ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনা না জুভেন্টাসের

শিরোপা কার?

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ৬ জুন ২০১৫

শিরোপা কার?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপেক্ষার প্রহর শেষ, ঐতিহাসিক ক্ষণ দোয়ারে। আজ রাতে ইউরোপীয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল মহারণ। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটিতে মুখোমুখি হচ্ছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা ও ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। জার্মানির বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে শ্রেষ্ঠত্বের এই দ্বৈরথ। দু’দলের সামনেই ঐতিহাসিক ট্রেবল জয়ের হাতছানি। জুভ ও বার্সা দু’দলই ইতোমধ্যে ২০১৪-১৫ মৌসুমে দুটি করে শিরোপা শোকেসে ভরেছে। ইতালিয়ান সিরি এ লীগে জুভেন্টাস টানা চতুর্থ শিরোপা জিতেছে। সেই সঙ্গে জিতেছে ইতালিয়ান কাপও। অন্যদিকে বার্সা স্প্যানিশ লা লীগার শিরোপা পুনরুদ্ধার করার পর জয় করেছে কোপা ডেল রেও। দু’দলই দুটি করে শিরোপা জয় করায় আজ রাতের ফাইনালে যারাই জিতবে তারাই ট্রেবল অর্থাৎ তিনটি শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়বে। ফাইনাল ম্যাচে বিশেষ জার্সি গায়ে নামবেন বার্সার ফুটবলাররা। সম্প্রতি বিশেষ এই জার্সি উন্মুক্ত করার কথা নিজেদের ওয়েবসাইটে জানায় ক্যাটালান ক্লাবটি। বিশেষ এই জার্সিতে ক্লাব ও স্পন্সরের লোগোর মাঝে বুকের ওপর লেখা, ‘ফাইনাল বার্লিন ২০১৫’। এই লেখার নিচে ম্যাচটির ভেন্যু ও তারিখও দেয়া আছে। আছে ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ বার্সিলোনা ও জুভেন্টাসের নাম। ফাইনাল নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক কথার লড়াই হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বার্সিলোনাকেই এগিয়ে রেখেছেন ফুটবল প-িতরা। কারণটা তাদের অজেয় মনোভাব। জড়তা কাটিয়ে এবারের মৌসুমে স্বরূপে ফিরেছে ক্যাটালানরা। বিশেষ করে তিন তারকা লিওনেল মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ আছেন অগ্নিমূর্তীতে। এই তিন ত্রয়ী ইতোমধ্যে গোলের রেকর্ড গড়েছেন। ফাইনালে এরা জ্বলে উঠলে জুভেন্টাসের কপালে খারাপি আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না ক্যাটালান ক্লাবটি। দলটির কোচ লুইস এনরিকেসহ সবাই প্রতিপক্ষকে সমীহ করছেন। এনরিকে বলেন, আমাদের দলটি অনেক সংঘবদ্ধ। লক্ষ্য একটাই আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তবে জুভেন্টাসকে হাল্কা করে দেখছি না আমরা। তারা অনেক ভাল দল। তাদেরও শিরোপা জয়ের সামর্থ্য আছে। রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করে ১২ বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে জুভেন্টাস। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে স্বাগতিক রিয়ালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে জিয়ানলুইজি বুফনের দল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পেনাল্টি গোলে রিয়াল এগিয়ে গেলেও অতিথি জুভেন্টাসকে সমতায় ফেরান স্প্যানিশ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতা। টুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে সেমির প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিকরা ২-১ গোলে হারিয়েছিল রিয়ালকে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ২০০৩ সালের পর ফাইনালের টিকেট পেয়েছে দুইবারের শিরোপাধারী জুভেন্টাস। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এখন পর্যন্ত দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দলটি। ১৯৮৫ ও ১৯৯৬ সালে শিরোপা জেতা দলটি তাদের সাত ফাইনালের শেষটি খেলেছিল ২০০৩ সালে। এবার ফাইনালে উঠে এক সঙ্গে দুটো প্রতিশোধ নিয়েছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দেশের শীর্ষ ক্লাবটি। ১৯৯৮ সালের ফাইনালে রিয়ালের কাছে হেরেই তৃতীয় শিরোপাটা জেতা হয়নি জুভেন্টাসের। শুধু তাই নয়, এর আগে সর্বশেষ যেবার সেমিফাইনালে খেলেছিল তারা, ১২ বছর আগের সেই সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ দলের কোচ ছিলেন রিয়ালের বিদায়ী কোচ আনচেলোত্তি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ নামকরণ হওয়ার পর কোন দলই ইউরোপ সেরার ট্রফিটা টানা দুবার জিততে পারেনি। সেমিফাইনালে রিয়াল বিদায় করে সেই রেকর্ড বজায় রেখেছে জুভেন্টাস। এবার তৃতীয় শিরোপার লক্ষেই মাঠে নামছে ইতালিয়ান ক্লাবটি। কাজটি কঠিন স্বীকার করছেন দলটির অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফন। তিনি বলেন, এটা কঠিন একটা ম্যাচ হতে যাচ্ছে। বার্সিলোনা নিঃসন্দেহে সেরা দল। তাদের হারানো সহজ হবে না। তবে আমরা আমাদের সামর্থ্যরে সবটুকু ঢেলে দেব। সবার মনে একটিই প্রতিজ্ঞা, এটাই আমাদের জীবনের সেরা অর্জনের ম্যাচ। ইতিহাস পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকলেও জুভেন্টাসের জন্য কিছুটা তৃপ্তির বিষয়, শেষ চারের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে হেরেছিল বার্সিলোনা। জার্মান ক্লাব বেয়ার্ন মিউনিখের কাছে ৩-২ গোলে হারের পরও প্রথম লেগে বড় জয়ের সুবাদে ফাইনালে নাম লিখিয়েছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। সমির প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে বার্সা ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বেয়ার্নকে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে জিতে শিরোপানির্ধারণী ম্যাচের ছাড়পত্র পেয়েছেন মেসি, নেইমার, সুয়ারেজরা। ২০১১ সালের পর ফাইনালে উঠা বার্সার স্বপ্ন এখন শিরোপা জয়। উত্তেজনার ফাইনালে দেখা হচ্ছে না ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আলোচিত ঘটনার দুই চরিত্র বার্সিলোনার লুইস সুয়ারেজ ও জুভেন্টাসের জিওর্জিও চিয়েল্লিনির। চোটের কারণে জুভেন্টাস ডিফেন্ডার খেলতে না পারার কারণেই দেখা হচ্ছে না তাদের। ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চিয়েল্লিনিকে কামড়ে দিয়েছিলেন সুয়ারেজ। ওই ঘটনার জন্য সব ধরনের ফুটবল থেকে চার মাসের জন্য ও উরুগুয়ের হয়ে ৯ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সুয়ারেজ। ক্লাব ফুটবলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন সুয়ারেজ। তবে জাতীয় দলের হয়ে এখনও নিষিদ্ধই আছেন উরুগুইয়ান তারকা।
×