স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে তিনি বুঝলেন, অনেক হয়েছে আর নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ওয়ানডের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরির মলিক খুররম খান। শনিবার ৪৩ বছর ৩৫০ দিন বয়সে ব্যাট-বল তুলে রাখার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত এই আরব আমিরাতি ক্রিকেটার। কার্গো বিমানের স্টোরকিপার থেকে ক্রিকেটার বনে যাওয়া খুররমের জীবনটা যেন এক সিনেমা। প্রায় এক যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মরুর দেশ আমিরাতে এখন জীবন্ত কিংবদন্তি তিনি! অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপেও দেশটির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২১ জুন ১৯৭১, খুররমের জন্ম পাকিস্তানের মুলতানে। ১৯৯৯ সালে ২৮ বছর বয়সে এমিরেটস এয়ারওয়েজের কার্গো বিমানের স্টোর-সংরক্ষণ কর্মচারী হিসেবে কাজের সুবাদে পাড়ি জমান আরব আমিরাতে। ইমরান খান-জাভেদ মিয়াদাদের মতো কিংবদন্তির স্বপ্ন বুকে ধারণ করে মুলতানের রাস্তায় খেলা ক্রিকেটের নেশাটা ছাড়তে পারেননি। তাই তো আমিরাতের ঘরোয়া লিগে ফ্লাই এমিরেটস একাদশের হয়ে চালিয়ে গেছেন শখের ক্রিকেট। পাঁচ বছর ব্যাট-বলের ঝলক দেখিয়ে নজর কাড়েন নির্বাচকদের। ২০০৪ সালের জুনে ৩৩ বছর বয়সে অধিনায়ক হয়েই ডাক পান জাতীয় দলে! ডাম্বুলায় এশিয়া কাপের সেই ম্যাচে আমিরাতের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। ১১ বছরেরও বেশ সময়ে শৌখিন থেকে মাঠের তারকা হয়ে ওঠেন খুররম। মাঠের বাইরেও দারুণ ব্যক্তিত্বের জন্য ‘জেন্টলম্যান অব আমিরাত ক্রিকেট’ বলে ডাকা হয় তাকে। ‘এটা অন্যরকম এক আবেগের মুহূর্ত। একজন সাধারণ বিমান কর্মচারী থেকে আজ সে আমাদের ক্রিকেটে আইডল। খুররমকে বিদায়ী শুভেচ্ছা’Ñ এক টুইটার বার্তায় উল্লেখ করে আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড। একই সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতাও কাজে লাগাতে আগ্রহী বোর্ড। আইসিসি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে আয়ারল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ২৬ রানের বড় হারের পরই অবসরের ঘোষণা দেন চুয়াল্লিশ ছোঁয়া ক্রিকেটার। দেশটির হয়ে প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে ১৬টি ওয়ানডে ও ৩টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। ওয়ানডেতে ৪১.৫৭ গড়ে করেছেন ৫২ রান। রয়েছে একটি সেঞ্চুরিও। যেমন তেমন সেঞ্চুরি নয়, একেবারে রেকর্ড গড়া ‘ট্রিপল ফিগার’! গত বছর নবেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলার সময় তার বয়স ছিল ৪৩ বছর ১৬২ দিন, আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে বেশি বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড এটিই।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: