ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কামরাঙ্গীরচরে দুই কন্যাসহ পিতার আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৬:২০, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

কামরাঙ্গীরচরে দুই কন্যাসহ পিতার আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে শটসার্কিটে দুই শিশু কন্যাসহ পিতার আত্মহত্যা, ককটেল বিস্ফোরণে দুইজন আহত ও ১১ ককটেল উদ্ধার এবং একটি কারখানায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। দুই কন্যাসহ পিতার আত্মহত্যা ॥ কামরাঙ্গীরচরের মধ্যরসুলপুর রনি মার্কেট সংলগ্ন আলোড়ন স্কুলের ১ নম্বর গলির ৪ নম্বর টিনশেড বাড়িতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। বুধবার দুপুর বারোটার দিকে পুলিশ নিহত বাবুল (৪০) ও তার দুই মেয়ে জান্নাতী (১২) আর মীমের (৯) লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ তিনটি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত বাবুলের পিতার নাম রফিক। বাবুলের পিতা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন জেনেভা ক্যাম্পের এ ব্লকের ৩৩ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। প্রায় ১৭ বছর আগে বাবুল সখিনা নামে কামরাঙ্গীরচরের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে কামরাঙ্গীরচরেই বসবাস শুরু করেন। তিনি বিদ্যুতের টুকিটাকি কাজের পাশাপাশি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। টিনশেডের দু’তলা বাড়ির একটি কক্ষে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ভাড়ায় বসবাস করছিলেন। অভাবের সংসারে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হতো। ১৮ দিন আগে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে সখিনা বাবার বাড়ি চলে যান। এতে দুই সন্তানের জন্য রান্নাবান্না করা, আয়ের জন্য বৈদ্যুতিক কাজ করা আর চায়ের দোকান চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন বাবুল। স্ত্রীকে বাড়ি ফেরার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিমানী স্ত্রী স্বামীর কথায় কান দেয়নি। এতে স্ত্রীর ওপর অভিমান হয় বাবুল মিয়ার। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে দুই শিশু কন্যার সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। সকালে কারও কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে বাড়ির লোকজন ডাকাডাকি শুরু করে। তাতেও সাড়া না পেয়ে দরজায় সজোরে ধাক্কা দিলে দরজার ছিটকিনি খুলে যায়। বিছানায় পিতা ও দুই মেয়ের সারা শরীরের বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো অবস্থায় মৃত দেখা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। হাজারীবাগ থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, বাবুলের হাতে বিদ্যুতের লাইনের সুইচ ছিল। সুইচটি অন করা। ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রীর ওপর অভিযান করে দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করেন বাবুল। দুই শিশু ঘুমিয়ে গেলে তাদের সারা শরীরে বৈদ্যুতিক তার পেঁচায়। এরপর নিজের শরীরেও বৈদ্যুতিক তার পেঁচায়। এরপর বৈদ্যুতিক সংযোগের সুইচটি নিজ হাতে নিয়ে অন করলে শটসার্কিট হয়ে সবার মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে বাবুলের পিতা একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর বাবুল নিজেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ককটেল বিস্ফোরণে দুইজন আহত, ১১ ককটেল উদ্ধার ॥ বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানের পাশের ৪ নম্বর সড়কের ৭ নম্বর বহুতল বাড়ির চতুর্থ তলায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালায়। এ সময় নুরুল ইসলাম নুরু (৪৮) ও আনোয়ারুল ইসলাম আনোয়ার (২৫) নামে দুইজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাড়ি থেকে ১১টি তাজা ককটেল উদ্ধার হয়। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিজুল হক জনকণ্ঠকে বলেন, আহতরা পেশাদার সন্ত্রাসী। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কোন বিশেষ পরিচয় জানা যায়নি। কারখানায় অগ্নিকা- ॥ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পুরান ঢাকার নবাবপুর রোডের রথখোলা এলাকার টিনশেড একটি দোতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়, আধঘণ্টার মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। রশিদ ও আবুল নামে দুজন কারখানাটির মালিক। কারখানায় বাচ্চাদের গেঞ্জি ও জুতোয় বিভিন্ন ধরনের ছাপা দেয়ার কাজ হতে।া কারখানায় কেউ না থাকায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আগুনে প্রায় দশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
×