ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মজিবর রহমান

শেখ জামাল ধানমণ্ডির কোচের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সালাউদ্দিন!

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৪ জুন ২০১৫

শেখ জামাল ধানমণ্ডির কোচের প্রস্তাব পেয়েছিলেন সালাউদ্দিন!

কৃতী হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড সনি নর্দেকে নিয়ে দুই বাংলার টানাটানি। যদিও লড়াইটা রূপ নিয়েছে ত্রিমুখী। উপমহাদেশে সনি নর্দের নামডাক বা আলোচনা মূলত শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়ানোর পর। ভারতের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আইএফএ শিল্ড খেলতে কলকাতা যাওয়ার পরই শীর্ষ ভারতীয় ক্লাবগুলোর নজরে পড়েন এই ফুটবলার তার পায়ে-বলের জাদুমাখা নৈপুণ্য দেখিয়ে। শেষতক অর্থের জোরে তাকে কিনে নেয় ভারতের শক্তিশালী ফুটবল দল মোহনবাগান। বর্তমানে তিনি শোভিত করে রেখেছেন বাগান। তবে তাকে পেতে মরিয়া কলকাতার অপর জায়ান্ট ইস্ট বেঙ্গল। আবার পিছু নিয়েছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবও। ঢাকার এই শীর্ষ ক্লাব ফের দলে নিতে তৎপর সনি নর্দেকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের দ্বিতীয় পর্বের খেলা শুরু হচ্ছে অচিরেই। তার আগে সনিকে যোগ করে শিরোপা লড়াইয়ে নিজেদের কোমর আরও আঁটোসাঁটো করতেই এই উদ্যোগ বলে জানালেন দেশবরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক, শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব প্রভাবশালী কর্মকর্তা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, সনি নর্দেকে তারা ছাড়ছে না । এক বছরের টাকা ইতোমধ্যে অগ্রিম দিয়ে পরবর্তী মৌসুমের জন্য চুক্তিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কারণ একটাই, প্রবল পতিপক্ষ ইস্ট বেঙ্গল যাতে হাত বাড়াতে না পারে সনির দিকে। পাশাপাশি বাংলাদেশের শেখ জামাল ধানম-িও। তবে মনজুর কাদেরের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুত্র ধরে ফোনে বরুণ বলছিলেন, শেখ জামাল চাইলে লোনে (অতিথি) সনি নর্দেকে ছাড়লে ছাড়তেও পারে মোহনবাগান। বিষয়টা নিয়ে তিনি ক্লাবের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন মনজুর কাদেরকে। প্রসঙ্গত, জাতীয় দলের হয়ে খেলতে সনি বর্তমানে হাইতি অবস্থান করছেন। জুলাইয়ে তিনি কলকাতা ফিরবেন বলে মনজুর কাদেরকে জানিয়েছেন বুবন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কী সনি নর্দেকে আবার দেখা যাবে শেখ জামালের জার্সিতে? বিষয়টা সম্পূর্ণ মোহনবাগান কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারে। তারা ছাড় দিলেই খেলাতে পারবে শেখ জামাল। এদিকে শেখ জামাল ধানম-িতে খেলতে সনি নিজেই নাকি আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ক্লাব সভাপতি। সনি খেলতে চেয়েছিলেন ভারতের ঘরোয়া ফুটবল মাঠে গড়ানোর আগে চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে। কিন্তু মোহনবাগান আগাম অর্থে দিয়ে তাকে বোতলবন্দী করে রাখায় এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। এ বিষয়ে মনজুর কাদের গতকাল জানালেন, সনি আসলে কথা দিয়ে কথা রাখতে পারছে না বিধায় আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। সম্ভবত লজ্জা পেয়েছে বলেই এই লুকোচরি। ভারতের একটি ক্লাব টুর্নামেন্ট খেলার আমন্ত্রণ পেয়েছে ঢাকার জায়ান্ট শেখ জামাল ধানমি-। তবে টুর্নামেন্টের নাম প্রকাশ করতে চাইলেন না এই মুহূর্তে মনজুর কাদের। কিন্তু খেলার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে। উল্লেখ্য, শুরুটা দুর্দান্তই হয়েছিল শেখ জামালের, লীগের প্রথম লেগে। কিন্তু শেষদিকে এসে ছন্দপতন ঘটায় নষ্ট হয়েছে অনেক মূল্যবান পয়েন্ট। যার মাসুল দিয়েছেন কোচ মারুফুল হক বরখাস্ত হয়ে। অনেকটা রসিকতার সুরে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি, সাবেক তারকা ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিনকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন মনজুর কাদের। তার কথা শুনে নাকি বাফুফে সভাপতি মৃদু হেসেছিলেন। তবে মনজুর কাদেরের মূল্যায়ন, বাংলাদেশের সেরা ফুটবলার বলতে সালাউদ্দিন। সেরা কোচও হিসেবেও সালাউদ্দিন। তার চেয়ে মেধাবী ফুটবলার ও কোচ বাংলাদেশে আর কেউ নেই । জনকণ্ঠ প্রতিনিধির সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় বলছিলেন, আমি যখন মুক্তিযোদ্ধাকে নব্বইয়ের দশকে ‘ড্রিম টিম’ হিসেবে তৈরি করেছিলাম, তখন রেজাল্ট পাচ্ছিলাম ঘরোয়া প্রথম আসরে। পরে কাজী সালাউদ্দিনকে কোচের দায়িত্ব দিয়ে সাফল্য পেয়েছিলাম। তিনি নাকি বলেছিলেন, দোস্ত এত টাকা দিয়ে টিম বানালাম। কিন্তু রেজাল্ট আশারূপ হচ্ছে না। তুই কোচের দায়িত্বটা নিয়ে চেষ্টা করলে খুশি হব। বন্ধুর কথায় রাজি হয়ে কোচ হিসেবে বাজিমাত করেছিলেন সালাউদ্দিন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধাকে চ্যাম্পিয়ন করে। আর এ কারণেই বর্তমানে ফাঁকা পদটিতে ফের বন্ধুকে কোচ হওয়ার আমন্ত্রণ মনজুর কাদেরের। কিন্তু এটা সম্ভব নয়, তাও তার ভালভাবে জানা। কারণ এখন একটি ক্লাব নয়। গোটা দেশের ফুটবলের গুরু দায়িত্বটাই যে কাজী সালাউদ্দিনের কাঁধে। তার পরও নাছোরবান্দাা কাদের প্রিয় বন্ধুকে অন্তত উপদেষ্টা হিসেবে কিছু দিনের জন্য হলেও শেখ জামাল ধানম-ির ফুটবলারদের পাশে থাকার অনুরোধ করেছিলেন। না’ Ñশেষ পর্যন্ত এই অনুরোধ রক্ষা করতে অপারগতা প্রকাশ না করলেও কোন মন্তব্য করেননি কাজী সালাউদ্দিন। শুধু নাকি একগাল হাসি দিয়েছিলেন, জানালেন মনজুর কাদের। তিনি আরও যোগ করলেন, কাজী সালাউদ্দিন ফুটবলের মরানদীতে জোয়ার এনেছেন। সভাপতি হিসেবে তাঁর কোন বিকল্প নেই। ফুটবলের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে ওই চেয়ারটা তাঁর জন্যই, তাঁকেই মানায়। তবে কোচ শূন্যতা থাকছে না। মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছবেন দলের সাবেক নাইজিরিয়ান কোচ যোসেফ আফুসি।
×