ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের বিশাল সমাবেশ

জীবনবাজি রেখে দেশ এগিয়ে নিচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৮ মে ২০১৫

জীবনবাজি রেখে দেশ এগিয়ে নিচ্ছেন  জননেত্রী শেখ হাসিনা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য জীবন বাজি রেখে দেশের উন্নতির জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন। তাঁর হাত ধরেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা হচ্ছে। ৩৪ বছর আগে তাঁর দেশে ফেরার মধ্য দিয়েই বাঙালী আবার অগ্রনায়ক পেয়েছিল। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম দেশকে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে অবিরাম এগিয়ে নিচ্ছে। রবিবার দুপুরে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ আয়োজিত ছাত্র সমাবেশে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। সমাবেশে ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশের বিশ্ববিদ্যালয়, থানা, জেলা, কলেজ এবং ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই শহীদ মিনার বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য এবং শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল, ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি লিয়াকত সিকদার, মাহমুদ হাসান রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, যেদিন শেখহাসিনা এই দেশে ফিরে এসেছিলেন, লাখ লাখ মানুষ বিমানবন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত যার শরীরে প্রবাহিত হচ্ছে, তাঁর হাতেই আমরা আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছিলাম। সেদিন বাঙালী জাতি অনুভব করেছিল, বঙ্গবন্ধুই বোধহয় ফিরে এসেছেন। তাঁর হাত ধরে আওয়ামী লীগ শুধু শক্তিশালী ও সংগঠিতই হয়নি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে তিনি দিন-রাত লড়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। সেদিন তিনি কোন বক্তৃতা করতে পারেননি। শুধু কেঁদেছিলেন। শেষে শুধু বলেছিলেন, ‘সবকিছু হারিয়ে আজ আমি আপনাদের মাঝে এসেছি, আপনাদের মাঝেই আমি তাদেরকে ফিরে পেতে চাই।’ কোন শক্তিই শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা ২০২১ সালে তৈরি পোশাক রফতানির মাধ্যমে ৫০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করব। তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। জঙ্গী, মৌলবাদী এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকে উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। আমাদেরকে ফাঁসির আসামির মতো হাতে হ্যান্ডকাফ ও জেলে রেখে নিজামীর গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন। এদেরকে বাঙালী জাতি কোনদিন ক্ষমা করবে না। খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিলেন। নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। ৯৩ দিন অবরোধের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। কথা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং ঘরে ফিরে যাবেন না। কিন্তু তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরেছে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর শেখ হাসিনা দেশে ফিরে জাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অথর্নীতির প্রবৃদ্ধিতে কাজ করছে। কিন্তু পরাজিত শক্তিরা এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে বারবার চেষ্টা করেছে কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে এগিয়ে চলছে এবং বঙ্গবন্ধুর সকল স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। অন্য সময়ে চেয়ে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। যুগোপযোগী এক শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু এই শিক্ষানীতি নিয়ে অনেকে বিরোধিতা করেছে। সার্থক হয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মেহেদী হাসান মোল্যা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। আর এদেশের যত অর্জন, সমৃদ্ধি ও এগিয়ে যাওয়া তার সবই হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ॥ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরে সারাদেশে থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে থাকে। দুপুরের দিকে শহীদ মিনারের সামনের সারিতে বসাকে কেন্দ্র করে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগ ও সিদ্ধেশ্বরী শাখা ছাত্রলীগের হাতাহাতি ও বাকবিত-ার সৃষ্টি হয়। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা তাৎক্ষণিক এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিকেলের দিকে কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলা শাখা মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে ওঠার পথে ছাত্রলীগ নেতাদের বাধার সম্মুখীন হয়। তবে বাধা পেরিয়ে যাওয়ার সময় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা শুরু হলে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম মাইকে উচ্চ শব্দে সকলকে স্লোগান দিতে বলে। এই স্লোগানের মাঝেই কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
×