ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ধ্বংস হলো নেপালের সমৃদ্ধ কৃষ্টিগত ঐতিহ্য

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৩ মে ২০১৫

ধ্বংস হলো নেপালের সমৃদ্ধ কৃষ্টিগত ঐতিহ্য

সুজন শ্রেষ্ঠ বললেন, নেপালের প্রাচীন মন্দিরগুলোর ধ্বংসাবশেষের স্তূপ দেখে তার মন ভেঙ্গে পড়েছে। এসব মন্দিরে তিনি সারাজীবন পূজা করে এসেছেন। ২৮ বছর বয়সী ঐ দোকানদার ভূমিকম্প বিধ্বস্ত কাঠমা-ু উপত্যকার এক বিস্ময়কর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট পাতান দরবার স্কয়ারের পাশেই এক বাড়িতে বড় হন। এ উপত্যাকায় অলঙ্কার খচিত বহু হিন্দুর মন্দির মূর্তি ও এক রাজপ্রাসাদ অবস্থিত। তিনি বলেন, একটি বড় কিছু আসছে বলে আমাদের সব সময়েই বলা হতো কিন্তু এটি যে এমন সর্বনাশ ডেকে আনবে তা আমি কখনও কল্পনা করিনি। তখন তিনি ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কয়ারের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। যেখানেই তিনি পর্যটকদের কাছে পশমের শাল বিক্রি করতেন। তিনি বলেন, ঐসব মন্দির যে গুঁড়িয়ে গেছে, তা আমি বিশ্বাস করতে পারি না। সেগুলো ছাড়া জায়গাটি খালি মনে হয়। যখন আমি আশপাশে তাকাই তখন আমার মন ভেঙ্গে যায়। ২৫ এপ্রিল ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নেপালের সমৃদ্ধ কৃষ্টিগত ঐতিহ্য ধ্বংস করে দেয় এবং কাঠমা-ু উপত্যকার তিনটি সাবেক রাজকীয় স্কয়ার গুঁড়িয়ে দেয়। ঐসব স্কয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবিকা উপার্জনের কেন্দ্রস্থল এবং দেশটির বিশাল আকর্ষণ। নেপাল পর্যটকদের আনা বৈদেশিক মুদ্রার ওপর খুবই নির্ভরশীল। প্রতœতত্ত্ব দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল ভেশ নারায়ণ দাহাল বলেন, ভূমিকম্পে আমাদের হেরিটেজ সাইটগুলোর শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতির মূল্যায়ন করা কঠিন। তিনি জানান, ভূমিকম্পের ঠিক পরের দিনই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে এবং যা কিছুই পাওয়া যায় তা তালিকাভুক্ত করতে একটি টিম নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো কোন প্রাচীন মূলবান বস্তু যাতে ঘটনাস্থল থেকে হারিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করা। আমাদের টিমগুলো বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও এদের রেকর্ড রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের কৃষ্টি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বলেছে, কাঠমাণ্ডু, পাতান ও ভক্তপুরের তিনটি স্কয়ারের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। এ তিনটিই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। ইউনেস্কোর প্রধান ক্রিশ্চিয়ান ম্যানহার্ট নেপালে বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এসব স্থান রক্ষা করতে এবং ক্ষয়ক্ষতি যাতে আর না বেড়ে যায়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছি। -এএফপি
×