ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাসুদা ভাট্টি

বাংলাদেশ-ভারত ॥ ভালো ও বন্ধু-প্রতিবেশী হওয়ার একটি সুযোগ

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২ জুন ২০১৫

বাংলাদেশ-ভারত ॥ ভালো ও বন্ধু-প্রতিবেশী হওয়ার একটি সুযোগ

ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাংবাদিক বন্ধু যারা রয়েছেন তাদেরকে যদি এই মুহূর্তে প্রশ্ন করি যে, ভারতের এত প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে কোন্্ প্রতিবেশী দেশকে তারা প্রকৃত বন্ধুর মতো ও ‘ভালো’ প্রতিবেশী মনে করেন? তাহলে বেশিরভাগই উত্তর দেবেনÑ কেন, বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনা? কেউ হয়ত প্রশ্ন তুলতে পারেন যে, এ রকম প্রশ্ন করে দেখেছেন কি? উত্তরে বলব, হ্যাঁ করেছি এবং এই উত্তরটাই পেয়েছি। দ্বিতীয়ত, সম্প্রতি টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন ছেপেছে। তাতে স্পষ্ট বলেছে যে, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের মতো প্রকৃত ও ভালো বন্ধু-প্রতিবেশী আর একটিও নেই ভারতের। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কটি যদি সেই নিরিখেই বিশ্লেষণ করা যায় তাহলেই বোধ করি সবচেয়ে শোভন ও যুক্তিগ্রাহ্য হয়। এর বাইরে যেসব বিশ্লেষণ করা হয় বা হচ্ছে সবই কার্যত একপেশে সমালোচনার এবং এই ‘ভালো বন্ধু-প্রতিবেশী’র মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির পাঁয়তারা বৈ কিছু নয়। দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিশ্লেষণের আগে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারত ফ্যাক্টর নিয়ে দু’একটি কথা বলতে চাই। বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত বিক্ষুব্ধ সময় পার করছে, এই সময়টা কেবল রাজনৈতিক দিক দিয়ে নয়, অর্থনীতি, উন্নয়ন, সমাজ বদল ইত্যাদি নানা সূচকেই এই বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পৃথিবীর প্রথম দশটি ‘ইমার্জিং মার্কেট’-এর প্রথম পাঁচটির মধ্যে বাংলাদেশ অবস্থান করছে। আর একটু গুছিয়ে নিতে পারলেই বাংলাদেশকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না; এ রকম কথা আন্তর্জাতিক মানের বিশ্লেষকরাই বলছেন। ফলে এই সময়টা কেবল যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জরুরী তা নয়, বরং এই সময়টাকে কিভাবে ও কতটা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে হবে সে ব্যাপারে বিচার-বিশ্লেষণ হওয়াটাও অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার সরকারকে নিয়ে অনেকের নানাবিধ প্রশ্ন ও সমালোচনা থাকতে পারে; কিন্তু এক্ষেত্রে দ্বিমত করার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে বের করে আনার লক্ষ্যে এই সরকারের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়, আন্তর্জাতিকভাবে এই প্রশংসা করাও হচ্ছে। কিন্তু দেশের ভেতরকার রাজনৈতিক প্রতিকূলতা প্রায়শই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এবং তা সরাসরি গিয়ে আঘাত হানছে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায়, যার ফলে উন্নয়নের গতি ও ধারাবাহিকতায় বিঘœ ঘটছে। এর চেয়েও বড় কথা হলো, সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে দেশের বিরোধিতা করতেও বাধছে না অনেকেরই। এই যে বিরোধিতা; এখানেই আমরা লক্ষ্য করি এদেশে ভারতবিরোধিতার রাজনীতিকে, বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে এই বিশ্বায়নের যুগে ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সহযোগী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে দু’দেশের মধ্যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দৃঢ়তা লাভ করা বন্ধুত্বও অত্যন্ত নিম্নগামী হয়ে উঠেছিল। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের চাইতেও বড় ভারতবিরোধী কর্মকা-ের কুরুক্ষেত্র। এখান থেকে পরিচালিত হচ্ছিল ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদকে উস্কে দেয়াই কেবল নয়, সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়ার প্রক্সি-ওয়ার এবং অর্থনৈতিকভাবে ভারতকে পিছিয়ে দেয়ার চক্রান্তও এদেশেই সংঘটিত হচ্ছিল। ১০ ট্রাক অস্ত্র কিংবা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এখানে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও সহযোগিতা দেয়ার যে উত্তুঙ্গ অবস্থা ২০০১ সাল থেকে এদেশে চলে আসছিল তা ২০০৯-এ এসে বাধাগ্রস্ত হয় কেবল শেখ হাসিনার কঠিন নীতির কারণে। কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না, এই নীতির বিরোধিতা করার জন্য এদেশে রাজনৈতিক দলের যেমন অভাব নেই, অভাব