ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিপিডির সুপারিশ

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা চাই এবং ঋণের সুদ কমাতে হবে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২ জুন ২০১৫

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা চাই এবং ঋণের সুদ কমাতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে হবে এবং ঋণের সুদহার কমাতে হবে। এজন্য ‘স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন’ গঠন করার সুপারিশ করেছে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সোমবার ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০১৪Ñ১৫ : তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’ অনুষ্ঠানে এই প্রস্তাব তুলে ধরেন সংস্থার সিপিডির গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি মূল বক্তা ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জাম ও আনিসাতুল ফাতেমা ইউসূফ। মূল প্রবন্ধে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, গত এক বছর রাজনৈতিক অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে যেতে হয়েছে। এরপরও নিম্ন মূল্যস্ফীতি, নিম্নগামী সুদহার, স্থিতিশীল বিনিময় হার, নিয়ন্ত্রিত বাজেট ঘাটতি, ইতিবাচক ব্যালান্স অব পেমেন্ট ও বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ আর বৈশ্বিক বাজারে পণ্যমূল্য কমে যাওয়ার মতো ভাল কিছু দিক রয়েছে অর্থনীতিতে। তবে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া, আমেরিকার বাজারে রফতানি কমে আসা এবং ধানের দাম নিশ্চিত করতে না পারা অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ। এ রকম পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের নিম্নমধ্য আয়ের দেশ হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন এই গবেষক। তাই সামগ্রিক আর্থিক খাতে গতি ফেরাতে পরিসংখ্যান কমিশন, কৃষিমূল্য কমিশন, স্থানীয় সরকার অর্থায়ন কমিশন, সরকারী ব্যয় পর‌্যালোচনা কমিশন ও স্বাধীন আর্থিক খাত সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। তবে, বিদ্যুত ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তি রাখা সরকারের জন্য ইতিবাচক হবে বলে মনে করেন সিপিডির এই গবেষক। সংস্থার সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে অপ্রদর্শিত আয়কে করের মূল ধারায় আনতে আইন প্রণয়ন করা দরকার। এজন্য ‘বেনামি সম্পদ আইন’ করা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের আইন রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, অর্থনীতির অগ্রগতি ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য অপ্রদর্শিত আয়কে করের মূল ধারায় আনতে হবে। এজন্য অপ্রদর্শিত আয় নিয়ে নির্ভরযোগ্য মধ্যমেয়াদি নীতিমালায় নিয়ে আসতে হবেÑ সে আয় দেশের বা বিদেশের যেখানকারই হোক। অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে আয়কর অধ্যাদেশে একটি ধারা রয়েছে, যাতে আয়কর বিবরণীতে অপ্রদর্শিত আয় বা অর্থের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন অনুযায়ী কর আদায়ের পর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সম্ভাব্য চুক্তির সুবিধা নিতে করণীয় সম্পর্কে বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট হবে। তার সুবিধা নিতে হলে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নতি করতে হবে। এছাড়া নৌ-ট্রানজিট হবে বলে শুনছি। সেক্ষেত্রেও অবকাঠামো উন্নয়ন দরকার।
×