ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে বিদায় করে সেমিতে চিলি

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ২৬ জুন ২০১৫

চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে বিদায় করে সেমিতে চিলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে বিদায় করে চলমান কোপা আমেরিকা ফুটবলের সেমিফাইনালে পাড়ি জমিয়েছে স্বাগতিক চিলি। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার ভোরে অনুষ্ঠিত আসরের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে চিলি ১-০ গোলে পরাজিত করে নয়জনের উরুগুয়েকে। ম্যাচের ৮০ মিনিটে জয়সূচক গোল করেন মাউরিসিও ইসলা। ১৬ গজ দূর থেকে দারুণ শটে উরুগুয়ের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন জুভেন্টাসের এই ডিফেন্ডার। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন উরুগুয়ের তারকা ফরোয়ার্ড এডিনসন কাভানি। ৮৮ মিনিটে একই কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন লেফটব্যাক জর্জ ফুসিলে। যোগ করা সময় (৯৩ মিনিট) লালকার্ড দেখেন দলটির কোচ অস্কার তাবারেজও। ফলে বিদায়ের জ্বালার পাশাপাশি বহিষ্কারের জ্বালাতেও জ্বলতে হয়েছে উরুগুয়েকে। যেভাবেই হোক, জয় পাওয়া স্বাগতিক চিলির লক্ষ্য এখন শিরোপা। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তারা। বলিভিয়া ও পেরুর মধ্যে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ী দলের সঙ্গে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামবে চিলি। সান্টিয়াগোর এস্টাডিও ন্যাসিওনালে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে জেঁকে বসেছিল উস্কানি দেয়ার প্রতিযোগিতা! দু’দলের খেলোয়াড়েরাই প্রতিপক্ষকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই কাজটিতে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক চিলির ফুটবলাররাই। যে কারণে ম্যাচ শেষে বহিষ্কৃত উরুগুয়ের কোচ অস্কার বলেই দিয়েছেন, চিলির কৌশলই ছিল উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করা। উস্কানি দিয়েই নাকি চিলি উরুগুয়ের দুই খেলোয়াড়কে লালকার্ড খাইয়েছে। কাভানি ও ফুসিলে দুটি করে হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলে শেষদিকে নয়জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে। তবে এর ইসলোর গোলে জয় নিশ্চিত হয় স্বাগতিক চিলির। দু’দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধের কারণে ম্যাচের শেষের দিকে ফুসিলেকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখান ব্রাজিলিয়ান রেফারি সান্ড্রো মেইরা রিক্কি। বিরোধের এক পর্যায়ে উরুগুয়ের অভিজ্ঞ কোচ অস্কার তাবারেজও মাঠের ভেতের চলে আসেন। যে কারণে তাকেও লালকার্ড দেখান রেফারি। এর আগে কাভানিকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখানোর কারণে রেফারির উপর চটেছিলেন উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা। প্রথমার্ধে আর্টুরো ভিদালকে ফাউল করার কারণে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন কাভানি। এরপর চিলি ডিফেন্ডার গঞ্জালো জারার মুখে মারার কারণে দ্বিতীয়বার তাকে কার্ড দেখানো হলে মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন। ম্যাচটির আগে পারিবারিক কারণে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনর এই তারকা বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বাবা লুইস কাভানি সোমবার রাতে গাড়ি দুর্ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে উরুগুয়ের পুলিশের হাতে আটকের কারণে কাভানিকে চিলি থেকে দেশে ফিরে যেতে হয়েছিল। সেখান থেকে এসে মাঠে নামেন তিনি। কিন্তু মেজাজটা যে খিটমিটে ছিল সে প্রমাণ মিলেছে লালকার্ড দেখে দলকে ডোবানোর মধ্য দিয়ে। কাভানি মাঠ ছাড়ার পর থেকেই উরুগুয়ে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলে তারা ম্যাচটি পেনাল্টি শ্যূট আউটের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শেষ ১০ মিনিট চিলি নিজেদের মেলে ধরে। ৮০ মিনিটে প্লেমেকার জর্জ ভালডিভিয়ার পাস থেকে ইসলা উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্ডো মুসলেরাকে বোকা বানালে জয় নিশ্চিত হয় চিলির। আর স্বপ্নভঙ্গ হয় উরুগুয়ের। পিছিয়ে পড়ার পর যেন একেবারেই খেই হারিয়ে ফেলে আসরের সর্বোচ্চ ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। যার প্রমাণ শেলে ম্যাচের একেবারে শেষেরদিকে ফুসিলে চিলির তারকা স্ট্রাইকার এ্যালেক্সিস সানচেজকে ফাউল করলে। এ নিয়ে দু’দলের ফুটবলারদের মধ্যে বাগ্বিত-া শুরু হয়। উরুগুয়ের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের বিরোধের মুখে কয়েক মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর রেফারি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে লালকার্ড দেখান ফুসিলে ও কোচ তাবারেজকে। ম্যাচ শেষে উরুগুয়ের কোচ তাবারেজ বলেন, কাভানির লালকার্ডের ঘটনাটি আপনারা সবাই দেখেছেন। টেলিভিশন রিপ্লেতেও দেখা গেছে মূল অপরাধটা আসলে কার। গঞ্জালো জারাই প্রথম উস্কানি দিয়েছিল। কাভানি এ ক্ষেত্রে নিজের মেজাজটা স্রেফ হারিয়ে বসেছিল। তাদের (চিলি) লক্ষ্যই ছিল আমাদের ফুটবলারদের উস্কে দেয়া। এতে তারা সফল। এই বিষয়টি রীতিমতো লজ্জার। অন্যদিকে বিতর্কিত হলেও সেমিফাইনালে উঠে শিরোপার স্বপ্ন বুনছে চিলি। দলটির আর্জেন্টাইন কোচ জর্জ সামপাওলি বলেন, আমরা জয় পেয়েছি এটাই বড় কথা। এমন ম্যাচে উত্তেজনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখন আমাদের লক্ষ্য সেমিফাইনাল, এরপর শিরোপা।
×