ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় পুত্রবধূকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

সালিশে দম্পতিকে বেত্রাঘাত ও জরিমানা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩০ মে ২০১৫

সালিশে দম্পতিকে  বেত্রাঘাত ও জরিমানা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৯ মে ॥ নওগাঁর মান্দায় পুত্রবধূকে লাঞ্ছিত করাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে সালিশ আতাবর রহমান (৫০) ও জরিনা বিবি (৪২) নামে এক দম্পতিকে ৫০ বেত্রাঘাত করেছে স্থানীয় মাতবররা। শুধু বেত্রাঘাত করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, ওই দম্পতিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে। বেত্রাঘাতে ওই দম্পতি গুরুত্বর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আতাবর রহমানকে শুক্রবার সকালে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের মঞ্জিলতলা বাজারের পাশে এনায়েতপুর গ্রামে কাসেম উদ্দিনের বাড়িতে ডাকা সালিশে এ ঘটনা ঘটানো হয়। বৈঠকে স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন সরদার, নারী সদস্য আলেয়া বিবিও উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ মে সকাল ৯টার দিকে আতাবর রহমানের পুত্র জামাল হোসেন ও পুত্রবধূ সুরাইয়া বিবির মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তা প্রচ- আকার ধারণ করলে আতাবর রহমান উভয়কে থামানোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। পরে তিনি পুত্রবধূকে নিবৃত্ত করতে চড়-থাপ্পড় দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মাতবররা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে কাসেম মাস্টারের বাড়িতে বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে মাতবর আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে স্থানীয় মাতবর সুজন আলী, আব্দুল কাইয়ুম, আজিজার রহমান, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মোস্তাক হোসেন, ওসমান গণি, আজাহার আলী বাগসহ প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সালিশের সভাপতি আলতাফ হোসেনের হুকুমে ওই দম্পতিকে সেখানে ধরে আনা হয়। পরে রাত ১০টার দিকে কমিশন গঠন করে রায় ঘোষণা করে সভাপতি আলতাফ হোসেন। রায়ে ওই দম্পতিকে ৫০টি বেত্রাঘাতসহ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রায় কার্যকর করেন গ্রাম পুলিশ মমতাজ হোসেন। তার বেতের আঘাতে আতাবর রহমানের বাম হাতের কব্জি ফেটে গিয়ে রক্তপাত হয়। আহত হন আতাবরের স্ত্রী জরিনা বিবিও। সালিশ বৈঠকের সভাপতি আলতাফ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বলেন, চেয়ারম্যানের পরামর্শে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন সরদার জরিমানাসহ বেত্রাঘাত করার কোন ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে বলেন, পুত্রবধূর চিকিৎসার জন্য ২ হাজার ও চৌকিদারি খরচের জন্য ২ হাজার এই মোট ৪ হাজার টাকা ওই দম্পত্তির নিকট থেকে নেয়া হয়েছে।
×