ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

থাইল্যান্ডে গণকবর

সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারে কান্নার রোল

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ মে ২০১৫

সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারে কান্নার  রোল

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর থেকে লাশ উদ্ধারের পর মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয়া এবং এ পর্যন্ত সন্ধান না পাওয়া কক্সবাজারে বিভিন্ন পরিবারে কান্নার রোল বয়ে চলছে। স্থল ও নৌপথে দায়িত্বরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন ব্যাপক তৎপরতা চালালেও কক্সবাজার দিয়ে মানবপাচার থামাতে পারছে না। মানবপাচারকারীরা প্রশাসনের হাতে আটক হওয়ার পর আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে পড়ায় পাচাররোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানায় একটি সূত্র। দালালরা প্রথমে কোন টাকা লাগবে না বলে নৌকায় তুলে নিরীহ মানুষকে। গভীর সাগরে অপেক্ষমাণ জাহাজে তুলে দেয়ার পর থেকে শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। সেখানে না খেয়ে, নৌকাডুবিতে বা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে অনেক তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। কক্সবাজারসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার লোকজনকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে ঘটছে ভয়ঙ্কর এ সব ঘটনা। মাসের পর মাস উপার্জনক্ষম ব্যক্তির খবর না পেয়ে পরিবারগুলোর সদস্যরা শোকে কাতর হয়ে পড়েছে। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবর শুনে বুকফাঁটা আর্তনাদে পরিবারগুলোতে বয়ে চলছে শোকের মাতম। মালয়েশিয়াগামী ও সন্ধান না পাওয়া এ সব ব্যক্তির পরিবারে এভাবে যোগ হচ্ছে নিয়মিত শোকের মিছিল। থাইল্যান্ডে গণকবরের সন্ধান লাভের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে কক্সবাজারের বহু দালাল। তারা বন্ধ রেখেছে তাদের মুঠোফোনও। এদিকে মানবপাচার ঠেকাতে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের তৎপরতার কমতি নেই মোটেও। তারপরও নিত্যনতুন কৌশলে মানবপাচারকারীরা রাতের আঁধারে জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে তুলে দিচ্ছে ট্রলারে। মানবপাচারের গডফাদার শামসুল আলমের ইশারায় একাধিক দালাল উখিয়ার সোনারপাড়া-রেজুখালের মুখ, নাজিরারটেক-সমিতিপাড়া, মহেশখালী-সোনাদিয়া ও পেকুয়ার বিভিন্ন উপকূলের পয়েন্ট দিয়ে বোটে তুলে দিচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। হিংস্র দালালচক্রের নির্যাতনে অনেকের মরদেহ থাইল্যান্ডের গর্তে পুঁতে ফেলেছে। সেগুলো উদ্ধার করে চলছে দেশটির প্রশাসন। দালালদের হাতে এখনও মুক্তিপণের টাকা দিতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেকে। এসব ব্যক্তির পরিবার-পরিজন নানা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। সূত্র জানায়, এ পাচার কাজে জড়িত প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছে, সোনারপাড়ার ফয়েজ সিকদার ও শামসুল আলম। তাদের অধীনে দালালরা হচ্ছেÑ উখিয়ার মোহাম্মদ শফির বিলের বাসিন্দা ছৈয়দ আলম ওরফে হাফিচ্যা, নুর হোসেন ওরফে ভুলাইয়া, জাফর আলম, শফিকুর রহমান ওরফে শফিন্যা ও আব্দুল হক।
×