ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রস্তাবে কোনরূপ করারোপ করা ঘয়নি

মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ-ভারত সংশোধিত নৌ ট্রানজিট অনুমোদিত

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৯ মে ২০১৫

মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশ-ভারত সংশোধিত নৌ ট্রানজিট অনুমোদিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভারত বা বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে তৃতীয় কোন দেশে পণ্য পরিবহনের সুযোগ রেখে দুই দেশের নৌ-ট্রানজিট প্রটোকল সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে এ প্রটোকলের মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। এই লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা ‘প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট এ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি)’-এর খসড়া সংশোধনের এই প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দু’দেশের মধ্যে নৌ-পথ ব্যবহারে ট্যাক্স আরোপের কথা বলা হচ্ছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এই ট্যাক্স আরোপের পক্ষে মত দেয়। যে কারণে গত ৩১ মার্চ এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও এর মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৎকালীন উপদেষ্টা মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনের পর আবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ববোর্ড এই রুটে ট্যাক্স আরোপের কথা বলেন। অবশেষে কোন প্রকার ট্যাক্স আরোপ ছাড়াই সোমবার এই নৌ-ট্রানজিট প্রটোকল সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। আগামী জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দু’দেশের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষর হবে। তার মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। ১৯৭২ সালে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে নৌ-প্রটোকল স্বাক্ষর হয়। এর পর বিভিন্ন সময়ে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নৌ-ট্রানজিট প্রোটকলের এই সংশোধনের পর দু’দেশের মধ্যে কোন দেশের আপত্তি না থাকলে এর মেয়াদ আর বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। প্রতি পাঁচ বছর পর অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হলে এই চুক্তির মেয়াদ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে বলে ধরা হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মোঃ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রটোকলের মেয়াদ ৩ বছর ছিল। সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রটোকলের মেয়াদ বাড়বে, যদি দুই পক্ষের কোন আপত্তি না থাকে। তিনি বলেন, খসড়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের নৌপথ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের সুযোগ রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে এটি আরও সুনির্দিষ্ট করা হবে, নেপাল বা ভুটানকে টার্গেট করা হয়েছে, যাতে এ সুবিধা দুই পক্ষের হয়। শর্ত রাখা হয়েছে, দুই পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে সময় সময় এটা আপডেট করা হবে। প্রটোকলে তৃতীয় পক্ষকে (দেশ) সংযুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, প্রটোকলটি আগে দ্বিপাক্ষিক ছিল। এখন তৃতীয় পক্ষ সংযুক্ত করা হয়েছে। তৃতীয় পক্ষ হিসেবে নেপাল ও ভুটানকে টার্গেট রাখা হয়েছে, যেন দুই পক্ষেরই (বাংলাদেশ-ভারত) সুবিধা হয়। দুই পক্ষ আলাপ-আলোচনা করে সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করবে বলে জানান সরকারের এই সচিব। গত ২০ এপ্রিল ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারতের নৌ-সচিব পর্যায়ে বৈঠকে উভয় দেশ প্রটোকল সংশোধনের ব্যাপারে ঐক্যমত প্রকাশ করে। এরপর ১৩ মে বাংলাদেশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সংশোধনী সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সচিব বলেন, ইতোমধ্যে দুই দেশ প্রটোকল চূড়ান্ত করেছে। এখন অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে। গত ১৪-১৮ মার্চ জাপানে অনুষ্ঠিত ‘থার্ড ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন’-এ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ এবং ১৫-১৭ মার্চ হেগে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল কনফারেন্স অন সাইবারস্পেস (জিসিসিএ)-এ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে আরেকটি প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ সম্পর্কে বৈঠকে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে।
×