ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দ্রুত বিচার নিশ্চিত জরুরী

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৭ মে ২০১৫

দ্রুত বিচার নিশ্চিত জরুরী

বিশেষ ট্রাইব্যুনাল না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে বিচারিক ক্ষমতা ও বিচার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত আইন মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিয়েছে তা সময়োচিত এবং যথাযথ। এ প্রক্রিয়া শুরু হলে দেশে সৃষ্টি হবে নতুন এক নজির, তা হলো প্রথমবারের মতো শুরু হবে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিচার। এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। এ বিষয়ে পেট্রোলবোমা দিয়ে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের শাস্তি পেতেই হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য রেখেছেন তা সবিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। তাঁর এ বক্তব্য নিছক বক্তৃতা নয়, দেশের মানুষের অন্তরের প্রত্যাশা; শুধু তাই নয়, হরতাল-অবরোধের নামে মানুষ হত্যার বিচারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার ইঙ্গিত দেয় বৈকি। আশার কথা এই যে, এরই মধ্যে ২শ’ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। যার মধ্যে চার মামলায় হুকুমের আসামি বেগম খালেদা জিয়া; যিনি ওই অযৌক্তিক হরতাল-অবরোধ আহ্বান করেছিলেন। রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে স্মরণকালের ভয়াবহ ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে গত জানুয়ারির প্রথমার্ধ থেকে। বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়ে যে দেড় শতাধিক নিরীহ সাধারণ মানুষ দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্বজনদের চোখের পানি এখনও শুকায়নি। দগ্ধ হয়ে এখনও পোড়া ঘায়ের যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু এ নারকীয় যজ্ঞের বিচার এখনও নিশ্চিত হয়নি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যিনি বা যারাই হরতাল-অবরোধ আহ্বান করুন না কেন ওই কর্মসূচীতে সংঘটিত যাবতীয় ঘটনার দায়-দায়িত্ব তার বা তাদের ঘাড়েই বর্তায়। দীর্ঘ সময়ব্যাপী হরতাল-অবরোধে নিহত-আহত ও সম্পদ বিনষ্ট হওয়ার দায় ২০ দলীয় জোট ও এর প্রধান নেতা এড়াবেন কিভাবে? এর মধ্যে হুকুমের আসামি হিসেবে যার নাম এসেছে তাতে স্পষ্ট হচ্ছে কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো গণদাবি অনুধাবন করতে পেরেছে এবং তা পূরণে সঠিক পথেই এগোচ্ছে। এখানে আরেকটি বিষয় স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলে হেফাজতে ইসলাম যে বর্বরোচিত কা- ঘটিয়েছিল সে ঘটনা আর হরতাল-অবরোধে নাশকতার যোগসূত্র যে একই, তা ক্রমান্বয়ে স্পষ্ট হচ্ছে। শুধু সময় এসেছে বলা যাবে না, বলা যায় সময় বয়ে যায় এদের বিচার নিশ্চিত করার। সন্ত্রাসবিরোধী বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২শ’ যে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে দেশবাসী সে উদ্যোগকে সমর্থন জানাবে। আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে কথা হলো, কোন অভিযোগপত্রে দুর্বলতা থাকলে ও আইনের ফাঁক-ফোকরের কারণে অনেক সময় অপরাধী ছাড় বা পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এদিকে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ সতর্ক দৃষ্টি রাখা অত্যাবশ্যক।
×