিত্তিক নিরূপণ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের সাহায্যে সঠিক কৌশল নির্ধারণ করা এবং আইসিটি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত সেবা রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট বিধিগত এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করা ও এর সুনির্দিষ্ট সমাধানের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা।
×