ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইএবির সংবাদ সম্মেলন রফতানিতে বিদ্যমান উৎসে কর বহাল রাখার দাবি

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৯ জুন ২০১৫

ইএবির সংবাদ সম্মেলন রফতানিতে বিদ্যমান উৎসে কর বহাল রাখার দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রফতানিতে উৎসে কর না বাড়িয়ে বিদ্যমান করহার বহাল রাখাসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন রফতানিকারকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজিএমইএ ভবনে এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইএবি) বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। প্রসঙ্গত, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সকল রফতানির ওপর উৎসে কর ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাবের বিরোধিতাও করছে এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন। লিখিত বক্তব্যে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘রফতানির ওপর উৎসে কর শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করা হয়েছে। এই বৃদ্ধির হার ২৩৩ শতাংশ। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে রফতানি শিল্পের স্বাভাবিক বিকাশকে দারুণভাবে ব্যাহত করবে। অতএব রফতানিমুখী সব শিল্পে প্রস্তাবিত উৎসে আয়কর হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশে বহাল রাখার অনুরোধ করছি।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের রফতানির প্রায় ৮০ ভাগই তৈরি পোশাক। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে এ খাতে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা আগের বিগত কয়েক বছরের তুলনায় কম। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রতিযোগী পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ, ভারত ১১ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ১৩ শতাংশের বেশি। একই সঙ্গে গত বছরের জানুয়ারি-এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রফতানি মূল্য হ্রাস পেয়েছে প্রায় শতাংশ। ওই সময়ে পাকিস্তানের তৈরি পোশাকের রফতানি মূল্য বেড়েছে ১ দশমকি ৬২ শতাংশ, ভারতের ১ দশমিক ২৫ এবং ইন্দোনেশিয়ার ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রফতানি মূল্যহ্রাস ও প্রবৃদ্ধির হার কমে যাওয়ার পেছনে ওই সময়ের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, তাজরীন ও রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া ডলারের বিপরীতে ইউরোর ও রুবলের অবমূল্যায়নের রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মনে করেন ইএবি সভাপতি। তিনি বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, ইউটিলিটি, পরিবহন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও কারখানার কমপ্লায়েন্স প্রতিপালনসহ অন্যান্য খাতে খরচ বেড়েছে। তবে, পোশাকের মূল্য বাড়েনি। এসব কারণে উৎসে কর বাড়ানোর এটা সঠিক সময় নয় বলে তিনি মনে করছেন। বিজিএমএইএ’র সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেন, আমরা সরকারকে কর দিতে চাই। তবে, কর বৃদ্ধি করার এটা সঠিক সময় নয়। এফবিসিসিআই’র প্রথম সহ সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনও অর্থমন্ত্রীর কর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, কর বাড়ানোর আগে সরকারকে ‘পরিস্থিতি’ বিবেচনা করতে হবে। করের হার না বাড়িয়ে ব্যবসা বিকাশের সুযোগ দিলে আরও বেশি রাজস্ব আদায় হবে বলে মনে করেন তিনি। রফতানিকারক সমিতির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, রফতানিমুখী শিল্পের ১০ শতাংশ হ্রাসকৃত হারে কারোপের মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ওপর এক শতাংশ শুল্ক আরোপ প্রত্যহার করা, ২০০৮ সাল থেকে বকেয়া ভ্যাট মওকুফ করা এবং বন্ডেড ওয়্যার হাউজ তদারকির জন্য ‘শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট’ কে দেয়া অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রত্যাহার করা, না হয় এটা রফতানিকারকদের জন্য হয়রানি ও সময়ক্ষেপণের কারণ হবে। এছাড়া ইউরোর অবমূল্যায়নের কারণে ওই জোনে রফতানি কারকদের সুরক্ষা দিতে নতুন বাজারের ন্যায় বিশেষ প্রণোদনা দেয়া এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি তৈরি পোশাক শিল্পের সংস্কার ও স্থানান্তরে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘বিশেষ অর্থায়ন প্রকল্প’ নেয়ার দাবি করেন তিনি।
×