ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দল থেকে খালেদার বিদায় নেয়া উচিত ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৪ জুন ২০১৫

দল থেকে খালেদার বিদায় নেয়া উচিত ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বামীর গড়া দল বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে স্বেচ্ছায় দল থেকে খালেদা জিয়াকে বিদায় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, দলের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে আপনি (খালেদা) ব্যর্থ নেত্রী। তাই মান-সম্মান নিয়ে এখনই কেটে পড়া উচিত। শনিবার দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রিন্সিপাল শাহজাহান ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শেকড়ের সন্ধানে’ গ্রন্থের প্রকাশনা এবং গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হানিফ আরও বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, খালেদা ও তারেককে রেখে দলকে ঢেলে সাজানো সম্ভব না। এঁদের বাদ দিলেই কেবল জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব হতে পারে। বিএনপি নেতাদের মতে, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে বার বার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে দল ব্যর্থ হয়েছে। এসব কারণে খালেদা জিয়া ব্যর্থ নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সম্প্রতি সত্য মন্তব্য করায় তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে আমি ধন্যবাদ দিই। এই লোকটির মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ আছে। জিয়াউর রহমান যখন দল গঠন করেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ছিলেন, দীর্ঘদিন এই দলের সঙ্গে ছিলেন। ২০০১ সালে বিএনপি উনাকে রাষ্ট্রপতি বানায়। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে উনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। উনার বিদায় স্বাভাবিক ছিল না। দল থেকে এক সময়ে বিতাড়িত সেই বদরুদ্দোজা চৌধুরীই এখন বিএনপির মঙ্গল চান। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব হিসেবে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার কথা বলেছেন। অথচ এ কথা আমরা প্রথম থেকেই বলছি। শেখ হাসিনাও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে বলেছিলেন, আপনি নিজে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন আর যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের পক্ষ হয়ে মাঠে নামেন। এটা বাংলার মানুষ ভাল মনে করে না। আপনি এটা থেকে বেরিয়ে আসুন। কিন্তু খালেদা জিয়া জামায়াতের কবল থেকে বের হননি। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাক্ষাত নিয়ে ভারতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি তুলে ধরে হানিফ বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সভায় বলেছিলেন, আমরা ভারতবিরোধী রাজনীতি করি না। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি বিএনপি নেত্রীকে যে তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন তার উত্তর তিনি দিতে পারেননি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বিএনপি বিজেপির আনুকূল্য না পাওয়ায় এমাজউদ্দীন সাহেবরা এখন ভারতবিরোধী কথা বলছেন। বিএনপিকে বেজন্মা মন্তব্য করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যাদের (বিএনপি) শেকড় নেই আশুগঞ্জের ভাষায় তারা বেজন্মা। বেজন্মা বলেই বিএনপি জামায়াতের পেটে ঢুকেছে। জন্ম যদি ঠিক থাকত তাহলে জামায়াতের পেটে ঢুকে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারাই এখন বলছেন বিএনপি জামায়াতের পেটে ঢুকেছে। অনেক দিন আগে আমি বলেছিলাম জামায়াতের পেটে বিএনপি। শেকড় নেই। শেকড় নেই বলেই আজ তারা ক্রমান্বয়ে মুসলিম লীগে পরিণত হচ্ছে। আজ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে কথাবার্তায় বোঝা যায় বিএনপির ভবিষ্যত। আগামী নির্বাচনের আগে বিএনপি ভেঙ্গে কয় খ- হবে তার ঠিক নেই। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, বিশিষ্ট অভিনেতা ড. ইনামুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শফিকুর রহমান প্রমুখ।
×