ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

বাগেরহাটের তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৬ জুন ২০১৫

বাগেরহাটের তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাটের তিন রাজাকার কসাই শেখ সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ মাস্টার, আব্দুল লতিফ তালুকদার ও খান আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। আজ আবারও যুক্তিতর্কের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে শরিয়তপুরের রাজাকার সোলায়মান মোল্লাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সোমাবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। বাগেরহাটের তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন ও প্রসিকিউটর মোসফেক কবির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। সোমবার ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৪টি অভিযোগের ওপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারওয়ার হোসেন এবং সিরাজ মাস্টারের পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী আবুল হাসান ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের করা সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার যুক্তিতর্কের দিন পিছিয়ে সোমবার পুনর্র্নিধারণ করা হয়। ৬, ৭ ও ২১ এপ্রিল আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন পাঁচজন সাফাই সাক্ষী। তারা হচ্ছেন মোঃ আমজাদ শেখ, সরদার আব্দুল মান্নান, আব্দুর রশিদ মল্লিক,ইউসুফ আলী ডিহিদার এবং মোঃ ফেরদৌস খান। অন্যদিকে গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত সিরাজ-লতিফ-আকরামের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হেলাল উদ্দিনসহ ৩২ জন সাক্ষী। গত বছরের ২ ডিসেম্বর তিন আসামির বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সাইয়েদুল হক সুমন। গত বছরের ৫ নবেম্বর রাজাকার কমান্ডার ‘বাগেরহাটের কসাই’ বলে কুখ্যাত সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার এবং তার দুই সহযোগী আব্দুল লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেন খানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মোট সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তাদের মধ্যে সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে পাঁচটি এবং আব্দুল লতিফ ও খান আকরামের বিরুদ্ধে ৩টি করে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাগেরহাটের শাঁখারিকাঠি বাজার, রণজিতপুর, ডাকরা ও কান্দাপাড়া গণহত্যাসহ ৮ শতাধিক মানুষকে হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন এবং শতাধিক বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ। সোলায়মান মোল্লা কারাগারে ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শরিয়তপুরের রাজাকার সোলায়মান মোল্লাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশের পরপরই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়ে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। উল্লেখ্য, রবিবার শরিয়তপুর গোয়েন্দা পুলিশ সোলায়মান মোল্লাকে গ্রেফতার করে। এ প্রসঙ্গে প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা জনকণ্ঠকে বলেন, সোলায়মান মোল্লাসহ আরও দুইজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে সোলায়মান মোল্লা ও ইদ্রিস আলী সরদারের বিরুদ্ধে হত্যা গণহত্যাসহ তিনটি অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত অপর আসামি ইদ্রিস আলী সরদারকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে পুলিশ তার গ্রেফতারের জন্য জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ।
×