ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছিটমহলে জাল দলিল ও নাগরিক কার্ড তৈরির হিড়িক

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৭ মে ২০১৫

ছিটমহলে জাল দলিল ও নাগরিক কার্ড তৈরির হিড়িক

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের অভ্যন্তরে অবস্থিত ১৬২টি ছিটমহলে ২০১১ সালে যৌথ জনগণনার ভিত্তিতে পুনর্বাসনের দাবিসহ ছিটমহলে সংঘবদ্ধ চক্রের নতুন করে বাড়িঘর নির্মাণ ও জাল দলিলসহ জাল নাগরিকত্ব বানানোর প্রতিবাদ জানিয়ে ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে দু’দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে বিভিন্ন দাবি সংবলিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ছিটমহল বিনিময় সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারকচক্র। এই চক্রটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত কয়েকটি ছিটমহলে নতুন করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করার পাশাপাশি ছিটমহলের জমির জাল দলিল ও ভারতীয় নাগরিকত্বের জাল কার্ড তৈরির কাজে সক্রিয় রয়েছে। ভারতের ভূখ-ের মাথাভাঙ্গা শহরের একটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে জাল দলিল ও নাগরিকত্ব কার্ড ছাপানো হচ্ছে। ওই চক্রটি ‘ছিট নাগরিক সুরক্ষা কমিটির’ ব্যানারে বেআইনীভাবে নিজেদের স্ট্যাম্প পেপার তৈরি করে ছিটমহল বাসিন্দাদের কাছ থেকে জমি বিক্রির দলিল লিখিয়ে নিচ্ছে। এতে ওই চক্রটি প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঠিক একইভাবে তারা জাল ভারতীয় নাগরিকত্ব কার্ডও তৈরি করছে। এ প্রসঙ্গে মোবাইল ফোনে ভারত-বাংলাদেশ ছিটসহ বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহ-সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ছিটমহল বিনিময়কে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশে একাধিক অশুভ চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠার বিষয়টি খুবই আতঙ্কের। জাল দলিল থেকে শুরু করে জাল ভারতীয় নাগরিকপত্র বানানো চক্রটিকে এখনই প্রতিহত করতে হবে, নইলে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে খারাপ করবে। তিনি জানান, এসব অনৈতিক কাজের প্রতিকার চেয়ে এবং অশুভ চক্রটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বরাবরে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিকভাবে যৌথ স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিনিময় না হওয়া পর্যন্ত ছিটমহলের অভ্যন্তরে কেউ নতুন করে স্থাপনা বা ঘরবাড়ি তৈরি করতে পারবেন না। এছাড়া অস্ত্র হাতে বাংলাদেশের পুলিশ ছিটমহলে প্রবেশ করবে না। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ছিটমহলবাসীর খোঁজ খবর রাখবেন। ছিটমহল বিনিময় চুক্তি হস্তান্তর হওয়ার পর ছিটমহল বাসিন্দাদের যার যে জায়গা জমি দখলে রয়েছে তা তাদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়া হবে। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় চারটি ছিটমহল পরিদর্শনে এসে ২৯ নম্বর ছিটমহল বড়খানকি খারিজা গিতালদহে ছিটমহলবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার।
×