ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ড্রয়ের পথে ফতুল্লা টেস্ট

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ১৪ জুন ২০১৫

ড্রয়ের পথে ফতুল্লা টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো জুনে টেস্ট হচ্ছে। সেই টেস্টটি হচ্ছে ফতুল্লায়। বাংলাদেশ-ভারত সেই টেস্ট কিনা বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে। সেই বৃষ্টিতে ভাসা টেস্ট আবার ড্রয়ের পথেই এগিয়ে চলেছে। চারদিনে ভারতের একটি ইনিংস (৪৬২/৬; ইনিংস ঘোষণা) শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস খেলছে (১১১/৩)। এখন পর্যন্ত আরও ৩টি ইনিংস বাকি আছে। আজ টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিন। সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হওয়া টেস্টের এ শেষ দিনটিতে যে বাংলাদেশই ব্যাটিং করে যাবে, তাও বোঝা যাচ্ছে। আর যদি কোন এক সেশনে বৃষ্টি আবারও পড়ে, তাহলে সেখানেই আবার পরিত্যক্ত ঘোষণাও হয়ে যেতে পারে। টেস্টে অবশ্য ড্রয়ের সম্ভাবনাই দেখছে বাংলাদেশ। ড্র যেভাবেই হোক, লাভ হবে বাংলাদেশেরই। রেটিং বাড়বে। তাতে ভারতের ভীষণ ক্ষতি হয়ে যাবে। রেটিং কমলে এখন যে ৩ নম্বর র‌্যাঙ্কিংয়ে আছে ভারত, তা থেকে নিচে নেমে যাবে। তাই তো শিখর ধাওয়ান হতাশার সুরে বলেই দিলেন, ‘খুবই হতাশার।’ এখন পর্যন্ত ফতুল্লা টেস্টে চারদিন গেল। চারদিনে খেলা হওয়ার কথা ৩৬০ ওভার। এর মধ্যে বৃষ্টির বাঁধায় খেলা হলো মাত্র ১৩৩.৪ ওভার। ভারত খেলল ১০৩.৩ ওভার। বাংলাদেশ খেলল ৩০.১ ওভার। খেলা হয়নি ২২৬.২ ওভার। চারদিনে ১২ সেশনের ৭ সেশনই খেলা হয়নি। দ্বিতীয় দিন তো পুরোটাই বৃষ্টিতে ভেসে গেল। আগের দিনই বোঝা গিয়েছিল, ভারত আর ব্যাটিং করবে না। ইনিংস ঘোষণা করে দেবে। তাই করল। বাংলাদেশের ব্যাটিং দিয়ে দিন শুরু হলো। কিন্তু শুরুতেই তামিম ইকবাল (১৯) আউট হয়ে গেলেন। এরপর ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮১ রানের জুটি গড়লেও ১০৮ রানে মুমিনুল (৩০) ও ২ রান যোগ হতেই মুশফিকুর রহীম (২) আউট হওয়াতে বাংলাদেশ বিপাকেই পড়ে গিয়েছিল। প্রথম সেশন তখনও শেষ হয়নি। এর মধ্যেই ৩ উইকেটের পতন ঘটে গেল! সবাই বিপদই দেখছিল। ফলোঅন এড়াতে যে ২৬৩ রান লাগবে, সেটিই প্রথম ইনিংসে করতে পারে কিনা, তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়ে গেল। ইমরুল কায়েস একবার ১০ রানে ‘নতুন জীবন’ পেয়ে এক প্রান্ত ধরে খেলে ৫৯ রান করেন। সাকিবও ব্যাট হাতে নামে। ভয় সবার মনে থাকে, যদি টপাটপ উইকেট পড়তে থাকে, তাহলেই হারের শঙ্কাও জেগে উঠতে পারে। হাতে যে তখনও পাঁচ সেশন বাকি ছিল। আর ইতিহাস বলছে, বাংলাদেশ এর আগেও পাঁচ সেশন খেলতে না পেরে ম্যাচ হেরেছিল। রবীচন্দন অশ্বিন ও হরভজন সিংয়ের স্পিন ঘূর্ণি যেভাবে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল, তাতে বাংলাদেশের ম্যাচে ড্রয়ের সম্ভাবনাই শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু যেই আরও ১ রান বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যুক্ত হলো, মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে থাকল। তখন যে খেলা বন্ধ হলো, আর খেলা শুরু হলো না। মধ্যাহ্ন বিরতিও এর মধ্যে হলো। কিন্তু কোনভাবেই বৃষ্টি থামল না। শেষে ৩টায় একবার, সাড়ে তিনটায় দ্বিতীয়বার ও চারটায় শেষবারের মতো মাঠ পর্যবেক্ষণ করে চতুর্থদিনও পরিত্যক্ত ঘোষণাই করে দিতে হলো। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আরেকদিন ড্রয়ের ভাবনার কথাই বলেছিলেন। তবে সঙ্গে এও বলেছিলেন, ‘যদি শুরুতেই আমাদের নামতে হয়, সে জন্য আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। আমাদের লক্ষ্য যতক্ষণ সম্ভব ব্যাটিং করা।’ কিন্তু প্রথম সেশনে সাকিবের কথা রক্ষা করতে পারেননি বাংলাদেশের হয়ে এখন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তামিম, মুমিনুল ও মুশফিক। তবে চতুর্থদিন শেষে তামিমও যেন সাকিবের কথা আবারও মনে করিয়ে দিলেন। তামিম যা বললেন তা দাঁড়ালো এমন, ‘এখনও শঙ্কা কেটে যায়নি। যদি ম্যাচ ড্র করতে হয়, তাহলে একটি বড় জুটি গড়তে হবে। তাহলে ম্যাচ ড্র হবে।’ তামিম আজও ব্যাটসম্যানদের যা করার করতে হবে বলে দিলেন। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা কী ব্যাট করারই সুযোগ পাবেন? পেলেও বাংলাদেশ এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল দল। যে দলটির ১৭ উইকেট তিন সেশনে তুলে নেবে ভারত, তা ভাবা কঠিন। আর তাই বলেই দেয়া যায় এখন, আজ পঞ্চমদিনে বৃষ্টি হোক আর নাই হোক, ম্যাচ ড্রয়ের পথেই এগিয়ে গেল।
×