ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে উঠবে আজ

রেলের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ২৫ জুন ২০১৫

রেলের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ রেলের পঞ্চিমাঞ্চলের (বগুড়া-রাজশাহী-খুলনা) লেভেল ক্রসিং উন্নয়নে ৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সরকার। এটি বাস্তবায়িত হলে হাইওয়ে লেভেল ক্রসিং গেটসমূহে সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন, রেল ও সড়ক উভয় ধরনের ট্রাফিকের নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করাসহ রেল লাইন ও সড়ক পথে যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনা রোধ করে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। অনুমোদন পেলে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নে কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান মন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের পিশ্চিমাঞ্চলে ৯৭৮টি অনুমোদিত এবং ২৭১টি অনুমোদনহীন লেভেল ক্রসিং রয়েছে। অনুমোদিত গেটগুলোর মধ্যে মাত্র ২২১টির গেটকিপার রয়েছে। রেলওয়ে এ্যাক্ট ১৮৯০ এবং রেলওয়ে ম্যানুয়েল অনুসারে অন্য ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক রেলপথ অতিক্রমকারী সড়কসমূহের জন্য লেভেল ক্রসিংগুলো সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের নিকট হতে প্রাপ্ত অর্থে ডিপোজিট ওয়ার্ক হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের কথা থাকলেও অদ্যাবধি তা করা সম্ভব হয়নি। ফলে এ সমস্ত লেভেল ক্রসিং যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারায় এবং প্রয়োজনীয় গেটকিপার না থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৭৩টি অনুমোদিত লেভেলক্রসিং দ্রুত মেরামত ও আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক গেটকিপার পদায়ন করা প্রয়োজন। তাছাড়া দিন দিন অনুমোদিত লেভেলক্রসিংসমূহে যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫৩টি অনুমোদনহীন লেভেল ক্রসিং অনুমোদিত গেটে রূপান্তর করার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এ সমস্ত গেট উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেই সাথে সড়ক দুঘর্টনা রোধ কল্পে হাইওয়ে লেভেল ক্রসিংগুলোতে সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন বা আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। এসব বিবেচনায় রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান জানান, রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি প্রকল্পটি উপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পিইসি সভায় যেসব সুপারিশ দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রকল্পের আওতায় আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে গেটকিপার নিয়োগে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস নির্ধারণ করতে হবে। নতুন রাস্তা বা সড়ক নির্মাণের সময় রেলপথ ক্রসিং করার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে হতে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে প্রত্রের মাধ্যমে অবহিত করবে। তিনি জানান, এসব প্রতিপালন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে প্রস্তাবিত প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ কাজ শেষ হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন ট্রেন চলাচল এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে ৮৫১ জন গেটকিপার নিয়োগ, চার হাজার ৯৭৬ দশমিক ৫০ বর্গ মিটার ঘুমটি ঘর নির্মাণ, লেভেল ক্রসিং গেট সংলগ্ন ৪৭ হাজার ৭৯৩ বর্গ মিটার রোড সারফেস মেরামত, ৩১২ সেট গেট ব্যারিয়ার স্থাপন, ৪১৯ টন চেক রেল, ১০ হাজার ৮৪৭টি বিয়ারিং প্লেট, ১৩ হাজার ৭৯৭টি চেক ব্লক, সাত হাজার ৯৭২টি চেক বোল্ট, ৫৩ হাজার ৮৪২টি ডগ স্পাইক, পাঁচ হাজার ৫০৮টি উঠেন সিøপার সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় সিগন্যালিং ওয়ার্ক সম্পাদন করা হবে।
×