ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সালাহউদ্দিনের অন্তর্ধান ও বিএনপির মিথ্যাচার

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১৫ মে ২০১৫

সালাহউদ্দিনের অন্তর্ধান ও বিএনপির মিথ্যাচার

১২ মে (২০১৫) বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটির মিথ্যাচারিতার চূড়ান্ত পরিচয় প্রকাশিত হয়েছে সালাহউদ্দিন আহমেদের বেঁচে থাকার সন্ধান পাওয়ার মধ্য দিয়ে। সংবাদ সূত্র থেকে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের একটি মানসিক হাসপাতালে আছেন দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এই তথ্য জানিয়েছেন। সকালে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ এ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ফোন দিয়ে জানায়, সালাহউদ্দিন তাদের হাসপাতালে আছেন। পরে সালাহউদ্দিন টেলিফোনে স্ত্রীকে বলেন, আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ১১ মে মেঘালয়ের গলফ গ্রিন এলাকায় ঘোরাফেরার সময় সালাহউদ্দিনকে পুলিশ আটক করে। প্রথমে তার কথা শুনে পুলিশের মনে হয়েছে তিনি অপ্রকৃতিস্থ। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ বলে চিকিৎ?সকরা জানান। সালাহউদ্দিন চিকিৎ?সকদের জানিয়েছেন, তার হার্টের সমস্যা আছে। তাকে হার্টের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, সালাহউদ্দিনের সঙ্গে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদের কথপোকথনের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার যে, বিএনপির এই নেতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপহরণ করেনি। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই তার সন্ধান করছিল পুলিশ। বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে নাশকতার কয়েকটি মামলা আছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে আদালত। অন্যদিকে হরতাল-অবরোধ ডেকে বিএনপি নেতাদের পালিয়ে থেকে বিবৃতি পাঠানোর দিকে ইঙ্গিত করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১২ মে বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের রাজনীতি প্রকাশ্য। অন্তর্ধানে থেকে রাজনীতি হয় না। অন্তরালের রাজনীতি করলে অন্তর্ধানে যেতে হয়। আর বিপদ তখনই আসে।’ এই ঘটনা দ্বারা প্রমাণিত হলো গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩-বি নম্বর সড়কের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাটে ঢুকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে যারা ধরে নিয়ে যায়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নয়। অথচ ঘটনার শুরু থেকে পরিবার সালাহউদ্দিনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই দায়ী করে আসছে। এ সূত্রে এতদিন সবাই বলেছিল সরকার গুম করেছে। এখন শোনা যাচ্ছে নতুন কথা। এটাকে অনেকেই বিএনপির রাজনৈতিক কৌতুক হিসেবে অভিহিত করেছে। দাবি উঠেছে, এ রকম নাটক করার জন্য এখন দেশে এনে তার বিচার করতে হবে। বিএনপির সব অপকৌশল যে ব্যর্থ হয়েছে, এটা পরিষ্কার। আসলে এটা বিএনপি ও খালেদা জিয়ার আন্দোলনের নতুন কৌশল ছিল। সালাহউদ্দিনকে গুম হয়ে যেতে উৎসাহ দেয়া হয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা গেছে, এ কারণে ১২ মে সালাহউদ্দিনের স্ত্রীর সঙ্গে শিমুল বিশ্বাসের ঝগড়া হয়েছে। