ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে ছিটমহলবাসীর বিজয় মিছিল ॥ দুই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১০ জুন ২০১৫

কুড়িগ্রামে ছিটমহলবাসীর  বিজয় মিছিল ॥ দুই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ছিটমহল বিনিময়ে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে বিজয় মিছিল ও আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে কুড়িগ্রামের অভ্যন্তরে ছিটমহলের মানুষ। হাজার হাজার ছিটমহলবাসী বিজয় মিছিল বের করে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করে নারী-পুরুষ। মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়ায় আনন্দ র‌্যালি ও শোভাযাত্রায় সেøাগান ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে। বেলা ১১টায় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির কালীরহাট কার্যালয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচী শুরু হয়। পরে বাদ্যযন্ত্রসহ বর্ণিল সাজে সজ্জিত আনন্দ র‌্যালি ও শোভাযাত্রা দাসিয়ারছড়ার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করার পর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে ও মাথায় বেঁধে ছিটমহলের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রবেশ করে। পরে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। তাদের বন্দী জীবন অবসান হওয়ায় মাতিয়ে তোলে রাস্তাঘাট। মুক্ত এ মানুষগুলোর নতুন জীবন ফিরে পাওয়ার আনন্দের শেষ ছিল না তাদের মাঝে। বন্দী মানুষগুলোর বুক ভরা স্বপ্ন ৬৮ বছর পর শেষ হওয়ায় বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করেছে বিজয় মিছিল। এ সময় উৎসুক জনতা রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে দুই হাত নেড়ে ধন্যবাদ জানায় ছিটমহলবাসীদের। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির দাসিয়ারছড়া ইউনিটের সভাপতি আলতাফ হোসেন, বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সভাপতি মইনুল হক, কুড়িগ্রাম জজ কোর্টের পিপি এ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু ও লাঠি খোলার মধ্য দিয়ে কর্মসূচী শেষ হয়। ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরার মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি বাংলাদেশের সংসদে অনুমোদিত হলেও ভারতের সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়ায় চুক্তিটি অননুমোদিত রয়ে যায়। ছিটমহলের অবস্থান বাংলাদেশের ভূখ-ের অভ্যন্তরে ভারতের কোচবিহার জেলাধীন ১৭ হাজার ২৫৮ দশমিক ২৪ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় একটি, সদরে একটি ও ভূরুঙ্গামারীতে ১০টিসহ মোট ১২টি ছিটমহল আছে। আয়তন এক হাজার ৮৮০ দশমিক ৪৪ একর। লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামে ৫৫টি, হাতিবান্ধায় দুটি ও সদরে দুটি মিলিয়ে মোট ৫৯টি ছিটমহল আছে। আয়তন তিন হাজার ২৭৮ দশমিক শূন্য ৪ একর। নীলফামারী জেলার ডিমলায় চারটি ছিটমহল আছে। আয়তন ১৬৮ দশমিক ৪৮ একর। এছাড়া পঞ্চগড় জেলা সদরে সাতটি, বোদায় ২৬টি ও দেবীগঞ্জে তিনটি মিলে মোট ৩৬টি ছিটমহল রয়েছে। আয়তন ১১ হাজার ৯৩২ দশমিক ৭৮ একর।
×