ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লক্ষ্য সামরিক সাজ-সরঞ্জাম উৎপাদন ও প্রযুক্তি উন্নয়ন

ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা চুক্তি

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ৫ জুন ২০১৫

ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা চুক্তি

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার জেট ইঞ্জিন, বিমানবাহী জাহাজের নক্সা ও নির্মাণসহ যৌথভাবে প্রতিরক্ষা সাজ-সরঞ্জাম ও প্রযুক্তিজ্ঞানের উন্নয়ন ও উৎপাদনের রূপরেখা তুলে ধরে একটি নতুন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ১০ বছর মেয়াদী প্রতিরক্ষা কাঠামো চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া দুই দেশ যৌথভাবে জীবাণু ও রাসায়নিক যুদ্ধের বিরুদ্ধে সৈনিকদের আত্মরক্ষামূলক পোশাক উন্নয়ন এবং জেনারেটর উৎপাদনের দুটি প্রকল্প চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর ও সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ্যাশটন কার্টার কাঠামো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের সময় জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা এবং যৌথ প্রশিক্ষণকে কেন্দ্রবিন্দু করে চুক্তিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। খবর পিটিআই, ইয়াহু নিউজ ও ডনের। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বিষয়ক ২০১৫-এর কাঠামো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, যা আগামী ১০ বছরের জন্য দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত অংশীদারীর দিকনির্দেশনা দিতে পূর্ববর্তী কাঠামো ও সাফল্যকে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।’ এতে বলা হয়, নতুন কাঠামো চুক্তিতে উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত আলোচনা উভয় দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে অব্যাহত তথ্য বিনিময় এবং প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করার পথ খোলা রাখা হয়েছে। এছাড়া পারিকর ও কার্টার জেট ইঞ্জিন, বিমানবাহী জাহাজের নক্সা প্রণয়ন ও নির্মাণ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে আলোচনা ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে আরও বলা হয়, ‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশ যৌথভাবে মোবাইল বৈদ্যুতিক হাইব্রিড পাওয়ার সোর্স এবং পরবর্তী প্রজন্মের আত্মরক্ষামূলক পোশাকের উন্নয়নে দুটি প্রকল্প চুক্তি চূড়ান্ত করেছে।’ দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্ক শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ্যাশটন কার্টারের আলোচনার সময় প্রকল্পগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে বিপরীতমুখী অবস্থান নিলেও চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি বৃদ্ধি দুই দেশকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্য অস্ত্রশস্ত্রের একটি প্রধান সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচীর অধীনে দেশটি সামরিক প্রযুক্তির যৌথ উন্নয়ন ও উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে। দুই দেশ ভারত মহাসাগরে বার্ষিক নৌ-মহড়া পরিচালনা করছে। চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই মহাসাগরে তার উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। পৃথক এক বৈঠকে কার্টার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত মহাসাগর ও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সর্বশেষ পরিস্থিতি আলোচনা করেন। কার্টার কৌশলগত ও প্রতিরক্ষা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ভারতে তার বিমানবাহী একটি জাহাজের জন্য মার্কিন বিমান উড্ডয়ন প্রযুক্তি সংগ্রহের দিকে নজর দিচ্ছে। জীর্ণ হয়ে যাওয়া একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের বদলে ভারত বিমানবাহী জাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্টারের সঙ্গে বৈঠকের পূর্বে বুধবার পাকিস্তানে মার্কিন অস্ত্র বিক্রয়ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পারিকর নয়াদিল্লীতে সাংবাদিকদের বলেন, আমি সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করব না। তবে পাকিস্তানে যে কোন অস্ত্র বিক্রয়ের খবর ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তিনি পাকিস্তানে অব্যাহত আমেরিকান অস্ত্র বিক্রয়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন। ৯/১১’র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে ৫৪০ কোটি ডলারের বিশাল অঙ্কের এফ-১৬ জঙ্গীবিমানসহ ভারি অস্ত্রশস্ত্র প্রদান করেছে।
×