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলায় নাকি বিএনপির ক্ষতি হয়েছে। এভাবে কেউ অন্তর্ধানে থেকে সরকারকে দোষারোপ করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইলে সরকারের কি করার আছে? বরং এবার সালাহউদ্দিন এবং তার পরিবারকে হরতাল, পেট্রোলবোমা আর মানুষ হত্যাসহ যাবতীয় সন্ত্রাসী কর্মকা-ের জবাবদিহিতায় আনা প্রয়োজন। আশ্চর্য হচ্ছে ১০ মে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন উনি নাকি র‌্যাবের কাছে আছেন। সেটাও দায়িত্বপূর্ণ বক্তব্য ছিল না। আর উনি নিজেই লুকিয়ে থেকে দেশের সবাইকে উদ্বিগ্নতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন সেটাও একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিএনপির অন্য নেতা ইলিয়াস আলী, কাউন্সিলর আলম এরাও সম্ভবত একই ধরনের কাজ করেছেন। এখন কেবল সালাহউদ্দিনই মানসিক হাসপাতালে নন, গোটা বিএনপিই মানসিক হাসপাতালে। অর্থাৎ আস্তে আস্তে বিএনপির সব নেতাকেই এরকম রাজনীতির মাঠ ছেড়ে মানসিক হাসপাতালে আশ্রয় নিতে হবে। কতটা মানসিক বিকৃতি ঘটলে তাদের নেত্রী নিজেই নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন! আর তাদের ডাকা অবরোধ-হরতালের মধ্যে রাস্তাঘাটে মানুষ আর যানবাহনের পুরোদস্তুর জ্যাম থাকে! সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পোলিং এজেন্টের অভাবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মাঝপথে নির্বাচন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। এখন শোনা যাচ্ছে সাবেক ভিসি এমাজউদ্দীন নাকি আবার নতুন নির্বাচনের ফর্মুলা বানাচ্ছেন। দুই. সালাহউদ্দিন কিংবা ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধান প্রসঙ্গেই কেবল নয়, এর আগে অনেক ঘটনায় বিএনপির ভূরি ভূরি মিথ্যাচারের দৃষ্টান্ত রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর ভারতের বিজেপি পার্টির সভাপতি অমিত শাহ খালেদা জিয়াকে কোন ফোন করেননি এবং কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে লন্ডনস্থ বিএনপির উপদেষ্টারা। এই দুটি ঘটনার মিথ্যাচারের সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছিল সভা-সমাবেশ করতে না দেয়া এবং খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনে স্থান না দেয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগে অপপ্রচার এবং ২০ দলীয় জোট কর্তৃক লাগাতার নাশকতা চলেছে সারাদেশে। গত ৫ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখ থেকে তিন মাস ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে। সেসময় ২০ দলীয় জোটের মূল অভিযোগ ছিল সরকার ২০ দলীয় জোটকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনের সুযোগ দিচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছেÑ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পুরো এক বছর ২০ দলীয় জোট সভা-সমাবেশসহ সকল রাজনৈতিক কর্মকা- অবাধে পরিচালনা করেছে। কোন কর্মসূচীতেই সরকার বাধার সৃষ্টি করেনি। ২০ দলীয় জোটের বড় দল হিসেবে বছরজুড়ে শুধুমাত্র বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন এককভাবে শতাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচী (গড়ে প্রতিমাসে ৯টি) পালন করেছে। জামায়াতসহ অন্যান্য শরিক দলও প্রচুর রাজনৈতিক কর্মকা- চালায়। রাজপথ ও মাঠে-ঘাটে এসব কর্মসূচীর পাশাপাশি ছিল প্রায় প্রতিদিন এবং প্রতিনিয়ত সংবাদ সম্মেলন, যা গণমাধ্যমের সহায়তায় সরাসরি সম্প্রচারসহ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা হয়েছে। কোন ক্ষেত্রেই সরকার কর্তৃক কোন বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। শুধুমাত্র জনগণের জানমাল তথা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিবেচনায় সম্প্রতি (২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ এবং ৫ জানুয়ারি ২০১৫) ২টি ক্ষেত্রে সরকার আইনগতভাবে (১৪৪ ধারার মাধ্যমে) সকল দলের সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান কওে, যা আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সকলের জন্য প্রযোজ্য হয়। তাই রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনে ংঢ়ধপব দেয়া হচ্ছে না বলে মিথ্যা অজুহাত তুলে বিএনপি-জামায়াতের এহেন নাশকতা বা জঙ্গী স্টাইল কর্মকা- কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতে না দেয়ার (ংঢ়ধপব) অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর জনগণের বিরুদ্ধে নিজ ও দলীয় স্বার্থে পরিচালিত বেগম জিয়ার সেইসব নাশকতা ও জঙ্গী স্টাইলের অবরোধ কর্মসূচীতে সাধারণ জনগণের সমর্থন প্রতিফলিত হয়নি। তাই জনজীবনকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য তারা বেপরোয়া হয়ে জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ পুড়িয়ে মারা, রেললাইন উপড়ে ফেলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা ইত্যাদি নিমর্মতা চালিয়েছে। তিন. ২০১৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘জাতির দুর্ভাগ্য হচ্ছে সরকারের কোন উন্নয়নই আমাদের বিরোধীদলীয় নেত্রী চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। আবার জনসভায় গিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। উনি যদি কোন উন্নয়নই দেখতে না পান তাহলে উনাকে বলব চোখের ডাক্তারের কাছে যান।’ প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেছেন, ‘বিএনপি ১৯৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়াতে পারেনি। ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে যে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ালাম, বিএনপি ২০০১ সালে এসে তা কমাল। এবার এসে আবার আমরা বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি, উনি (বেগম জিয়া) কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। প্রতিনিয়তই উনি জনসভায় বক্তৃতা দেন, সব সময়ই জনগণের কাছে অসত্য তথ্য তুলে ধরেন। কেউ যদি এ ধরনের অসত্য তথ্য তুলে ধওে, তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু আমাদের উন্নয়নের বিষয়টি দেশের মানুষ জানে। অর্থাৎ খালেদা জিয়া সত্য নয়, মিথ্যার বেসাতি করছেন। ধর্মীয় শিক্ষায় গিবতকে গর্হিত কাজ বলে মনে করা হয়। যদিও তিনি ও তার সহযোগী জোট জামায়াতে ইসলাম মুখে কোরআনের কথা বলেন এবং কোরআনের শাসন কায়েমের জন্য লড়াইকে স্বীকৃতি দেন, কিন্তু রাজনৈতিক চাতুরিপনায় তিনি নিজেকে সিদ্ধ করে তুলতে চান মিথ্যা কথা বলে। বিএনপি-জামায়াত মিথ্যাচার করে স্ববিরোধী চরিত্রের প্রকাশ ঘটায়। তারা গরিব জনগণের সন্তানদের গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহারে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য মায়াকান্না করে। বাস্তবে তাদের সন্তানরা কেউ মাদ্রাসায় পড়েনি কিংবা পড়ে না। হেফাজত কিংবা জামায়াত-শিবির কোরআনের কথা বলে, তারা নারী শাসনের বিরোধিতা কওে, কিন্তু খালেদা জিয়ার পায়ের নিচে বসে থাকে। এরকম স্ববিরোধী মানুষের কাছে মিথ্যা ছাড়া আর কিইবা আশা করা যায়? মূলত খালেদা জিয়া মিথ্যার বেসাতি চালিয়েছেন অনেকদিন ধরেই। সাভারের রানা প্লাজার ট্র্যাজেডির সমালোচনা করেছিলেন অসত্য কথা বলে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, সময়মতো যদি উদ্ধার কাজ চালানো যেত অনেক মানুষকে বাঁচানো যেত। সরকার নিজেরাও কাজ করেনি, অন্যদেরও কাজ করতে দেয়নি। এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ। সরকার সঠিক তথ্য পর্যন্ত দেয়নি। সে সময় সাভারে ভবন ধস নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে তাঁকে ‘রাজাকার’ বলেও অভিহিত করেছিলেন খালেদা জিয়া। বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন।’ আসলে দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সেই আন্তরিক প্রচেষ্টা দেখে ঈর্ষান্বিত ছিলেন তিনি ও তাঁর দল। রানা প্লাজা ধসে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের প্রাণহানির কারণে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প ধ্বংস হতে বসেছে বলে খালেদা জিয়ার মন্তব্যও মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কারণ পোশাক শিল্প তাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। বিএনপির নেতা এর আগে বলেছিলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে আমরা মিছিল করতে পারি না, মিটিং করতে পারি না। এর নাম কি গণতন্ত্র?’ এটা মিথ্যা অভিযোগ ছিল। বিএনপি-জামায়াত রোডমার্চ করেছে, অকারণে মিছিল-মিটিং তো নিত্যদিনের কাজ ছিল তাদের। বর্তমানে ২০ দলীয় জোটকে ঝঢ়ধপব না দেয়ার অভিযোগও মিথ্যা। গত এক বছরে (২০১৪) বেগম খালেদা জিয়া ঢাকাসহ সারাদেশে ১২টি মহাসমাবেশ এবং পেশাজীবী ও সহযোগী সংগঠনের ৪টি বৃহৎ সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারের কঠোর সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন, যা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া সরাসরি সম্প্রচার করেছে এবং দেশবাসী তা অবলোকন করেছে। গত এক বছরে বিএনপি ৪১টি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করেছে। এ সকল কর্মসূচীতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করা হলেও কোথাও কোন কর্মসূচীতে বাধা দেয়া হয়নি। বর্ণিত ৪১টি কর্মসূচীর বাইরে বিএনপিদলীয় নেতারা নামসর্বস্ব বিভিন্ন পার্টির ব্যানারে অনুষ্ঠিত সরকারবিরোধী কর্মসূচীতে উপস্থিত হয়ে প্রতিদিনই বক্তব্য রেখেছেন। এ সকল কর্মসূচীতেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনরকম বাধার সৃষ্টি করা হয়নি। গত এক বছরে বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলো প্রায় ৪০টি বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশ করেছে। এ সকল সভা-সমাবেশের বেশ কয়েকটিতে বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত থেকেছেন এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এ সকল কর্মসূচীর অনেকগুলোই সরাসরি সম্প্রচার করেছে, যা সারাদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। সহযোগী সংগঠনের এ সকল কর্মসূচীর কোনটিতেই সরকার বাধার সৃষ্টি করেনি। চার. ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত জনগণের কোন দাবি নিয়ে সংসদের ভেতর-বাইরে কোথাও কোন কথা বলেননি বিএনপির নেতারা ও খালেদা জিয়া। গত আমলে সংসদে অনুপস্থিত থেকে বিরোধী দলের সাংসদরা সরকারের বেতন-ভাতা ভোগ করেছেন, বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। সংসদে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে নাÑ অভিযোগ করলেও জনগণের কোন ন্যায্য দাবি নিয়ে সংসদের বাইরে কথা বলতে দেখা যায়নি তাদের। সেই সময় অনলাইনের বিভিন্ন ব্লগে বিচিত্র মন্তব্যের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় মন্তব্য হচ্ছেÑ ‘বিএনপির ফালতু কথায় জনগণ বিরক্ত।’ এজন্য দেশের মধ্যে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে অর্থ ব্যয়ের মহোৎসব ও নাশকতার ষড়যন্ত্র এবং তাদের তৈরি ভয়াবহ দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে চায় সাধারণ মানুষ। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণের মাধ্যমে গত ছয় বছরে দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে এবং ৮০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২১ সালে দেশবাসী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন করবে। এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য বিএনপির মতো দলগুলোর রাজনৈতিক মিথ্যাচারিতা দূর করতে হবে দেশ থেকে। আর এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার প্রক্রিয়াকে পৃথিবীর সকলে গ্রহণ করেছে বলেই বিএনপিকে সুস্থ ধারার রাজনীতি করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। সালাহউদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়ার ঘটনা ব্যর্থ বিএনপির রাজনৈতিক হঠকারিতার অন্যতম দৃষ্টান্ত, আর মিথ্যাবাদী বিএনপির করুণ পরিণতির ইঙ্গিত। মনে রাখতে হবে, বিএনপির মিথ্যাচার ও জঙ্গীপনার পরও এদেশে নাগরিকদের বেঁচে থাকার অধিকার, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
×