নেই তেমনি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গেরও। এমনিতে কিন্তু এই বিশিষ্টজনরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের আয়োজনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আলো করে বসে থাকেন সবার আগে। তার পরও তারাই এদেশে ভারতবিরোধিতার পতাকাটিও অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে বয়ে বেড়ান। বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক অবস্থান, আচরণ এবং বিশ্বাস, কোনটিই ভারতীয়বাদের (ইন্ডিয়ানিজম) সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, বরং তাদের রাজনীতির মূলেই রয়েছে ভারতের বিরোধিতা করা। সেটা স্বার্থের ক্ষেত্রে হতে পারে, রাজনীতির ক্ষেত্রে হতে পারে এবং হতে পারে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও। আবার প্রয়োজনে তারা যে সম্পূর্ণ উল্টোমুখী হতেও দ্বিধা করে না তার প্রমাণ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে ‘কখনও ভারত-বিরোধী রাজনীতি করেনি, এখনও করে না, ভবিষ্যতেও করবে না’ বলে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে সেটা। অথচ এরাই পার্বত্য শান্তি চুক্তিকে ফেনী পর্যন্ত ভারতকে দিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের প্রয়োজন নেই; কারণ, এদেশের সরকারই ভারতের সরকার বলে পরিহাস করেছে, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিকে গোলামির চুক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং এমন শত শত উদাহরণ রয়েছে। আর এদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তো এই রাজনৈতিক জোট কখনই এদেশের মানুষ বলে মনেই করেনি। অবশ্য আওয়ামী লীগও যে তাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে তার প্রমাণ আমরা এখনও পাইনি। এখন উপরোক্ত এই ব্যাকগ্রাউন্ড বা উপক্রমণিকার আলোকে যদি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ও নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরকে নিয়ে আলোচনা করি তাহলে প্রথমেই বলতে হয় যে, একজন ভালো ও বন্ধু-প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের যতটা সদাচার ও সৌহার্দ্য প্রদর্শন আবশ্যকীয় ঠিক ততটুকুই যদি নরেন্দ্র মোদি করেন তাহলেই দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে আর কোন তৃতীয় অপশক্তি মাথা ঢোকাতে পারবে না। আর সেটা নিশ্চিত করতে হবে সম্পর্কের সমতা, সততা এবং পারস্পরিক আদান-প্রদানের ভিত্তিতেই। এ কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ভারতের যতটুকু প্রয়োজন বাংলাদেশের, বাংলাদেশেরও ঠিক ততটুকুই প্রয়োজন ভারতের সহযোগিতা। বিশ্বের নতুন শক্তি বলয় সংক্রান্ত মেরুকরণে ভারত যে গ্রুপভুক্ত হয়েছে তাতে বাংলাদেশও ভারতের পাশেই অবস্থান করছে। অনেক ক্ষেত্রেই ভারতকে সমর্থন দিয়ে শক্তিশালী করার ভূমিকাটিও পালন করছে বাংলাদেশ। নিকট ভবিষ্যতে ভারতের জন্য বাংলাদেশের এই পাশে দাঁড়ানোর কাজটি আরও প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতায়। ফলে ভারত কোনভাবেই বাংলাদেশকে অতৃপ্ত রেখে এই বৈশ্বিক অবস্থানে শক্তিশালী থাকতে পারবে না। অপরদিকে, বাংলাদেশের ভূখ-কে ব্যবহার করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার যে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র তা রোখা না গেলে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চরমভাবে ব্যাহত হবে, তাতে কোনই সন্দেহ নেই। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়লে তা মূলত আঘাত হানে অর্থনীতিতে। সেটা রক্ষায়ও ভারতের উচিত বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা বজায় রাখা। এর অর্থ কী দাঁড়াল? ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফর আসলে আর কিছুই নয়, হওয়া উচিত রাজনীতি ও অর্থনীতির নতুন সমীকরণ প্রতিষ্ঠায় দু’দেশের ঐকমত্যে পৌঁছানো। ইতোমধ্যেই যে সীমান্ত চুক্তি ভারতের সংসদ অনুমোদন দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে অনেক বড় পদক্ষেপ এই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নতুন সমীকরণ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। কিন্তু তারপরও বাকি থেকে যাবে অনেক কিছুই। মোদি যেমন চাইবেন না যে, বাংলাদেশ অশান্ত হয়ে উঠুক অপ্রাপ্তির ফলে। কারণ, ভারত সামান্য অবহেলাও যদি প্রদর্শন করে এদেশের রাজনীতিতে তার প্রভাব হবে দাউ দাউ অগ্নিসম। অপরদিকে, এদেশের রাজনীতি অশান্ত হলে তার প্রভাব ভারতেও যে পড়বে তা তো আগেই উল্লেখ করেছি। নরেন্দ্র মোদি যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্ন ভারতবাসীকে দেখিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছেন তিনি কি পারবেন বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে অস্থির রেখে এবং এদেশকে আবার ভারতবিরোধিতার ক্ষেত্র হিসেবে উন্মুক্ত করার সুযোগ করে দিয়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে? নৈবঃ নৈবচ। এর পরই আসছে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ হতে পারে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন সহযোগী। এক্ষেত্রে কেবল বাংলাদেশের সড়ক, নৌ কিংবা রেলপথ ব্যবহারের সুযোগই নয়, এই বিশাল পরিবহন-পথকে নিষ্কণ্টক করার জন্যও ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশে যতটা সম্ভব ভারতবিরোধিতার অগ্নিকে দমিয়ে রাখার কৌশল গ্রহণ। আর সেজন্য আসলে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমন্বয় এবং দু’দিকেই সুযোগ সৃষ্টির বিকল্প নেই। অনেকেই হয়ত বলবেন যে, যত কিছুই হোক, তিস্তা চুক্তি তো এখনও হচ্ছে না, ভারত সেটি না করলে তো সম্পর্ক ভালো হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর এক্ষেত্রে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো কোনভাবেই রাজি করানো যাচ্ছে না। তাহলে উপায়? এটা খুব সত্যি যে, তিস্তা চুক্তি এই মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে। সীমান্ত চুক্তির পরে এই চুক্তিটি হয়ে গেলে দু’দেশের মধ্যে বৃহৎ আর কোন বিবাদ-বিসম্বাদের সুযোগ নেই। কিন্তু প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থাকে এবং তাতে আন্তর্জাতিক কিছু ইস্যু বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে তিস্তা চুক্তি সে ধরনের নেতিবাচক কোন প্রভাব যুক্ত করবে বলে মনে করার কোন কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তবে সরলভাবে বলতে গেলে, এতে আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন সমস্যা দেখি না। কারণ, উজানের পানি ভাটির জন্য প্রয়োজনানুসারে ছাড় দেয়া হবে; এটাই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নদী ব্যবহারের আইন। সেই আইন লঙ্ঘন করে রাজনীতি করাটাকে কোনভাবেই যুক্তিগ্রাহ্য মনে করার কারণ নেই। তাই, নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দু’দেশের নদী বিশেষজ্ঞরা যদি বিষয়টি সচেতনতার সঙ্গে খোলা মন নিয়ে বিশ্লেষণ করেন তাহলেই কেবল এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কারণ, দু’দেশের সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে ধর্ণা দেয়ার চেয়ে নিজেরাই বসে ঠিক করে নেয়াটাই আধুনিকতা, বাকি যা কিছু তার সবই হয় শক্তি প্রদর্শন কিংবা অসভ্যতা। ভারত কিংবা বাংলাদেশ কোন দেশকেই এ বিচারে ‘অসভ্য’ ভাবার কোন কারণ নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে বিগত নির্বাচনের আগে যেভাবে নেতিবাচক কথাবার্তা শোনা যেত তা বিগত এক বছরে অনেকটাই প্রশমিত হয়ে গেছে; বিশেষ করে তাঁর দৃঢ় অবস্থান ও অত্যন্ত সুচিন্তিত পদক্ষেপের কারণে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের ক্ষেত্রে। এখন অনেকেই আশাবাদী হয়ে উঠছেন তাঁকে নিয়ে; বাংলাদেশেও এই আশাবাদ ডালপালা মেলেছে বিগত বছরে বাংলাদেশকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন মন্তব্য ও সীমান্ত চুক্তিসহ কিছু পদক্ষেপের কারণে। আর সে কারণেই তাঁর বাংলাদেশ সফর নিয়ে এদেশেও শত্রু-মিত্র সকলেই আশাবাদী হয়ে উঠেছে তীব্রভাবে। এই আশাবাদের তীব্রতায় কোনভাবেই আঘাত করা সমীচীন হবে না। আগেই বলেছি, সে রকম কোন আঘাত দু’দেশের কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না। নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা, দু’জনের সমালোচকরাও স্বীকার করেন যে, এই দু’জন রাজনীতিবিদই জাতীয় স্বার্থের প্রতি অত্যন্ত যতœবান এবং দেশপ্রেমিক। আজকে তাই নরেন্দ্র মোদির সফর শুরুর আগে এই লেখাটি শেষ করতে চাই শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি যার যার দেশের প্রতি ‘প্রেম’ সম্পর্কিত আশাবাদ দিয়েই Ñ যিনি নিজের দেশকে ভালোবাসেন তিনিই কেবল অপর দেশের প্রতি সমান ভালোবাসা প্রকাশে সমর্থ হন। আমরা আশা করব, দুই প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের স্বার্থ অক্ষুণœ রেখে একটি সামষ্টিক ও সমতাভিত্তিক স্বার্থরক্ষার স্থান নির্বাচন করবেন যেখানে দু’জনই স্বাধীনভাবে দাঁড়িয়ে দু’দেশের নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার নেই তাঁদের কাছে। তাছাড়া আমার মনে হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বকে সুদৃঢ় ও সুবিন্যস্ত করার যে সুযোগ এই দুই নেতার সামনে এই মুহূর্তে এসেছে তা অতীতেও আসেনি, ভবিষ্যতেও আর আসবে না। ১ জুন, সোমবার ॥ ২০১৫ ॥ [email protected]
×