ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শব-ই-বরাতের আগেই ঢাকার সব রাস্তায় বাতি জ্বলবে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ মে ২০১৫

শব-ই-বরাতের আগেই ঢাকার সব রাস্তায় বাতি জ্বলবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী শব-ই-বরাতের আগে সকল রাস্তার বাতি জ্বালানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। একইসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে আবর্জনামুক্ত করতে ১ লাখ ৪৩ হাজার হোল্ডিংয়ে কাউন্সিলরদের সহায়তায় বিনামূল্যে প্রতিদিন ব্যাগ সরবরাহের ঘোষণাও দেন তিনি। সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে তিনি এ ২ ঘোষণা দেন। শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী আয়োজিত নব নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাঈদ খোকন বলেন, বর্তমানে প্রায় ২০ ভাগ রাস্তার বাতি জ্বলে। কাউন্সিলরদের সহযোগিতায় বাকি ৮০ ভাগ বাতি এই কয়েক দিনে জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হবে। আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে নাগরিকদের সেবার কেন্দ্রস্থল করতে চাই। ডিএসসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। দুর্নীতি বন্ধে তিনি তার পরিচয়ে দুর্নীতি করতে যে কোন ব্যক্তি, কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে ফাইল ছাড়াতে তদ্বিরে গেলে তা পালন না করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। কেউ আমার আত্মীয়-স্বজন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ফাইল নিয়ে তদ্বিরে আসতে পারেন। আমি বলে দিচ্ছি, সোজা সেসব ফাইল ফিরিয়ে দেবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন কোন নির্বাচিত মেয়র না থাকায় বন্ধ হওয়া সকল সেবা নতুন করে চালু করা হবে। সংস্থাটির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, কেউ কোন ভুল করলে তাকে মাফ করা হবে কিন্তু উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে আমাকে ভুল বোঝাতে চাইলে তা কোনভাবেই মাফ করা হবে না। ঢাকা শহর বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহর। এ শহরেই বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। তাই বাঙালী জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে দেশকে স্বাধীন করেন। এ শহরেই পাকবাহিনীকে বাধ্য হয়ে মাথা নিচু করে চলে যেতে হয়। তাই আমরা স্বল্প সময়ের মধ্যেই ঢাকাকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে চাই। এই শহরের বিভিন্ন আচার, রীতিনীতি রয়েছে যা বজায় রেখেই উন্নয়ন করতে হবে। নানা সঙ্কট সত্ত্বেও সমস্যা সমাধানে সকলকে সঙ্গে নিয়েই এগুতে হবে। খোকন বলেন, আজ আমি কিছু খোলামেলা কথা বলব। তা হচ্ছে- কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যারা দুর্নীতি করে তাদের সংখ্যা কম। এই অল্পসংখ্যক মানুষের জন্য পুরো বদনাম আমাদের ওপর এসে পড়বে। তাদের কারণে আমাদের বদনাম হতে পারে। দীর্ঘদিনের প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিশ্রম করলে বিশ্রামের ব্যবস্থা রাখব। কিন্তু কাজে ফাঁকিবাজি মেনে নেব না। তিনি বলেন, আমরা অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকাকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করব। আমি শূন্য হাতে দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু আমি ভীত নই। বর্তমানে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে আর প্রায় ৮০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের সাহস আছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেলে তিনি আমাকে খালি হাতে ফিরাবেন না। কিন্তু আমরা স্বাবলম্বী হতে চাই। এর আগে বিকেল সাড়ে চারটায় মেয়র সংবর্ধনাস্থলে প্রবেশ করলে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অডিটরিয়ামের মঞ্চে কাউন্সিলরদের জন্য কোন স্থান রাখা হয়নি। তাদের জন্য মঞ্চের নিচে দর্শক গ্যালারিতে স্থান রাখা হয়। বিষয়টি মেনে নেননি সাঈদ খোকন। পরে তিনি সবাইকে মঞ্চে ডেকে নেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাপা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৫৭ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১৯ জন নারী কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। পুরুষ কাউন্সিলরদের পক্ষে ৩৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু আহম্মদ মান্নাফি, ২ নং ওয়ার্ড কমিশনার আনিসুর রহমান ও নারী ওয়ার্ড কমিশনার ফারহানা ইসলাম ডলি বক্তব্য রাখেন। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনসারী আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসি সচিব খান মোঃ রেজিউল করিম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা, সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা মিল্লাতুর রহিম মিল্লাত প্রমুখ।
×