ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা জিয়াই ওয়ান-ইলেভেন ডেকে এনেছিলেন

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১২ জুন ২০১৫

খালেদা জিয়াই ওয়ান-ইলেভেন ডেকে এনেছিলেন

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কারামুক্তি দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় সংসদ সদস্যরা বলেছেন, নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনেই খালেদা জিয়া পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পথ সৃষ্টি করেছিলেন। ওই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে ১১ মাস শুধু নির্জন কারাবাসেই রাখেনি, স্লো পয়জনিং করে হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করেছিল। শত ষড়যন্ত্র, নির্যাতনের মুখেও দৃঢ়চেতা মনোবল, সাহস ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে শেখ হাসিনা অসাংবিধানিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলব ও সুশিলবাবুরা আজও নানা ষড়যন্ত্র করছে। এদের আবারও সম্মিলিতভাবে পরাজিত করতে হবে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে শুরুর পর পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘কারামুক্তি দিবস’ উপলক্ষে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ অনির্ধারিত বিতর্ক হয়। এ বিষয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, সাবেক বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সরকারী দলের পংকজ দেবনাথ ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম। এ বিষয়ে আরও কয়েক সংসদ সদস্য বক্তব্য রাখতে চাইলে ডেপুটি স্পীকার আর কাউকেই ফ্লোর দেননি। পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত বিতর্কের সূত্রপাত করে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনে ক্ষমতায় আসা সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শত অত্যাচার-নির্যাতন, বি-রাজনীতিকরণের চেষ্টা ও গণতন্ত্র হরণের চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ১১ মাস নির্জন কারাবাসে থাকার পর ২০০৮ সালের এদিন তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন বলেই গণতন্ত্র কণ্টকমুক্ত হয়। জেলকোড অমান্য করে দীর্ঘ ১১ মাস নির্জন কারাবাসে রেখে, স্লো পয়জনিং করে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে শক্তিহীন ও হত্যার চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়েছিল। কারাবাসের সেই দুর্বিষহ সময়ে সাহস-দৃঢ়তার ওপর ভর করে শেখ হাসিনা রচনা করেছিলেন দেশ উন্নয়নের এক মহাপরিকল্পনা। ২০০৯ সালে নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে সেই মহাপরিকল্পনার পথ ধরেই দেশকে আজ তিনি অগ্রগতির মহাসোপানে নিয়ে গেছেন। সরকারী দলের ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর গোটা জাতি আশা করেছিল, ৫ বছরে বিএনপি-জামায়াত জোটের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ, হাওয়া ভবনের কর্ণধার এবং শত অপকর্মের সঙ্গে জড়িত খালেদা জিয়া, তারেক জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু তা না করে উল্টো যারা পাঁচটি বছর ধরে চরম নির্যাতনের শিকার সেই আওয়ামী লীগের প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়। তখনই দেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সর্বশেষ ২০০৮ সালের এদিনে শেখ হাসিনা মুক্তি পেলে অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান হয়ে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠা হয়। ওয়ান-ইলেভেনের সময় দীর্ঘ কারা নির্যাতিত সরকারী দলের পংকজ দেবনাথ বলেন, ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে এবং জনগণের অকৃত্রিম ভালবাসার ওপর ভর করে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ শেষে ২০০৮ সালের এদিন মুক্তি পেয়েছিলেন। তার মুক্তির মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুক্তির পথ উন্মোচিত হয়েছিল। তার নেতৃত্বেই অসাংবিধানিক ধারা অবসান হয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং জাতীয় নির্বাচন দাবি করাই ছিল শেখ হাসিনার অপরাধ। গণতন্ত্রের জন্য নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়েই সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে এসেছিলেন। এ কারণেই ফখরুদ্দীন-ইয়াজউদ্দিন-মইনুদ্দিনরা বিনা অপরাধে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে গ্রেফতার করে দীর্ঘ ১১ মাস শুধু নির্জন কারাবাসেই রাখেনি, স্লো পয়জনিং করে হত্যার চেষ্টাও করেছিল। সেই সময়ের চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত অসাংবিধানিক ও সুশীল নামধারীরা এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এদের পরাজিত করতেই হবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বিএনপি যখন বুঝতে পেরেছে যে নির্বাচন হলে তারা ভোট পাবে না তখনই নীলনকশা করে পেছনের দরজা দিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের সৃষ্টি করেছিল। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। এর পর সেনা সমর্থিত অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে আমাদের বানায় শীর্ষ দুর্নীতিবাজ। শুধু আমাদেরই নয়, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদেরও নির্যাতন করা হয়েছে। পরে স্বেচ্ছায় নয়, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখেই সেনা সমর্থিত সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল।
×