ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ শহরের প্রাণকেন্দ্র হাসপাতাল রোডের বাম দিকে মহানন্দার ধারে বসা আমবাজার নিয়ে এবার উচ্ছ্বাস আর আনন্দ শুধু আম ব্যবসায়ীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ভাগাভাগি হয়ে গেছে ক্রেতাদের মধ্যেও। কারণ বহু ক্রেতা জাতীয়ভাবে শুরু হওয়া মধুমাস প্রথম জ্যৈষ্ঠ থেকেই বাজারে উঁকি মারা শুরু করেন আম কেনার জন্য। এভাবে ১৬ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর মিলেছে আমের খোঁজ ও দেখা। তাও আবার খুবই সীমিত আকারে আম নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। বিশেষ করে অতি সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের উঠানে যে ২-৪টা আম গাছ রয়েছে তাতে পাকা শুরু হয়েছে। প্রথম দিন বাজারে মাত্র পাঁচটি জাত এলেও মাত্র একটি রয়েছে বুনিয়াদী ও নামকরা জাত, যা শ্রেষ্ঠ জাতের অন্যতম আর তা হচ্ছে গোপালভোগ। দাম ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০ টাকা পর্যন্ত কেজি। অন্য সাধারণ গুটিজাতের দামে আরও কম ও সহজে কেনা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে মফস্বল অঞ্চলে সুন্দরবনের আদলে দিগন্ত বিস্তৃত মাইলের পর মাইলজুড়ে হাজার হাজার আম বাগান এখন আমের ভারে নুয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নুয়ে পড়া আম মাটি থেকে দেড় থেকে দুই ফুট উপরে ঝুলছে। প্রায় ২৯টি বুনিয়াদী জাতের সঙ্গে সহস্রাধিক গুটি জাত রয়েছে। বুনিয়াদী ২৯ জাতের মধ্যে এই প্রথম বর্ণিল আকার ধারণ করে বাজারে আসতে শুরু করেছে গোপালভোগ। এই বুনিয়াদী জাতের সঙ্গে অর্থাৎ গোপালভোগের সঙ্গে মাত্র একুশটি জাত সোম ও মঙ্গলবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আমবাজারে এসেছে। দেশের সর্ববৃহৎ আমবাজার শিবগঞ্জের কানসাটে এখনও আমের বাজার বসেনি বা আম আসেনি।
দ্বিতীয় বুনিয়াদী জাত খিরশাপাত কিছু কিছু আসা শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ল্যাংড়াও আসবে। ১০ জুনের মধ্যে সব ধরনের বুনিয়াদী জাতসহ শতাধিক গুটি জাত বাজারে এসে পড়বে।
চুয়াডাঙ্গায় বিষমুক্ত আম
নিজস্ব সংবাদদাতা চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, মধুমাস জ্যৈষ্ঠ চলছে। উঠতে শুরু করেছে আমসহ নানান সুমিষ্ট ফল। জেলায় এবার স্মরণকালের আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রকৃতি এবার আম চাষের জন্য শতভাগ অনুকূলে ছিল। বাজারে আমের দাম আশানুরূপ হওয়ায় বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা খুশি। আম ওঠার আগ থেকে প্রশাসনের নজরদারি থাকায় এবার বাজারে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও ফরমালিনমুক্ত আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে চুয়াডাঙ্গায় আম সংরক্ষণের জন্য হিমাগার না থাকায় কৃষকরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অপরদিকে আম বিক্রির জন্য নির্ধারিত কোন হাট না বসায় ক্রেতা-বিক্রেতারা পড়ছেন নানা সমস্যায়। প্রতিদিনই চুয়াডাঙ্গা থেকে দেশের বিভিন্ন মোকামে আম যাচ্ছে।
জ্যৈষ্ঠের প্রচ- গরমে বোম্বাই, হিমসাগর, ল্যাংড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম একযোগে পাকতে শুরু করেছে। এতে চুয়াডাঙ্গার হাট-বাজারে আমের দাম কিছুটা কমে গেছে। এসব আম ২৫-৩৫ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে। তারপরও এ জেলা থেকে চলতি মৌসুমে ৫০ কোটি টাকার আম বিক্রি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ব্যবসায়ীরা।