ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ পাঁচ জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক পদে পরীক্ষা

প্রশ্ন ফাঁস রোধে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো শিক্ষক নিয়োগ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৭ জুন ২০১৫

প্রশ্ন ফাঁস রোধে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো শিক্ষক নিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রশ্ন ফাঁস রোধে প্রথমবারের মতো প্রযুক্তির ব্যবহার করে পাঁচ জেলায় অনুষ্ঠিত হবে সরকারী প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। দুপুর ২টা থেকে ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত নড়াইল, মেহেরপুর, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও ফেনী জেলায় এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডিজিটালাইজ হচ্ছে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি। এর অংশ হিসাবেই আজ প্রথম ধাপে পাঁচ জেলায় সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে এ পরীক্ষা। এত দিন বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষার কয়েক দিন আগেই তা বিতরণ করা হতো। এবার পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষার ঠিক আগ মুহূর্তে তা কেন্দ্রে পাঠানো হবে। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ করে পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ রায়। ইতোমধ্যে বৈধ প্রার্থীদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। ওয়েবসাইট থেকে প্রার্থীরা (যঃঃঢ়: //ফঢ়ব.ঃবষবঃধষশ.পড়স.নফ) প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রার্থীরা বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোন কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন ও ভ্যানেটি ব্যাগ, পার্স, ইলেকট্রনিক্স ঘড়ি বা যেকোন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সঙ্গে রাখতে পারবে না। নির্দেশ না মানলে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হবে। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশনাবলী এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য (িি.িফঢ়ব.মড়া.নফ) ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলার পরীক্ষা একই পদ্ধতিতে নেয়া হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এড়িয়ে নির্বিঘেœ এই পরীক্ষা সম্পন্ন করা গেলে অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষায় এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সন্তোষ কুমার অধিকারী জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করে প্রথমবারের মতো ৫ জেলায় পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। পাইলট প্রযুক্তির আওতায় এ পদ্ধতিতে পর্যায়ক্রমে বাকি জেলাগুলোতেও পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, যেসব জেলার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সাত হাজারের নিচে প্রথম পর্বে সেসব জেলার পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। ৫ জেলায় মোট ৩৩ হাজার পরীক্ষার্থী এবার লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবেন। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দেয়। এর আগের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার কারণে এবার পরীক্ষায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আগের নিয়োগ পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন মডারেশনের দায়িত্ব ছিল ময়মনসিংহে অবস্থিত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) ওপর। আর ছাপানোর দায়িত্বে ছিল বিজি প্রেস। এবারের ডিজিটালাইজ পরীক্ষা পদ্ধতিতে উল্লেখিত দুই প্রতিষ্ঠানের কোনই সম্পৃক্ততা থাকছে না। এবার প্রশ্ন প্রণয়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আলাদা দল গঠন করা হয়। এই দল আজ পরীক্ষার দিন সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে মন্ত্রণালয়ে বসে প্রশ্ন তৈরি করে দেবে। সেই প্রশ্ন অনলাইনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হবে জেলা প্রশাসকদের কাছে। জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিজ নিজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে একসঙ্গে প্রশ্ন ডাউনলোড করবেন। দ্রুতগতির একাধিক ফটোকপি মেশিনে প্রশ্নপত্র কপি করে প্যাকেটে পুরে নিয়ে যায়া হবে পরীক্ষাকেন্দ্রে। দুপুর ১২টার মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। জেলা পর্যায়ে প্রশ্ন ছাপানোর চার ঘণ্টার পুরো প্রক্রিয়া সিসি টিভিতে ধারণ করা হবে। এই প্রক্রিয়া তদারকির জন্য প্রতিটি জেলায় পাঠানো হবে মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তাকে। কর্মকর্তারা বলেছেন, যেহেতু একটি নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে তাই প্রাথমিকভাবে যেসব জেলায় প্রার্থী সংখ্যা কম সেই জেলাগুলোকে বেছে নেয়া হয়েছে। ডিজিটালি প্রশ্ন ছাপিয়ে সফলভাবে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া গেলে একই পদ্ধতিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টিও ভাবা হবে।
×