ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভিযোগ ঘুষ গ্রহণ

বরিশালে সরকারি প্রকল্পে এনজিও বাছাইয়ে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২১ মে ২০১৫

বরিশালে সরকারি প্রকল্পে এনজিও বাছাইয়ে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের বাঁছাই পর্বেই ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ প্রজেক্টে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে নামসর্বস্ত্র বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাকে (এনজিও) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে অতীতে এ প্রকল্পে কাজ করা বহুল বির্তকিত একটি বেসরকারী এনজিও’র (ব্রিজ সোসাইটি) ন্যায় এবারও সরকারের এ মহতি উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় বরিশালের নিরক্ষর নারী-পুরুষদের মাঝে অক্ষর জ্ঞান ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সে লক্ষে জেলার দশটির মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপজেলাগুলো হলো-আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা ও মুলাদী। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব উপজেলার ১৫ থেকে ৪৫ বছরের নিরক্ষর ৯০ হাজার নারী-পুরুষকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত করা হবে। নারীরা বিকেলে অবসর সময়ে এবং পুরুষরা রাতে এ শিক্ষা গ্রহণ করবেন। আর এ প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলার একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৪ সালে সরকার এ প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছেন। চার বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের কার্যক্রম চলবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। প্রতিবছর প্রত্যেকটি উপজেলায় এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮০লাখ টাকা। প্রাথমিক নির্বাচনের পর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ১৬টি এনজিওর প্রধানগণ এখন বিভিন্ন তদ্বির ও অর্থের বিনিময়ে প্রকল্প বাগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জেলা কমিটির প্রাথমিক বাছাইয়ে ব্যাপক অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিক এনজিও প্রধানগণ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও উল্লেখ করেন। জানা গেছে, জেলার জনগুরুত্বপূর্ণ গৌরনদী উপজেলার জন্য আভাস, রিডো, ব্রেভ ও ইউজি নামের চারটি এনজিওকে জেলা কমিটির বাছাইয়ে প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। একাধিক এনজিও পরিচালকরা জানান, তালিকাভুক্ত হওয়া এনজিওর একটিও গৌরনদী উপজেলার নয়। অথচ স্ব-স্ব উপজেলার এনজিওকে তালিকাভুক্ত করার নিয়ম রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখানকার একাধিক এনজিওর পরিচালকরা আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু জেলা শিক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে তাদের কাছে দাবিকৃত মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিতে না পারায় উপজেলার সবকটি এনজিওকে প্রাথমিক বাছাইয়ের তালিকা থেকে ছিটকে পড়তে হয়েছে। অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো বরিশালের সহকারী পরিচালক সুবিমল চন্দ্র হালদার বলেন, প্রাথমিক বাছাইয়ে যেসব এনজিও তালিকাভুক্ত হতে পারেনি, সেইসব এনজিওর পরিচালকরা আমাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। জেলা উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল আলম বলেন, ঘুষ গ্রহণের ব্যাপারে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×