ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্মিথের রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দিন

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৩ জুন ২০১৫

স্মিথের রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার দিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উড়ছেন স্টিভেন স্মিথ। উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টে ১৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় অতিথিরা। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়াকে টেনে তো তুললেনই, পাশাপাশি অপরাজেয় সেঞ্চুরির (১৩৫*) মধ্য দিয়ে টেস্ট ইহিাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই বছর (২০১৩-২০১৫) মিলিয়ে ২ হাজারের ওপরে রান সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়লেন স্মিথ! ব্যক্তিগত ২০ রানে সঙ্গী অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। ফলে প্রথম দিনে ৪ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে জ্যামাইকা টেস্টে ভাল অবস্থানে অসিরা। রানের খাতা খেলার আগে ডেভিড ওয়ার্নারকে সাজঘরে ফেরান জেরোম টেইলর। বিশ্বকাপে আলো ছড়ানো উইন্ডিজ পেসার দলীয় ১৬ রানের মাথায় তুলে নেন অপর ওপেনার শন মার্শকেও। ক্রিস রজার্স আনফিট থাকায় সফরে ওপেনিংয়ে পাওয়া সুযোগটা একদমই কাজে লাগাতে পারছেন না বিখ্যাত বাবা জিওফ মার্শের প্রতিভাবান সন্তান। প্রথম টেস্টে করেছিলেন ১৯ ও ১৩*, জ্যামাইকায় প্রথম ইনিংসে ফিরলেন ১১ রানে। অপর প্রান্তে ওয়ান ডাউনে নামা স্মিথ ছিলেন নিজের মতো। প্রথমে অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ও পরে প্রথম টেস্টের নায়ক এ্যাডাম ভোগস ক্ষণিক সঙ্গ দিলেও তাঁদের কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। তৃতীয় উইকেটে ৩৪ ওভারে ১১৮ রান যোগ করেন স্মিথ-ক্লার্ক। মাত্র ৩ রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি পাননি অধিনায়ক। ৪৭ রানে জেসন হোল্ডারের শিকারে পরিণত হন ফর্ম নিয়ে ঝুঝতে থাকা ক্লার্ক। শেষ ২০ টেস্ট ইনিংসে মাত্র দুটি হাফসেঞ্চুরির দেখা পাওয়া ব্যাটসম্যানের এ সময়ে মোট রান ৫৫৭! গড় ৩৩, যা তাঁর নামের পাশে বড় বেমানান। এরপর আশা জাগানো ভোগস ৩৭ রান করে প্যাভিলিয়নমুখী হন। ক্লাসিক্যাল ব্যাটিংয়ের প্রতিমূর্ত স্মিথ ১৯৯ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৯ম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ১৬ চার ও ২ ছক্কায় ১৩৫ রান নিয়ে অপরাজিত ২৬ বছর বয়সী নিউসাউথওয়েলস হিরো। দিন শেষে ঠিক ৯০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫৮ রান তুলে অনেকটা নিরাপদে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্য দিয়ে টেস্টের প্রায় ১৪০ বছরের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা দুই বর্ষ মিলিয়ে ২ হাজার রানের ল্যান্ডমার্ক (২০৪৯) অতিক্রম করেন স্টিভেন স্মিথ! ২০১৩-২০১৫ ক্যালেন্ডার ইয়ারে ২১ ম্যাচে ৭ হাফসেঞ্চুরির বিপরীতে ৯টি সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি! গড় ৬৪। এ সময়ে ১৯০৬ রান নিয়ে পেছনে সতীর্থ ওয়ার্নার। পরের তিনটি স্থানে যথাক্রমে ইংল্যান্ডের জো রুট (১৮৪৯), নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন (১৮১৪ ) ও পাকিস্তানের ইউনুস খান (১৭৯৮)। নিজের শেষ ছয় টেস্টে ৫টি সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা স্মিথ, যেখানে ১৩৩.৪২ গড়ে রান ৯৩৪! স্মিথের ব্যাটিং সত্যি ঘোরলাগানিয়া বিস্ময়কর। সামনেই দীর্ঘ পাঁচ টেস্টের এ্যাশেজ সিরিজ। স্মিথ তাঁর রেকর্ড রান কোথায় নিয়ে যান, সেটিই দেখার বিষয়। বিশ্বকাপের আগে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা ক্রিকেটপ্রেমীরা নিশ্চই ভুলে যাননি। সিরিজের প্রথম টেস্টেই ইনজুরি ছিটকে দিয়েছিল ক্লার্ককে। দ্বিতীয় টেস্টেই অভিজ্ঞ ব্র্যাড হ্যাডিন-শেন ওয়াটসনদের টপকে অধিনায়ক করা হয় স্মিথকে। নেতৃত্বের অভিষেকে টানা তিন টেস্টে হাঁকিয়েছিলেন ৩ সেঞ্চুরি! বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অসিরা কেন তাঁর মাঝে কিংবদন্তির ছায়া দেখেন। সেই স্মিথ আবারও হাল ধরলেন বিপদের মাঝে। তুলে নিলেন সেঞ্চুরি, গড়লেন রান সংগ্রহের নতুন রেকর্ড। ‘প্রশংসা করে ওকে ছোট করতে চাই না। আমি তো বলব, ও ওর দায়িত্বই পালন করেছে, যেটি করার সামর্থ্য কেবল ওরই রয়েছে।’ দিন শেষে স্মিথের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিনায়ক ক্লার্ক। উইন্ডিজের হয়ে দুরন্ত বোলিং করে হোল্ডার নেন ৩ উইকেট। ব্যক্তিগত পাঁচ ওভার শেষে তার বোলিং ফিগার ছিল ৫-৫-০-২! ২০০২ সালের পর গত এক যুগে এমন বোলারদের এমন শুরু মাত্র দু’বারই দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব (এ্যান্ডারসন ও আল আমিন)। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ২৫৮/৪ (৯০ ওভার; স্মিথ ১৩৫*, ক্লার্ক ৪৭, ভোগস ৩৭, ওয়াটসন ২০*, মার্শ ১১, ওয়ার্নার ০; টেইলর ৩/১৮, হোল্ডার ১/৪৭)। ** প্রথম দিন শেষে
×