ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন ॥ ব্যবস্থা নিতে খালেদাকে অনুরোধ

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৪ মে ২০১৫

দেশে ফিরতে চান সালাহউদ্দিন ॥ ব্যবস্থা নিতে খালেদাকে অনুরোধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনালাপে সালাহউদ্দিন দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এজন্য দলের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেন বিএনপি চেযারপার্সনকে। বিএনপি চেয়ারপার্সন এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে সালাহউদ্দিনকে আশ্বস্ত করেন। এদিকে অবৈধ অভিবাসী আইনেই বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিযিজু। শনিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত দুদিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ’-এর শেষ দিনে এমন মন্তব্য করেন মন্ত্রী। সালাহউদ্দিন ইস্যুতে রাজনীতি করারও কোন সুযোগ নেই বলেও মন্ত্রী স্পষ্টই হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। অন্যদিকে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সালাহউদ্দিনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। সালাহউদ্দিনকে সুস্থ করতে প্রয়োজনে ভারতের আরও কোন উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হবে। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সালাহউদ্দিনকে মেঘালয় আদালতে সোপর্দ করার কথা রয়েছে। মেঘালয়ের আদালতে আইনজীবী এসপি মাহান্তর তরফ থেকে সালাহউদ্দিনের জামিন ও উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী ২৯ মে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেছে। গত ১১ মার্চ সালাহউদ্দিনের স্ত্রী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ দাবি করেন, তাঁর স্বামীকে গত ১০ মার্চ রাতে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম করে ফেলা হয়েছে। পরবর্তীতে বিএনপির তরফ থেকেও এমন দাবি করা হয়। গত ১২ মে ভারতের মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে সালাহউদ্দিনের হদিস মেলে। সালাহউদ্দিনকে গ্রেফতার করতে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্টারপোল শাখা রেড এলার্ট জারি করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে খালেদা জিয়াকে সালাহউদ্দিন নিজেকে দেশে ফিরিয়ে নিতে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। এজন্য দলের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতেও বিশেষ অনুরোধ জানান। খালেদা জিয়া এ ব্যাপারে কূটনৈতিক তৎপরতা ছাড়াও প্রয়োজনী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে সালাহউদ্দিনকে আশ্বস্ত করেন। এদিকে ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের ইস্ট খাসি হিলস থানাটির পুলিশ সুপার এম খারক্রাং জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে তাও তারা জানেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সালাহউদ্দিনকে পুরোপুরি সুস্থ করার চেষ্টা করছেন। এজন্য প্রয়োজনে সালাহউদ্দিনের ভারতের আরও কোন উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হতে পারে। যদিও বিষয়টি চিকিৎসকদের মতামতের ওপর নির্ভর করছে। হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতেই তার চিকিৎসা চলবে। হস্তান্তরের পর সালাহউদ্দিনকে মেঘালয় আদালতে সোপর্দ করার কথা রয়েছে। প্রসঙ্গত, এ থানাটিতেই সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারত প্রবেশের দায়ে থানাটির পুলিশের তরফ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইও বলেছে, সালাহউদ্দিনকে কবে নাগাদ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে তা অনিশ্চিত। সিবিআইয়ের তরফ থেকে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় ভারতে আটক নূর হোসেনের প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন। প্রসঙ্গত, আইনী জটিলতার কারণে কয়েকবার চেষ্টা করেও নূর হোসেনকে আজও বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। সালাহউদ্দিনের ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটতে পারে।
×