ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মালালার হামলাকারী দ-প্রাপ্ত আট জনকে গোপনে ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৬ জুন ২০১৫

মালালার হামলাকারী দ-প্রাপ্ত আট জনকে গোপনে ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান

নারী ও শিশু অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাইয়ের ওপর হামলাকারী সন্দেহে ১০ জঙ্গীকে আটকের পর দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার কথা বললেও মূলত এই বিচারকার্য নিয়ে পাকিস্তান অবিশ্বাস্য প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আটক জঙ্গীদের মধ্যে মাত্র দু’জনকে কারাদণ্ড দিলেও বাকিদের গোপনে মুক্তি দিয়েও তাদের শাস্তি দেয়ার কথা বলায় এ প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে তোলপাড় চলছে। গত ৩০ এপ্রিল পাকিস্তানের তরফ থেকে জানানো হয়, মালালার ওপর হামলাকারী সন্দেহে আটক ১০ জঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অথচ, ওই ১০ জনের মধ্যে আটজনকে বিচারের মুখোমুখিই করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। খবর মিরর অনলাইন। কয়েক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ১০ জঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র দু’জনকেই বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে এবং তাদেরই দণ্ড দেয়া হয়েছে। আর বাকি আটজনকেই গোপনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ওই মামলার বিচারকার্যে পাকিস্তানের অবিশ্বাস্য গোপনীয়তাই এ সন্দেহ ঘনীভূত করে এবং শেষ পর্যন্ত ইসলামাবাদের থলের বিড়াল বের হয়ে যায়। লন্ডনে নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের মুখপাত্র মুনির আহমেদ বিবিসিকে বলেন, আসলে ওই সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরে পাকিস্তানের সোয়াত জেলা পুলিশের প্রধান সালিম মারওয়াত জানান, ওই মামলায় মাত্র দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ড দেয়া হয়েছে। মাত্র দু’জনকে দণ্ড দিলেও বিচারকার্য শেষে কেন বলা হয়েছে ১০ জনকেই দণ্ড দেয়া হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে দূতাবাসের মুনির বা সোয়াতের পুলিশ প্রধান সালিম কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি। বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যের ডেইলি মিররসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গীদের কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলেই এ প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হয়। গত ৩০ এপ্রিল পাক সংবাদমাধ্যম জানায়, ২০১২ সালের অক্টোবরে হামলার পর ২০১৪ সালের অক্টোবরে আটক ১০ জঙ্গীকে সোয়াতের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাসের বিচার প্রক্রিয়া শেষে ওই সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আদালতই তাদের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জঙ্গীর নামও প্রকাশ করা হয় সেদিন। বলা হয়- জাফর ইকবাল, বিলাল, শওকত, সালমান, ইসরারুল্লাহ, জাফর আলী, ইরফান, ইজহার, আদনান ও ইকরাম এ কারাদণ্ড পেয়েছেন। নারী ও শিশু শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় ২০১২ সালের অক্টোবরে স্কুলবাসে বাড়ি ফেরার সময় মালালার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করতে মাথায় গুলি চালায় তালেবান জঙ্গীরা। উত্তর-পশ্চিম সোয়াতের ওই হামলায় আরও দুই স্কুলশিক্ষার্থী আহত হয়।
×